ক্রিকেটাররা মেশিন নয়, মানুষ: ম্যাকেঞ্জি
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:০১
দেশে কি দেশের বাইরে, বাংলাদেশ একটি ম্যাচ হারলেই যেন ‘জাত গেল জাত গেল’ দশা। হার যেন কোনোভাবেই কাম্য নয়। ভাবখানা এমন যে জিততেই হবে। এত টাকা পয়সা যে দলের পেছনে খরচ করা হয় তারা হারবে কেন? এমন ভাবনার বশবর্তী হয়ে এদেশের মিডিয়া ও ভক্তদের দুয়োধ্বনিতে মেতে উঠতে দেখা যায়! যেন একটি কটু কথা বলতে পারলেই শান্তি। আর টানা ৫-৬টি ম্যাচ হারলে তো কথাই নেই। সম্ভব হলে এই গোষ্ঠী টাইগারদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে পাঠায়।
অথচ তারা বোঝেন না তাদের এমন কর্মযজ্ঞ দলের জন্য বিস্তর চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তারা ভুলে যান ক্রিকেটাররা মেশিন নয়, মানুষ।
উদাহরণ খুঁজতে খুব বেশি দূর যেতে হবে না। বিশ্বকাপে ভারতের সঙ্গে ম্যাচটি থেকে শুরু করে সদ্য সমাপ্ত আফগানিস্তানের সঙ্গে টেস্ট পর্যন্ত টিভি, সংবাদ পত্র, অনলাইন ও ফেইসবুকের দিকে তাকালেই হবে। কী বিদ্রুপই না বাংলাদেশকে নিয়ে হলো! তারা বেমালুম ভুলেই গেছেন এই দলটিই বিশ্বকাপে ক্রিকেট পরাশক্তিদের মূর্তিমান ত্রাসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল! মাঠের ক্রিকেট দিয়ে আলোড়ন তুলেছিল ২২ গজের বিশ্বযুদ্ধে।
শ্বাশ্বত এই সত্যটিই সংবাদ মাধ্যমের সামনে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাটিং কোচ নেইল ম্যাকেঞ্জি। তিনি জানালেন, ‘কখনও মনে হয় বাংলাদেশ দলের শত্রু বাংলাদেশই। কারণ এই আমরাই আমাদের দলের ওপর বর্ণনাতীত চাপ তৈরি করি। দর্শক থেকে শুরু করে মিডিয়াকেও আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। ক্রিকেটাররা মেশিন নয়, মানুষ। ঘরের মাঠে ওদের অসাধরণ রেকর্ড আছে।’
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিনি একথা বলেন।
গেল বেশ কয়েকদিন থেকেই ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের করুণ দশা। তরুণরা ভুগছেন ধারাবাহিকতার অভাবে, সিনিয়রদের কেউ কেউ হুট করে ছন্দহীন। টেস্টের মতো তাই সাদা বলের ক্রিকেটেও ব্যাটিং এখন বড় চিন্তার নাম। প্রশ্ন উঠছে ব্যাটসম্যানদের সামর্থ্য নিয়েও। তবে ম্যাকেঞ্জি তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নন।
তিনি যোগ করেন, ‘সৌম্য সরকার আয়ারল্যান্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফাইনালে দারুণ খেলল। আপনারা নিশ্চয়ই টিভিতে দেখেছেন। সে ঝড়ো ফিফটি করেছিল। সে পরিপূর্ণ খেলোয়াড়। তার বিশ্বাসটা দরকার। তার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠার কথা না। সে বড় বড় সেঞ্চুরি করেছে। মাত্র ছয় মাস আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে ৮০ করল। আয়ারল্যান্ডে দারুণ ট্যুর কাটাল। এই খেলোয়াড়দের উপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে, সমর্থন করতে হবে। আপনি সব সময় সেঞ্চুরি মারতে পারবেন না। লিটন দাস, আপনারা দেখেছেন সে কি করতে পারে। এশিয়া কাপের ফাইনালে ১৪০ রান করল। এটা চার বছর আগে নয়, মাত্র সাত মাস আগের ঘটনা। বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য রান তাড়ায় সে ৯০ করল। কাজেই আমি বলবো তারা ভালো খেলতে পারে।’