যে কারণে গেইল ‘ইউনিভার্স বস’
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:১১
৪০ বছর ১ দিন, ক্রিস গেইলের বয়স। বয়স যে তার কাছে শুধুই একটা সংখ্যা প্রমাণ করেছেন বারবার। এখনো ব্যাট হাতে নিয়মিতই জ্বলে উঠছেন। এইতো কদিন আগেই সিপিএলে টি-টোয়েন্টিতে ২২তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এমনি এমনিতেই তো আর টি-টোয়েন্টির বস বলা হয় না গেইলকে। বুড়ো হাড়ের ভেলকি দেখিয়ে এখনও মাঠ কাঁপাচ্ছেন ‘ইউনিভার্স বস’ গেইল।
টেস্ট: উইন্ডিজ এই হার্ড হিটিং ওপেনার টেস্ট ছেড়েছেন ২০১৪ সালে। এখনও জাতীয় দলের ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতে খেলছেন গেইল। ১০৩ টেস্টে ৭২১৪ রান করা গেইলের সেঞ্চুরি ১৫টি, ফিফটি ৩৭টি। সাদা পোশাকে ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৯৮টি, বাউন্ডারি হাঁকিয়েছে এক হাজার ৪৬টি।
ওয়ানডে: ৩০১ ওয়ানডে ম্যাচে ২৫টি সেঞ্চুরি, ৫৪টি ফিফটিতে করেছেন ১০৪৮০ রান। যেখানে গেইলের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৩১টি ছক্কা আর ১১২৮টি চার।
টি-টোয়েন্টি: দেশের হয়ে ৫৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে গেইল দুইটি সেঞ্চুরি আর ১৩টি ফিফটির দেখা পেয়েছেন। এই ফরম্যাটে ১০৫টি ওভার বাউন্ডারি আর ১৩৮টি বাউন্ডারির দেখা পেয়েছেন। টি-টোয়েন্টিতে তার রান ১৬২৭।
সব ধরনের টি-টোয়েন্টি: ৩৯১ ম্যাচে করেছেন ১৩০২১ রান। যেখানে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২২টি সেঞ্চুরি আর ৮০টি ফিফটি। যেখানে গেইল হাঁকিয়েছেন ১০০১টি চার আর ৯৫৯টি ছক্কা।
*** টি-টোয়েন্টিতে গেইলের ১৩০২১ রান সর্বোচ্চ। এই তালিকায় দুইয়ে থাকা ব্রেন্ডন ম্যাককালাম করেছেন ৯৯২২ রান।
*** টি-টোয়েন্টিতে গেইলের হাঁকানো ৯৫৯টি ছক্কাই সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬২৬টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন আরেক ক্যারিবীয়ান কাইরন পোলার্ড।
*** গেইলের টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরির সংখ্যা ২২টি। জাতীয় দলের হয়ে দুটি, বাকি গুলো ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক দলের হয়ে। আর কোনো ব্যাটসম্যান ১০টির বেশি সেঞ্চুরির দেখা পাননি। এই তালিকায় দুইয়ে থাকা ম্যাককালামের সেঞ্চুরি সংখ্যা ৭টি।
*** ওয়ানডেতে গেইলের দশ হাজার ৪৮০ রান ক্যারিবীয়ান কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। ব্রায়ান লারা করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দশ হাজার ৩৪৮ রান।
*** টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ পেরুনো ইনিংস দুবার খেলেছেন গেইল। সাদা পোশাকের এই ফরম্যাটে তিনি চতুর্থ কোনো ব্যাটসম্যান যার নামের পাশে এমন কীর্তি লেখা হয়েছে। ২০০৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে গেইল করেছিলেন ত্রিপল সেঞ্চুরি। এরপর ২০১০ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও ত্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকান গেইল। স্যার ডন ব্রাডম্যান, ব্রায়ান লারা আর বিরেন্দর শেওয়াগের এই কীর্তি আছে।
*** টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি, ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরি আর টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি হাঁকানো একমাত্র ব্যাটসম্যান গেইল।
*** গেইল ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি তিন ফরম্যাটে সবার আগে সেঞ্চুরির দেখা পান। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১১৭ রান করার পর ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে সবার আগে সেঞ্চুরির মালিক হন গেইল।
*** ২০১৩ সালে আইপিএলের ম্যাচে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে মাত্র ৩০ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন গেইল। এখনও সেটি রেকর্ড বুকে দ্রুততম সেঞ্চুরির তালিকায় শীর্ষে।
*** সেই ম্যাচে ৬৬ বলে গেইল খেলেন ১৭৫ রানের ইনিংস। টি-টোয়েন্টিতে এটাই এখনও সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। যেখানে গেইল ছক্কা মেরেছিলেন ১৭টি।
*** ২০১৭ সালে গেইলের সর্বোচ্চ ১৭ ছক্কার রেকর্ডটি ভেঙে যায় বিপিএলে। এই রেকর্ডটি ভাঙেন গেইল নিজেই। ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের জার্সিতে ১৮টি ছক্কা হাঁকিয়ে গেইল এখনও রেকর্ড বুকের শীর্ষে।
*** ক্যানবেরায় ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচে গেইল করেছিলেন ২১৫ রান। ওয়ানডের ইতিহাসে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকালেও গেইল বিশ্বকাপের আসরে একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবলের দেখা পান।
*** পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার বুমবুম আফ্রিদি ওয়ানডেতে ৩৬৯ ইনিংসে হাঁকিয়েছেন ৩৫১টি ছক্কা। গেইল ২৯৪ ইনিংসে হাঁকিয়েছেন ৩৩১টি ছক্কা। এই তালিকায় দুইয়ে গেইল।
*** এ বছরের মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গেইল এক সিরিজে হাঁকান ৩৯টি ছক্কা। ওয়ানডে সিরিজে এটাই সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের রোহিত শর্মা হাঁকিয়েছিলেন ২৩টি ছক্কা।
*** গেইল একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি টেস্ট ম্যাচের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করেছিলেন।
গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক এমজানসি সুপার লিগে (এমএসএল) নাম লিখিয়ে রেকর্ড বুকে নতুন এক পাতা খুলেছেন গেইল। এমজানসি সুপার লিগের দল জোসি স্টার্সের হয়ে মাঠে নেমে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বের ১০টি ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগে খেলার রেকর্ড গড়েন তিনি। এই পর্যন্ত গেইল যেসব টি-টোয়েন্টি লিগে খেলেছেন সেগুলো হলো- ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, বিগ ব্যাশ লিগ, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, পাকিস্তান সুপার লিগ, র্যাম স্ল্যাম টি-টোয়েন্টি, ভাইটালিটি ব্ল্যাস্ট, গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি (কানাডা), আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগ ও এমজানসি সুপার লিগ।