জয় নয়, ড্র করলেই আরেকটি ইতিহাস গড়বে আবাহনী
২৭ আগস্ট ২০১৯ ২১:২১
এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমি ফাইনালের দ্বিতীয় লেগ খেলতে উত্তর কোরিয়ায় অবস্থান করছে ঢাকা আবাহনী। বুধবার (২৮ আগস্ট) পিয়ংইয়ংয়ে মাঠে নামবে আবাহনী। ন্যূনতম ড্র করলেই এএফসি কাপের আন্তঃআঞ্চলিক ফাইনালে খেলার টিকিট পাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা। উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়ংয়ে আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টির লক্ষ্যে মাঠে নামবে বাংলাদেশের পেশাদার লিগে সর্বোচ্চ ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী।
ঘরের মাঠে উত্তর কোরিয়ার চ্যাম্পিয়ন দল এপ্রিল ২৫ এসসিকে ৪-৩ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করার ম্যাচে জোড়া গোলের ম্যাজিক দেখানো ম্যাচসেরা সানডে চিজোবাকে দ্বিতীয় লেগে পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হলেও চিজোবা সহ পূর্ণ শক্তির দলই পেতে যাচ্ছে আবাহনী। চীন চিজোবাকে ট্রানজিট ভিসা না দেওয়ায় দলের সঙ্গী হতে পারেননি। উত্তর কোরিয়াও তাকে ভিসা দিতে চায়নি। সব সমস্যার সমাধান হলে দলের সঙ্গে না গিয়ে রুট বদলে ভিন্ন পথে উত্তর কোরিয়া পৌঁছাবেন প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করা নাইজেরিয়ান এই স্ট্রাইকার।
কদিন আগে আবাহনী থেকে ভারতের ক্লাবে চলে গেছেন ডিফেন্ডার মাসিহ সাইঘানি। কার্ডের নিষেধাজ্ঞায় মিশরের ডিফেন্ডার আলা নাস ইসাকেও প্রথম লেগের ম্যাচে নামাতে পারেনি আবাহনী। নিয়মিত তিন খেলোয়াড়কে এই ম্যাচে পায়নি আবাহনী। লিগামেন্টের অস্ত্রোপচার করানোয় দীর্ঘদিন ধরে মাঠের বাইরে দুই ডিফেন্ডার তপু বর্মণ ও আতিকুর রহমান ফাহাদ। এক সপ্তাহ আগে অনুশীলনের সময় পায়ে চোট পান মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম। এদিকে, আবাহনীতে যোগ দিলেও অভিষেক পিছিয়ে যায় মিশরের আলা এলদিন নাসেরের। গত টুর্নামেন্টে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসের হয়ে খেলার সময় তিনি লাল কার্ড পেয়েছিলেন। এমন ভঙ্গুর দল নিয়ে একাদশ সাজিয়েও জয় পেয়েছেন আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমস।
এদিকে, নিষেধাজ্ঞা কেটে যাওয়ায় মিশরীয় ডিফেন্ডার নাসেরকে পাওয়া যাচ্ছে রক্ষণভাগে। চোট কাটিয়ে দলে ফেরার কথা রয়েছে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলামেরও। লেমস জানালেন তার আত্মবিশ্বাসের কথা, ‘কোনো সন্দেহ নেই এই ম্যাচটি আমাদের জন্য কঠিন এক ম্যাচ হতে যাচ্ছে। তারা ভালো দল, নিজেদের মাটিতে আমাদের ছাড় দিতে চাইবে না। ঢাকায় তারা প্রমাণ করেছে কেন ঘরোয়া টুর্নামেন্টে তারা সেরা এবং অপরাজিত দল। আমার আত্মবিশ্বাস ঢাকার পর কোরিয়াতেও আমরা জয় নিয়ে ফিরব।’
দলের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মামুনুল প্রসঙ্গে আবাহনী কোচ জানান, ‘আমি আশা করি মামুনুল পুরোপুরি ফিট হয়ে খেলতে পারবে। নাসের ফেরায় আমরা আরও শক্তিশালী হতে পেরেছি। ডিফেন্স সামলানোর পাশাপাশি সেট পিসে তার জুড়ি নেই। আবাহনীর জার্সিতে অভিষেক ম্যাচে তার সেরাটাই দেখতে মুখিয়ে আছি। আমরা প্রতিপক্ষকে নিজেদের মতো ছেড়ে দেব না, তবে ওরা ঝুঁকি নেবে স্কোর করার জন্য। আমরা সেই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে চাইব। আমাদের প্রধান লক্ষ্য থাকবে অন্তত একটি গোল করা। আর সেটি করতে পারলে সেমি ফাইনালের এই ম্যাচে জয়ের দিকে আমরাই এগিয়ে থাকব।’
প্রথম লেগের ম্যাচে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হাজারো আবাহনী দর্শকের কথা ভুলে যাননি আবাহনী কোচ। আবারো দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়ে কঠিন ম্যাচে নামার আগে বললেন, ‘বাংলাদেশের সমর্থকদের আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাদের সমর্থনই আমাদের অন্য এক লেভেলে নিয়ে যাচ্ছে। আমার আশা সমর্থকদের আমরা গর্বিত করার মতো কিছু দিতে পারবো। আমরা শুধু আবাহনীর প্রতিনিধিত্ব করছি না, আমরা পুরো বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। ইন্টার জোনের ফাইনালে উঠতে চাই। আশা করব আমাদের সমর্থকদের জন্য এটাই এই টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচ হবে না।’
ম্যাচটি যে আবাহনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জই হয়ে আসছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তার জন্য প্রস্তুত আকাশি-নীল বাহিনী। কারণ ইতিহাস যে হাতছানি দিয়ে ডাকছে আবাহনীকে। ন্যূনতম ড্র করলেই ইন্টার জোনাল ফাইনালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশি কোনো ক্লাব হিসেবে নাম লেখাবে তারা।