আফগানদের কাছে ক্রিকেটের পর ফুটবলেও হারলো বাংলাদেশ
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২২:২১
ঢাকা: হারের হতাশা দিয়েই শুরু হলো বাংলাদেশের ফুটবল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের মিশন। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশ হেরে গেছে। সুযোগ ছিল অতীতের আক্ষেপ মেটানোর। সেই ১৯৭৯ সালে আফগানদের হারিয়েছিল লাল-সবুজরা। তারপরে আর জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ।
একদিনের মাথায় ক্রিকেটের পর ফুটবলেও হারলো বাংলাদেশ। সাকিবরা যেখানে আফগানিস্তানের সঙ্গে টেস্টে হেরেছে, তেমনি একই দেশের সঙ্গে বিশ্বকাপ মিশনের প্রথম ম্যাচটাও হেরেছে জামাল ভূঁইয়ারা।
আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) তাজিকিস্তানের দুশানবেতে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্ব ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্রথম ও অ্যাওয়ে ম্যাচে পামির স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।
ম্যাচের প্রথমার্ধ যেন ঝিমিয়েই খেলেছে জামাল ভূঁইয়ারা। জেমির কৌশলে ছিল প্রতি আক্রমণের চিন্তা। তাইতো দলটা ডিফেন্সিভ মুডেই নামিয়ে দিয়েছেন। ফরমেশন সাঁজিয়েছেন ৪-২-৩-১ এ। প্রতি আক্রমণের সুুযোগ পেলেও ফিনিশিংয়েই যেন খেই হারিয়ে ফেলেছে বিপলুরা। ভুলভাল পাসে চাপে পরে বাংলাদেশ। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সেট পিস থেকে লিড নেয় আফগানিস্তান। ২৭ মিনিটে হেড থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন অধিনায়ক ফারশাদ নুর। বলটা হয়তো আরেকটু সচেতন হলে আটকানো যেতো সেটা গোলের পরে গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানার প্রতিক্রিয়ায় বোঝা গেছে।
দ্বিতীয়ার্ধে এসে যেন খেলা বদলে যায় বাংলাদেশের। আক্রমণের পর আক্রমণ করতে দেখা যায়। সেই পুরানা রোগ। ফিনিশিংটাই যেন ঠিকমতো হয়ে ওঠে না জেমির শিষ্যদের। এই অর্ধে বলতে গেলে আফগানরা ‘বাংলা বন্দী’ হয়েই ছিল। পরবর্তীতে সুফিল ও রবিউল বদলি হিসেবে নামলে দলের গতি বেড়ে যায়। ৬২ মিনিটে রবিউলের থ্রো থেকে দারুণ সুযোগ তৈরি করে সফরকারী বাংলাদেশ। সাদের কাছ থেকে বলটা রবিউল বল পেয়ে ডি বক্সের ভেতরে পাঠালে একেবারে শূন্যে থাকা বলটা ঠিকমতো শট নিতে ব্যর্থ হন জামাল ভূঁইয়া। বাঁ পায়ের দুর্বল শট থেমে যাওয়ায় সুযোগটাও হাতছাড়া হয়ে জেমির শিষ্যদের।
একেবারে অন্তিম মুহূর্তে আরও বড় সুযোগ পায় বাংলাদেশ।
৯২ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগটা হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। ম্যাচের সবচেয়ে বড় সুযোগটাই ধরা দিয়েছিল লাল-সবুজদের। একেবারে ডি বক্সের ভেতরে ইয়াসিনের ব্যাকহিল থেকে আসা পাসটা পায়ে ঠিক মতো জমাতেই পারলেন না জীবন। পা থেকে ছুটে চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যার খেসারত দিতে হয়েছে ম্যাচটা হেরে।
চ্যালেঞ্জটা সহজ হবে বরং কঠিন হবে সেটা বলার অনুমেয়ই ছিল। কেননা আফগান দলটা র্যাঙ্কিংয়ে (১৪৯) বাংলাদেশের (১৮২) বেশ এগিয়ে। ৩৩ ধাপ। তার উপর অ্যাস্ট্রো-টার্ফে খেলতে হয়েছে জেমির শিষ্যদের। যা একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা। সবকিছু মিলিয়ে হারের অভিজ্ঞতা নিয়েই দেশে ফিরছে বাংলাদেশ।
লাওস বধ করে প্রাক বাছাই পেরিয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বে। এখানে চ্যালেঞ্জটা বরাবরই কঠিন। গত বারের ইতিহাস বলছে- ৮ ম্যাচে ৩২ গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে মাত্র দুবার বল জালে পাঠাতে পেরেছিল এমিলিরা। তাদের শিষ্যরাও এবারের মিশন শুরু করেছে হার দিয়ে। আফগানদের সঙ্গে হোম ম্যাচে মুখোমুখি হবে আগামী বছর ২৬ মার্চে। আপাতত পরের ম্যাচটা আরও কঠিন। বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতারকে অভ্যর্থনা দিবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের মূল একাদশ:
আশরাফুল ইসলাম রানা গোলরক্ষক) ডিফেন্ডার: বিশ্বনাথ ঘোষ, রহমত মিয়া, ইয়াসিন খান, টুটুল বাদশা মিডফিল্ডার: জামাল ভূঁইয়া (অধিনায়ক), বিপলু আহমেদ, সোহেল রানা, মোহাম্মদ ইব্রাহিম ফরোয়ার্ড: সাদ উদ্দীন, নবীব নেওয়াজ জীবন