হারার আগেই এখন হারে না জামাল ভূঁইয়ারা!
৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২২:০৩
ঢাকা: ২০১৫ ও ২০১৬। দেশের ফুটবল ভক্তরা ভুলে যেতে চাইবে এ দুটি বছর। কারণ গত রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপে বাছাইয়ে একটি ড্র ছাড়া বাকী সাতটা ম্যাচেই ভরাডুবি হয়েছিল বাংলাদেশের। হোম অ্যান্ড পদ্ধতিতে আট ম্যাচে এমিলি-জাহিদ-মামুনরা হজম করেছিল ৩২ গোল। বিপরীতে বাংলাদেশ বিপক্ষ দলের জালে পাঠাতে পেরেছিল মাত্র দুবার! দেশের প্রস্তুতি নিয়েও সেবার বেশ প্রশ্ন উঠেছিল। খেলোয়াড় ও কোচ আসা যাওয়ার মধ্যেই ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।
ম্যাচে ফিটনেস বা মানসিক দৈন্যটাকে অনেকেই দায়ী করেছিলেন অনেক ফুটবল বিশ্লেষক। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে যেন বেরই হতে পারেনি বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়েও ভুটানর কাছে হেরে কার্যত প্রায় দুই বছর অন্ধকারে ডুবে থাকে দেশের ফুটবল।
বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে সেবার একটা ম্যাচও জিততে পারেনি লাল-সবুজ শিবির। সেই ধ্বংস থেকেই যেন নতুনের উত্থান হলো। অন্ধকারে যেন টিম টিম আলোর দেখা পেল জামাল ভূঁইয়ারা। এশিয়ান গেমসে ইতিহাস গড়াসহ গত এই দেড় বছরে বাংলাদেশ পেয়েছে ছয়টি জয়। হেরেছে মাত্র তিনটিতে। ড্রতো আছেই।
ফলগুলো স্পটত বলে দেয় দেশের ফুটবলে আহামরি পরিবর্তন না এলেও জেগে উঠছে বাংলাদেশের ফুটবল। পেছনের কারণটাও অনুমেয়। দেশের ‘ঘরোয়া ফুটবল চাঙা’ হয়েছে। পেশাদারিত্বের ছোঁয়া খানিকটা হলেও লেগেছে। সেই বাতাসের ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে জাতীয় দলেও। পরিবর্তনটা এসেছে ফিটনেসে।
সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটা এসেছে মূলত মানসিকতায়। জাতীয় দলের ফুটবলারদের মতে, ‘আগে আমরা ম্যাচ খেলার আগেই মানসিক দুর্বলতায় ভুগতাম। এখন এটাকে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়। ফিটনেস থেকে মানসিকতা নিয়ে সবসময় কাজ হয়। কোচরা মানসিক দিকটাতে জোর দেন। এখন চাপ হিসেবে নয় বরং খেলাটা উপভোগ করতে শিখছি আমরা।’
কথাগুলো লাল-সবুজদের প্রতিনিধিত্ব করা বর্তমান ফুটবল সদস্য রবিউল-সুফিল-জিকোদের। এখন হারার আগেই হারে না জাতীয় ফুটবল দল। মানসিকভাবে চাঙা থেকেই বরং ম্যাচে নামে জামাল ভূঁইয়ারা।
এবার অন্তত গত বিশ্বকাপের দৃশ্য দেখতে চায় বাংলাদেশ। খেলোয়াড়সহ কোচরাও লেগে আছেন পারফরম্যান্সের উন্নতিতে। এখন তাজিকিস্তানের দুশানবেতে বিশ্বকাপ বাছাইয় মিশন শুরু করতে যাচ্ছে ফুটবলাররা। ইতোমধ্যে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলে ফেলেছে বাংলাদেশ। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কোচের মন্তব্য- ‘সবই ঠিকঠাক ভাবে চলছে।’
ঠিকভাবেই প্রস্তুতি শুরু করেছে জেমি ডে’রা। ফিটনেসে বিশেষ কাজসহ মানসিক আত্মবিশ্বাসটা চাঙা রাখতে সেটার পরীক্ষাও করেছেন বিকেএসপিতে। দেশে ক্যাম্প করার সময় বিকেএসপিতে খেলোয়াড়দের মানসিক ও ফিটনেসের পরীক্ষাও নিয়েছেন জেমি। সেখানে প্লাস মার্কই পেয়েছেন ফুটবলাররা।
সেই মার্কের ছটা এখন মিশনে দেখার অপেক্ষায় দেশের ফুটবল সমর্থকরা। রবিউলদের হাত ধরে যে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে বাংলাদেশ সেই স্বপ্নের শেষ রঙিন হোক এই কামনা ভক্তদের।
আরও পড়ুন: ‘ভাত ছেড়ে’ ইংলিশ খাবার খাচ্ছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা!
মেসি-রোনালদোদের ফিটনেস নিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে জামাল ভূঁইয়ারা!
জামাল ভূঁইয়ারা বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফুটবল বিশ্বকাপ বাছাই স্পোর্টস স্পেশাল