টাইগ্রেসরা এবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন
৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:৪৪
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমি ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া টাইগ্রেসরা ফাইনালে জিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেমিতে সালমা খাতুনের দলটি আয়ারল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে নিশ্চিত করে ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল আসরের টিকিট। ফাইনালে টাইগ্রেসদের প্রতিপক্ষ ছিল থাইল্যান্ড। স্কটল্যান্ডের ডান্ডিতে ফাইনালে থাই মেয়েদের ৭০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
ফাইনালে ওঠা বাংলাদেশের পাশাপাশি থাইল্যান্ড আগামী নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চূড়ান্তপর্বে খেলবে। স্কটল্যান্ডে বসা বাছাইপর্বের আসরে বাংলাদেশ ছিল ‘এ’ গ্রুপে। যেখানে লাল-সবুজের জার্সিধারীদের প্রতিপক্ষ ছিল পাপুয়া নিউগিনি, যুক্তরাষ্ট্র এবং স্বাগতিক স্কটল্যান্ড। আর গ্রুপ ‘বি’ তে ছিল থাইল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং নামিবিয়া। ‘এ’ গ্রুপে তিন ম্যাচের তিনটিতে জিতে সেমির টিকিট কেটেছে বাংলাদেশ, ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন থাইল্যান্ডও জিতেছিল তিন ম্যাচ। সেমিতে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশ এবং পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে থাইল্যান্ড।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ফাইনাল ম্যাচে বাংলাদেশ টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা তোলে ১৩০ রান। জবাবে, থাইল্যান্ড ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে মাত্র ৬০ রান।
ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে ৬৮ রান তোলেন সানজিদা ইসলাম এবং মুর্শিদা খাতুন। ১১তম ওভারের প্রথম বলে মুর্শিদা ৩৪ বলে চারটি চারের সাহায্যে ৩৩ রান করে বিদায় নেন। আরেক ওপেনার সানজিদা খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। ৬০ বলে ৬টি চার আর তিনটি ছক্কায় করেন অপরাজিত ৭১ রান। তিন নম্বরে নামা উইকেটরক্ষক ব্যাটার নিগার সুলতানা ৮ রান করে বিদায় নেন। শেষ দিকে আর কেউ তেমন রান করতে পারেননি। শায়লা শারমিন ৩, জাহানারা আলম ৩, ফাহিমা খাতুন ০, ফারজানা হক ২* রান করেন।
১৩১ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগ্রেসদের বোলিং তোপে পড়ে থাই মেয়েরা। শুরু থেকেই উইকেট খোয়াতে শুরু করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমি এবং ফাইনালে ওঠা থাইল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১১ রান করেন লেনপ্রাসার্ট। আর কেউ দুই অঙ্কে যেতে পারেননি।
জাহানারা ২ ওভারে ৩ রান দিয়ে উইকেট পাননি। নাহিদা ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে দুটি উইকেট তুলে নেন। রিতু মনি ২ ওভারে ৮ রান দিয়ে উইকেট পাননি। সালমা ৪ ওভারে ৪ রান দিয়ে একটি উইকেট পান। খাদিজা ৩ ওভারে ৮ রান দিয়ে একটি উইকেট পান। ফাহিমা ২ ওভারে ৭ রান দিয়ে উইকেট পাননি। ৩ ওভারে ৯ রান দিয়ে দুটি উইকেট তুলে নেন শায়লা শারমিন।
এর আগে বাছাইপর্বে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ছিল পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে, যদিও ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরে রিজার্ভ ডে’তে গড়িয়েছিল। নিজেদের প্রথম ম্যাচের আগেই টাইগ্রেসদের তাই নামতে হয় দ্বিতীয় ম্যাচে। যেখানে সালমা খাতুনের দলটি যুক্তরাষ্ট্রকে উড়িয়ে দেয়। আগে ব্যাট করা যুক্তরাষ্ট্র ৪৬ রানে অলআউট হয়। বাংলাদেশের সুযোগ ছিল বিনা উইকেটে জেতার। জয়ের কাছে থাকাকালীন দুটি উইকেট হারালেও টাইগাররা ৮.২ ওভারে জয় তুলে নেয়।
পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশ জিতেছিল ৬ রানে। আগে ব্যাট করে লাল-সবুজরা ১৬.৩ ওভারে তোলে ৮ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান। বৃষ্টির কারণে আর ব্যাটিংয়ে নামা না হলে পাপুয়া নিউগিনির লক্ষ্য দাঁড়ায় ৮ ওভারে ৫৯। দলটি ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ৫২ রান। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ বৃষ্টি আইনে জেতে ১৩ রানে। স্বাগতিক স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ১৭ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ১০৪ রান। বৃষ্টিতে ইনিংস না বাড়লে স্বাগতিকদের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ৮ ওভারে ৬৩। ৬ উইকেটে ৪৯ রান করলে স্কটিশদের ইনিংস থেমে যায়।
সেমিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আইরিশ মেয়েরা ২০ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে করে ৮৫ রান। জবাবে, বাংলাদেশ ৯ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয়। ১৮.৩ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তোলে ৮৬ রান।