এমসিসি থেকে পদত্যাগ করেছেন সাকিব
৩০ অক্টোবর ২০১৯ ১০:৫৬
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বাংলাদেশের ক্রিকেটের ওপর বয়ে গেছে এক কালবৈশাখী ঝড়। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সব থেকে উজ্জ্বল নক্ষত্রটি আলো ছড়াতে পারবে না কমপক্ষে এক বছর। আইসিসি’র কোড অব কনড্যাক্ট ভঙ্গ করায় সাকিব আল হাসানকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগ মেনে নেওয়ায় এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কমানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থাটি। আর এই নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন সাকিব আল হাসান।
এমসিসি অর্থাৎ মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের কমিটির সঙ্গে ২০১৭ সালের অক্টোবরে যুক্ত হন সাকিব। যুক্ত হওয়ার পর দু’টি সভাতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি এবং ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে অংশ নেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িতে নানান ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য প্রত্যেক বছরে দুইবার এই সভার আয়োজন করা হয়। ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য কাজ করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই স্বাধীন সংস্থাটি। ২০২০ সালে শ্রীলঙ্কায় এই কমিটির পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
সবধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হওয়ার পর সাকিব এমসিসির কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। আর সেই পদত্যাগ পত্রগ্রহণ করেন ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান মাইক গ্যাটিং। এমসিসির ওয়েবসাইটে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে সাকিবের পদত্যাগের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে মাইক গ্যাটিং বলেছেন, ‘এই কমিটি থেকে সাকিবকে হারানো আসলেই দুঃখজনক। গেল কয়েকবছর ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটিতে সাকিবের অনন্য অবদান ছিল। আমরা তাঁর পদত্যাগকে সমর্থন করি। এটি তাঁর জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত বলেই মনে করি আমরা।’
এদিকে আইসিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সাকিব তিনবার জুয়াড়ির প্রস্তাব পাওয়ার পরেও তা গোপন করে যায় এবং আইসিসিকে জানাতে ব্যর্থ হয়। এবং আইসিসির কোড অব কন্ড্যাক্ট অনুযায়ী যা অপরাধ। আইসিসি ২.৪.৪ ধারাটি সাকিব টানা তিনবার ভঙ্গ করেন।
২.৪.৪ ধারা: ২০১৮ সালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ত্রিদেশীয় সিরিজ ও ২০১৮ সালে আইপিএলের সময় জুয়াড়িদের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবের কথা আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (এসিইউ) কাছে জানাননি সাকিব।
২.৪.৪ ধারা: ২০১৮ সালের ত্রিদেশীয় সিরিজেই তাঁর সঙ্গে জুয়াড়িরা দ্বিতীয়বার যোগাযোগ করলেও সেটি দ্বিতীয়বার এসিইউর কাছে বিস্তারিত জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব।
২.৪.৪ ধারা: ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের একটি ম্যাচের আগে সাকিবকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেটিও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
আর বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এই অভিযোগ মেনেও নিয়েছেন। দুর্নীতিবিরোধী নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ মেনে নেওয়ায় এবং তদন্তে সার্বিক সহায়তা করায় সাকিবকে দেওয়া দুই বছরের নিষেধাজ্ঞায় এক বছরের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে একই ধরনের অপরাধ করলে এই স্থগিতাদেশও কার্যকর হবে।