বাংলাদেশের যে স্মৃতি ভোলেননি মাসাকাদজা
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৮:৫৯
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা জিম্বাবুয়ের হয়ে প্রথম বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন ২০০৫ সালে। দুই ম্যাচ সিরিজের টেস্ট ও পাঁচ ম্যাচ সিরিজের ওয়ানডেতে রান প্রসবা উইকেট উপহার দিয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। যা আজও তার স্মৃতিতে ভাস্বর। বাংলাদেশের সঙ্গে এটিই তার প্রথম স্মৃতি।
ভাবছেন হঠাৎ করে কেন মাসাকাদজার স্মৃতি নিয়ে লিখছি? শুনুন, বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজটি শেষ হলেই ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। সমাপ্তি টানবেন ক্রিকেটে ১৮ বছরের অধ্যায়ের। ক্যারিয়ারের একেবারে গোধুলি লগ্নে এসে পেছনে ফিরে বেশ তৃপ্ত এই জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক। কোন খেদ নেই। বরং সামগ্রিক অর্জন শীতে এসেও তার ক্রিকেটীয় চিত্তে বইয়ে দিচ্ছে বসন্তের বাতাস।
২০০৯ সালে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র ১৭ বছর ২৫৪ দিন বয়সে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরি করে নাম লিখিয়েছিলেন বিশ্ব ক্রিকেটের সবচাইতে তরুণ টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানের খাতায়। তিনিই প্রথম জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান যিনি ওয়ানডে ক্রিকেটে একই সিরিজে দুটি ১৫০ উর্ধ্বো ইনিংস খেলার অনন্য রেকর্ড গড়েছিলেন (১৭৮, ১৫৬ রান; ২০০৯ সাল। প্রতিপক্ষ:কেনিয়া )।
২০১৪ সালে আফগানিস্তানের জিম্বাবুয়ে সফরে সফরকারী দলটির বিপক্ষে সিকান্দার রাজার সঙ্গে গড়েছিলেন ২২৪ রানের অনবদ্য এক জুটি। ওয়ানডেতে এটিই জিম্বাবুয়ের সর্বকালে সেরা জুটির রেকর্ড। টি-টোয়েন্টিতেও দেশটির হয়ে সর্বোচ্চ রান তার দখলে (১৫২৯)। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরেও বিশ্ব রেকর্ড বইয়ের খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন।
দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সিরিজের টি-টোয়েন্টিতে তিনিই হয়েছিলেন সর্বোচ্চ সংগ্রাহক। চার ম্যাচে তার রান ছিল ২২২। একই বছর ভারতের জিম্বাবুয়ে সফরে তিনিই হয়েছিলেন দেশের হয়ে সর্বোচ্চ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার। ওই পর্যন্ত তার খেলা ম্যাচের সংখ্যা ছিল ৫০টি।
কাজেই ক্যারিয়ারে তৃপ্ত ও সন্তুষ্ট এই জিম্বাবুয়ান দলপতি। জানালেন, ‘অবশ্যই সন্তুষ্ট। আমার মনে হয় ক্যারিয়ারটা লম্বা ও সাফল্যমন্ডিত ছিল। উত্থান পতন থাকেই। তবে আমি বলব, পুরো সময়টা উপভোগ করেছি। আমি আমার দলের ওই সদস্যদের মনে করতে পারি, মনে করতে পারি দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারার সেই অনন্য অনুভূতি। যদি আমাকে আবার শুরুর সুযোগ দেওয়া হয় অবশ্যই আমি তা লুফে নেব।’
বাংলাদেশে তার প্রথম স্মৃতি নিয়ে বলতে গিয়ে জানালেন, ‘আমরা দুই দল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে খেলেছিলাম। সেখানে অন্যতম প্রধান যে বিষয়টি আমি আজও মনে রেখেছি সেটা হলো বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ফ্ল্যাট উইকেট। তখন এটাই ছিল আমার দেখা সেরা ব্যাটিং উইকেট।’
টেস্ট ক্রিকেটে ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে ৩৮ ম্যাচে ব্যাট হাতে হ্যামিল্টন করেছেন ২২২২ রান আর উইকেট সংখ্যা ১৬টি। ওয়ানডেতে সমান সংখ্যক বছরে ২০৯টি ম্যাচ থেকে তার সামগ্রিক রান ৫৬৫৮ ও উইকেট ৩৯টি। আর ২০০৬ থেকে খেলা টি-টোয়েন্টিতে তার মোট ম্যাচ সংখ্যা ৬২টি। রান ১৫২৯। আর উইকেট মাত্র ২টি।