এখন তারা দলের সেবায় নিয়োজিত
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৬:২৮
চট্টগ্রাম থেকে: আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টকে সামনে রেখে মূল স্কোয়াডে ৩ পেসারকে রেখেছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। আবু যায়েদ রাহি, তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেন। কিন্তু বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের বাস্তবতার কষাঘাতে তিন জনের কেউই ম্যাচটির একাদশে জায়গা করে নিতে পারেননি! সাগরিকার স্পিন বান্ধব উইকেটে আফগান বধে অল স্পিন অ্যাটাক ফর্মুলা অবলম্বন করেছেন স্বাগতিক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, যার অংশ তারা হতে পারেননি।
সঙ্গত কারণেই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চলমান ম্যাচটিতে বোলিং ছেড়ে তারা সতীর্থদের সেবা শুশ্রুশার দায়িত্ব পালন করছেন! সাকিব, সৌম্য, লিটনরা ক্লান্ত হয়ে হাত নাড়তেই তাদের সতেজ করে তুলতে পানি কিংব এনার্জি ড্রিংকের বোতল নিয়ে ছুটছেন মাঠে। মাঠে সতীর্থদের কলা খাওয়াচ্ছেন, আবার কলার ছোলা হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসছেন। নাস্তার মতো হালকা কিছু প্লেটে নিয়ে মাঠেও ঢুকতে দেখা গেছে তাদের। প্রথম দিনের প্রথম ইনিংসের তিন সেশনে তিনবার এভাবেই তাদের মাঠে আসতে এবং বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে এবং ম্যাচের বাকি দিনগুলোতেও এই দৃশ্যের ধারাবাহিকতা দেখা যাবে।
এমতাবস্থায় প্রশ্ন হলো, তাহলে কেন পেসারদের মূল স্কোয়াডে রাখা হলো? আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিতে স্পিন ট্র্যাক হচ্ছে এটা নিশ্চয়ই বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট জানত। অযথা চট্টগ্রাম পর্যন্ত ডেকে আনার মানেটা ঠিক বোধগম্য নয়। এখানে না ডেকে বরং টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপকে সামনে রেখে তাদের বোলিংয়ের উৎকর্ষতা বাড়াতে তাদের অন্য কার্যক্রমের আওতায় রাখা যেত। সেটাও করেনি।
তবে স্বাগতিক হয়ে বাংলাদেশ একজন পেসার রাখার ধৃষ্ঠতা না দেখালেও সফরকারীরা কিন্তু ঠিকই দেখিয়েছে (তরুণ পেসার ইয়ামিন আমজাদি)।
দিনের পর দিন দেশের মাটিতে এভাবে উপেক্ষিত হওয়াটা তাদের জন্য কতটা সুখকর সেই প্রশ্ন কিন্তু দিন শেষে থেকেই যাচ্ছে। এই অবজ্ঞা নিশ্চিতভাবেই এটা তাদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরাবে ও উদ্যম কমিয়ে আনবে শূন্যের কোঠায়।
তবে তাদের স্কোয়াডে রাখাটা যদি ম্যাচ কৌশলের অংশ হয়ে থাকে সেটা ভিন্ন কথা। যুদ্ধ ক্ষেত্রে তো কত রকম কৌশলই অবলম্বন করতে হয়। কিন্তু তাই বলে একজন পেসারও রাখা গেল না! এতটাই দৈন্য এদেশের পেস বোলিং বিভাগ! তাহলে এত এত দাম দিয়ে কোচ রেখে লাভ টা কী হলো? এতদিনে একজন পেসারও তৈরি করতে পারল না বিসিবি!
তাছাড়া দেশের মাটিতে দিনের পর দিন এভাবে স্পিন ট্র্যাক করে আখেরে লাভই বা কী হয়? ম্যাচ জেতা যায়, সিরিজ জেতা যায় এইতো? এতে করে অদূর ভবিষ্যতে এই দেশের অবস্থাটা কী দাঁড়াবে? এখন যেমন দেখা যায় দেশের বাইরে পেসাররা খাবি যাচ্ছে তখনও তেমনই দেখা যাবে। ঘরোয়া ক্রিকেটের উইকেটের দিকে একটু নজড় দিলে এই সংকট থেকে উত্তোরণ অসম্ভব কিছু নয়।
পেসারহীন বাংলাদেশ এই প্রথম নয়। গেল বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশ সফরে এলে মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ঠিক চট্টগ্রাম টেস্টের মতোই ছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। ম্যাচটি হেসে খেলেই জিতেছিল (ইনিংস ও ১৮৪ রান)। সেই উদাহরণকে সামনে রেখেই সম্ভবত এবারও একই পথে হেঁটেছে বাংলাদেশ।
কিন্তু এই দলটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ নয়, আফগানিস্তান। যে দলে লেগ স্পিনার, চায়নাম্যান বোলার ও অফ স্পিনের সংমিশ্রন আছে। যে কোনো কন্ডিশনে বল ঘোরাতে যারা সক্ষম। শেষমেশ নিজেদের পাতা ফাঁদে বাংলাদেশকে পড়তে না হয়!
ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করছে গাজী টিভি। বরাবরের মতো এবারও বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য খেলা দেখার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোল। এই প্রথমবার বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে উপভোগ করা যাচ্ছে টাইগারদের খেলা। প্রায় ২০০ দেশ থেকে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান একমাত্র টেস্ট ও ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজটি সরাসরি উপভোগ করতে ক্লিক করুন এখানে: www.rabbitholebd.com
ছবি: শ্যামল নন্দী