‘দ্য ফেনোমেনন’ রোনাল্ডোর দৃষ্টি অনেকদূর
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৩:৩১
গত বছর ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার রোনাল্ডো স্প্যানিশ লা লিগার ক্লাব রিয়াল ভালাদোলিদ কিনে নিয়েছিলেন। পুরো ক্লাবের মালিকানা না পেলেও ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক হয়েছেন ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতানো এই কিংবদন্তি। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই তারকা এবার জানিয়ে দিলেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে তার ক্লাবটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে।
লা লিগায় এই মৌসুমে ছয়টি ম্যাচ খেলেছে রিয়াল ভালাদোলিদ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিতলেও পরের পাঁচটি ম্যাচে জয়হীন রোনাল্ডোর ক্লাবটি। ছয় ম্যাচের একটিতে জয়, তিনটিতে ড্র আর দুটিতে হেরে যাওয়া ক্লাবটি লিগের পয়েন্ট টেবিলে ২০ দলের মধ্যে আপাতত ১৪তম স্থানে। তাদের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট।
মাদ্রিদের এক সংবাদ সম্মেলনে ভালাদোলিদের মালিক ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি জানান, ‘পাঁচ বছরের মধ্যে আমার ক্লাবটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে চায়। আমিও চাই ইউরোপের শ্রেষ্ঠ এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ৫ বছরের মধ্যে তারা লড়াই চালিয়ে যাক। আমাদের পরিকল্পনা এমনই ছিল। এসবের জন্যই আমরা বিনিয়োগ করেছি। হয়তো এখনও এটা আমাদের স্বপ্ন কিন্তু স্বপ্ন পূরণে আমাদের বড় কিছু ভাবতে মানা নেই।’
রোনাল্ডো আরও যোগ করেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো আসরে খেলার সুযোগ পেতে হলে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে, ক্লাবের ঐতিহ্য-সংস্কৃতির উন্নতি করতে হবে। আমরা সেদিকে দৃষ্টি রেখেছি। যদিও অন্য দলগুলোর মতো আমাদের বড় মাপের খেলোয়াড় নেই। সেখানে অংশ নিতে মৌলিক যে জিনিসগুলো দরকার যেমন নিজস্ব স্টেডিয়াম দরকার। আমাদের যে স্টেডিয়াম আছে সেটা আমার একার নয়, এটা ভালাদোলিদের মানুষের নিজস্ব স্টেডিয়াম। আমি শুধু এটার পরিবর্ধন করতে পারি, আরও আমারদায়ক করতে পারি। কিন্তু খেলা তাদেরই খেলতে হবে যারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অংশ নিতে চায়। এগুলো আমাদের পরিকল্পনার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’
ভালাদোলিদের মালিকানার অর্ধেকের বেশি অংশ কিনতে রোনাল্ডোর খরচ হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ইউরো। চুক্তি অনুযায়ী রোনাল্ডো ক্লাবটির সভাপতি হওয়ায় আগের সভাপতি কার্লোস সুয়ারেজ হয়েছেন ক্লাবের নির্বাহি পরিচালক। ব্রাজিল মহা-তারকা আরও যোগ করেন, ‘সমাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে চায় এই ক্লাব। এরই মধ্যে আমরা স্থানীয় মেয়ে ফুটবলারদের সুযোগ করে দিয়েছি ক্লাবে এসে নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার। আমাকে ফুটবল ক্যারিয়ারের অনেক পর্যায় পার হতে হয়েছে। ফুটবল হচ্ছে আমার ভালোবাসার একটা জায়গা। ফুটবল আমার আবেগের জায়গা। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আমরা সম্ভাব্য সেরা দল প্রস্তুত করতে চাই, ভক্তদেরও পাশে চাই।’
২০০৬ সালে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হারের পর ব্রাজিল দল থেকে হারিয়ে যান রোনাল্ডো। অনেক চেষ্টা করেছিলেন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ফেরার। কিন্তু ফিটনেস, ইনজুরি সব মিলিয়ে সবুজ মাঠে জাতীয় দলের জার্সি আর গায়ে জড়াতে পারেননি তিনি। এরপর উত্তর আমেরিকা সকার লিগের (এনএএসএল) দল এফএল স্ট্রাইকার্সের অন্যতম মালিক হন ব্রাজিলের এই কিংবদন্তি। ফ্লোরিডাভিত্তিক ওই দলটি এনএসএলে নিয়মিতই খেলছে। তবে, ব্রাজিল আইকনের দৃষ্টি সেখানেই থেমে থাকেনি। চেয়েছিলেন আরও বড় কোনো ক্লাব কেনার। ইংল্যান্ড কিংবা স্পেনের দ্বিতীয় সারির কোনো ক্লাব কিনতেও বার বার আগ্রহ দেখান দ্য ফেনোমেনন।
রোনাল্ডো ব্রাজিলের জার্সিতে খেলেছেন ৯৮ ম্যাচ, গোল করেছেন ৬২টি। ক্লাব ক্যারিয়ারে ৫০০’র ওপরে ম্যাচ খেলেছেন। ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে খেলেছেন স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদে। ইন্টার মিলান আর এসি মিলানের জার্সিতেও মাঠ মাতিয়েছেন তিনি। এবার অপেক্ষায় আছেন মাঠের বাইরে থেকে ফুটবল মাতানোর।