একটু দম নিতে বিসিবি ছাড়লেন ফাহিম
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:২৮
গেল বছরের জুন মাসের কথা। এশিয়া কাপের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল যখন ঢাকা ছাড়ছিল, বিসিবি একাডেমির সামনে দাঁড়িয়ে নাজমুল আবেদিন ফাহিম। সালমা, জাহানারাদের কিট ব্যাগসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী লজিস্টিক বিভাগ কাভার্ড ভ্যানে তুলছিল, তার তদারকি করছিলেন। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হলে এক সংবাদ কর্মী জানতে চান, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের কোন দায়িত্বটি আপনাকে দেওয়া হয়েছে? কিছু সময় নিচের দিকে তাকিয়ে চুপ থেকে বললেন, ‘লিখে দিয়েন নারী ক্রিকেট দলের ইনচার্জ।’ ফাহিমের এই বলায় ক্লেশ ছিল, ছিল হতাশা ও অপমান।
কেন জানেন? বিসিবি তাকে নারী ক্রিকেট দলের সুনির্দিষ্ট কোনো পদে অধিষ্ঠিত করেনি। বলে দেয়নি, আপনাকে এই দায়িত্বটি দেওয়া হলো। গেম ডেভেলপমেন্ট থেকে নারী দলে স্রেফ একটি বদলি পত্র তার বরাবর ইস্যু করেই ক্ষান্ত ছিল। বিসিবির ভাবখানা এমন, ‘আপনি সিনিয়র মানুষ। যেখানে দিয়েছি, চুপচাপ সব দায়িত্ব বুঝে নিন। পদ বা পদবীর প্রয়োজন নেই।’
এভাবে চলল প্রায় দেড় বছর। কিন্তু মানুষ ফাহিম এই দমবন্ধ পরিবেশ মেনে নিতে পারেননি। ফলে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে বিসিবি বরাবর চিঠি দিয়েছেন। আগামী মাস অর্থাৎ অক্টোবরের ১ তারিখ থেকে তিনি আর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে নেই। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে দুই যুগেরও বেশি সময়ের সম্পর্কের যবনিকা টানতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই অবিভাবক।
নাজমুল আবেদীন ফাহিম এমনই এক অবিভাবক, যিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের বর্তমান সময়ের সবার শিক্ষক। সাকিব, তামিম, মুশফিক, মুমিনুলরা যখনই ছন্দহীনতায় ভুগেছেন, ছুটে গেছেন তার কাছে। তিনিও পরম মমতায় তাদের ভুল শুধরে দিয়েছেন। সেই ‘শিক্ষক’ ফাহিমকে আর বিসিবি’র চত্বরে দেখা যাবে না।
কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত? সারাবাংলার করা এমন প্রশ্নে, শান্ত গলায় ফাহিম জানালেন, ‘একটু দম নিতে। আশপাশের পরিবেশটা কেমন দমবন্ধ হয়ে উঠেছিল।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটে বোর্ডে তিনি আসলেই কেমন ছিলেন সেটা ফাহিমের কথাতেই স্পষ্ট।
২০০৫ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে চাকুরি শুরু করা ফাহিম শুরুটা করেছিলেন হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) দলের সিনিয়র কোচের দায়িত্ব নিয়ে। এরপর অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচের দায়িত্ব শেষে অলংকৃত করেন ন্যাশনাল গেমস ডেভেলপমেন্টের ম্যানেজারের পদ। টানা দশ বছর তার অধীনে বেশ ভালোই চলছিল বাংলাদেশের গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগ। কিন্তু গেল বছরের এপ্রিলের দিকে কোনো এক অজানা কারণে সেখান থেকে সরিয়ে তাকে দেওয়া হয় নারী ক্রিকেট দলে।