অমীমাংসিত রইল মাদ্রিদ ডার্বি
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৯:৩১
স্প্যানিশ লা লিগার তো বটেই, ফুটবল বিশ্বের সব থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ম্যাচের মধ্যে অন্যতম মাদ্রিদ ডার্বি। অর্থাৎ স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের দুই ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ এবং অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের মধ্যকার ম্যাচ। ২০১৯-২০২০ মৌসুমে লা লিগায় প্রথমবারের মতো মুখোমুখি দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী। হাই ভোল্টেজ এই ম্যাচ শেষ হয়েছে গোল শূণ্য ড্র’তেই। আর রয়ে গেছে মৌসুমের প্রথম ডার্বি অমীমাংসিত।
অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের ঘরের মাঠ এস্তাদিও ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটিয়ানোতে রিয়াল মাদ্রিদকে মৌসুমের প্রথম ডার্বিতে আতিথ্য দেয়। কানায় কানায় পূর্ণ মেট্রোপলিটিয়ানো, ৬৮ হাজার ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামটিকেও তখন অনেক ছোট মনে হচ্ছিলো। হাই ভোল্টেজ এই ম্যাচে সমান তালে লড়েছে দুই দলই। তবে রক্ষণভাগের দৃঢ়তা ভাঙতে পারেনি দুই মাদ্রিদের কেউই। আর তাই তো ম্যাচ শেষে গোলের সংখ্যা সেই শূণ্যই।
লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে সাত ম্যাচে চার জয় আর তিন ড্র’য়ে ১৫ পয়েন্ট রিয়াল মাদ্রিদের। নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের থেকে এক পয়েন্ট আর বার্সেলোনার থেকে দুই পয়েন্ট বেশি নিয়ে সবার শীর্ষে রিয়াল। সমান সাত ম্যাচে চার জয় দুই ড্র আর এক হারে অ্যাতলেটিকোর পয়েন্ট ১৪, অন্যদিকে চার জয় এক ড্র আর দুই হারে বার্সার পয়েন্ট ১৩।
ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটিয়ানোতে ম্যাচের শুরু থেকেই দেখা মেলে দুই কোচের বিশ্বমানের ট্যাকটিস। মাঠের খেলাতে এক চুলও ছাড় দিতে নারাজ ডিয়েগো সিমিওনে আর জিনেদিন জিদান। ইনজুরি জর্জরিত রিয়াল মাদ্রিদের ফুলব্যাকে ছিলেন না অভিজ্ঞ মার্সেলো কিংবা তরুণ তুর্কি ফারল্যান্ড মেন্ডি। আবার ইনজুরি থেকে সদ্য ফেরা লুকা মদ্রিচও ছিলেন বেঞ্চে বসেই। তবে এক ম্যাচ পরে আবারও শুরুর একাদশে ফেরেন থিবো কোর্তোয়া, রাফায়েল ভারান, ড্যানিয়েল কার্ভাহাল, গ্যারেথ বেল, করিম বেনজেমা আর এডেন হ্যাজার্ড।
ম্যাচের শুরু থেকেই দেখা মেলে মাঠে দুই দলের দারুণ আক্রমণ প্রতি আক্রমণ। অনেক দিন পর রিয়াল যেন নিজেদের পূর্ণ রূপে ফিরেছে। অ্যাতলেটিকোর জমাট বাধা ডিফেন্স অবশ্য ভেদ করতে পারেনি জিদানের শিষ্যরা। তবে কীভাবে ইউরোপের সেরা ডিফেন্সিভ টিমকে নাচানো যায় তা ঠিকই দেখিয়েছে জিদানের শিষ্যরা। গোলের খুব কাছে গিয়েও জিয়ান ওবালাকের অসাধারণ পারফরম্যান্সে বঞ্চিত রিয়াল। প্রথমার্ধেই টনি ক্রুসের অঙ্ক কষা শটে কোনো রকমে আঙুল ছুঁয়ে অ্যাতলেটিকোকে রক্ষা করে ওবালাক। অন্যদিকে মধ্যমাঠ থেকে লস ব্ল্যাঙ্কোসদের ডি বক্স পর্যন্ত দারুণ সব আক্রমণ করতে থাকে সিমিওনের শিষ্যরাও। তবে রিয়ালের বদলে যাওয়া ডিফেন্সের সামনে যে তা কিছুই না। আর তাই তো ম্যাচের পুরো ৯০ মিনিট ধরে একটি শটও থিবো কোর্তোয়ার দিকে মারতে পারেনি ডিয়েগো কস্টারা।
কেবল মাদ্রিদ ডার্বিতেই নয়, গেল তিন ম্যাচে কোনো গোল হজম তো পরের কথা প্রতিপক্ষকে নিজেদের গোল বরাবর একটি শট নিতেও দেয়নি অল হোয়াইটসরা। লস ব্ল্যাঙ্কোসরা শেষ নিজেদের জাল বরাবর শট দেখেছিল ফ্রান্সে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের বিপক্ষে। সে ম্যাচে ৩-০ গোলে হেরেছিল রিয়াল। আর ওই ম্যাচের পর থেকেই বদলে গেছে রিয়ালের রক্ষণভাগ।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা সার্জিও রামোস আর ব্রাজিলিয়ান ট্যাঙ্ক নামে পরিচিত মধ্যমাঠে ক্যাসেমিরোকে পেরিয়ে সেভিয়া, ওসাসুনার পর রিয়ালের গোল বরাবর শট নিতে ব্যর্থ অ্যাতলেটিকোও।
অ্যাতলেটিকোর মাঠে শেষ পর্যন্ত এগিয়েই ছিল রিয়াল। ম্যাচে সব থেকে বেশি সুযোগ তৈরি করেছিল জিদানের শিষ্যরা। আর গোল করার সব থেকে কাছেও গিয়েছিল তারায়। তবে বাজে ফিনিশিং সেই সাথে ওবালাকের অমানবিক পারফম্যান্সের কাছেই গোল বঞ্চিত লস ব্ল্যাঙ্কোসরা।
ফুটবল মাঠের মধ্যেই দুই কোচ ডিয়েগো সিমিওনে আর জিনেদিন জিদান যেন খেলছিলেন দাবা। বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলে একে অপরকে ঘায়েল করার শত চেষ্টা কিন্তু কেউ কারো থেকে কম নন। তাই তো অসাধারণ ট্যাক্টিক্যাল ব্যাটেলের এই ম্যাচ অমীমাংসিত গোল শূণ্যতে। আর সেই সাথে রিয়াল পাকাপোক্ত করেছে নিজেদের শীর্ষ স্থান।
গোল শূন্য ড্র মাদ্রিদ ডার্বি রিয়াল মাদ্রিদ- অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ স্প্যানিশ লা লিগা