Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

টেস্টে কনিষ্ঠ অভিষিক্তরা


২২ নভেম্বর ২০১৯ ০৯:৫২

ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছে পাকিস্তানের বিস্ময়বালক নাসিম শাহের। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ১৬ বছর বয়সে গ্যাবায় অভিষিক্ত হলেন এই পেসার। টেস্ট ক্রিকেট ১৩তম সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন মাত্র সাতটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা পাকিস্তানি এই বিস্ময়বালক। এর আগে আরও ১২ খেলোয়াড় ১৭ বছরে পা রাখার আগেই পা দিয়েছিলেন টেস্টে। তাদের মধ্যে পাঁচ জন রয়েছেন বাংলাদেশিও। চলুন একনজরে দেখে নেই ১৭-এর আগে টেস্টে অভিষিক্ত ক্রিকেটারদের ইতিবৃত্ত।

বিজ্ঞাপন

হাসান রাজা (পাকিস্তান)

১৯৯৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাত্র ১৪ বছর ২৩৭ দিন বয়সে টেস্টে অভিষেক হয় হাসান রাজার। সাবেক এই পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারে খেলেছিলেন মাত্র সাতটি টেস্ট। ২৬.১১ গড়ে রান করেছিলেন ২৩৫। ক্যারিয়ারে কোনো শতকের ইনিংস না থাকলেও ছিল দুইটি অর্ধশতকের ইনিংস। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লাহোরে তিনি খেলেছিলেন নিজের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট, যেখানে খেলেছিলেন ২১ রানের ইনিংস। সেই টেস্ট পাকিস্তান জিতেছিল ইনিংস ও ১০০ রানে।

মুশতাক মোহাম্মদ (পাকিস্তান)

১৯৪৩ সালে ভারতের গুজরাটে জন্ম নেয়া মুশতাক মোহাম্মদ খেলেছেন পাকিস্তান জাতীয় দলের হয়ে। পাকিস্তানি ক্রিকেটে মোহাম্মদ পরিবারের অন্যতম এই সদস্য মাত্র ১৫ বছর ১২৪ দিনে আন্তর্জাতিক টেস্টে পদার্পণ করেন। লাহোরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ম্যাচে স্বাগতিকরা জিতেছিল ইনিংস ও ১৫৬ রানে। ৫৭ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১০টি শতক ও ১৯টি অর্ধশতকের ইনিংস খেলে করেছিলেন ৩৬৪৩ রান। বল হাতেও তিনি ছিলেন বেশ আগ্রাসী। এক ইনিংসে সেরা বোলিং তার ২৮ রানে ৫ উইকেট। ম্যাচে সেরা বোলিং ফিগার তার ১১৯ রানে ৯ উইকেট। ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ৬ বার, ৫ উইকেট ৩ বার। পাকিস্তানের ইতিহাসে এক টেস্টে দুইবার ৫ উইকেট ও সেঞ্চুরির রেকর্ডটিও এই ক্রিকেটারের দখলে রয়েছে এখন অবধি।

মোহাম্মদ শরীফ (বাংলাদেশ)

মাত্র ১৫ বছর ১২৮ দিনে আন্তর্জাতিক টেস্টে অভিষিক্ত হন বাংলাদেশের মোহাম্মদ শরীফ। বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট অভিষিক্ত খেলোয়াড়। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ দলের হয়ে সাদা পোশাকে যাত্রা শুরু হয় এই বোলারের। তবে খুব বেশিদিন বাংলাদেশের হয়ে সাদা জার্সি গায়ে চাপাতে পারেননি তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারে খেলাছেন ১০ টেস্ট। টাইগারদের হয়ে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।

বিজ্ঞাপন

আকিব জাভেদ (পাকিস্তান)

১৬ বছর ১৮৯ দিনে সাদা জার্সি গায়ে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক হয় আকিব জাভেদের। ১৯৮৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে এই পাক বোলারের। ক্যারিয়ারে ২২ টেস্ট খেলে ৩৪.৭০ গড়ে নিয়েছেন ৫৪টি উইকেট। এর মধ্যে ইনিংস সেরা ফিগার ৫/৮৪, ম্যাচ সেরা ফিগার ৮/১১৮। ম্যাচে ৪ উইকেট পেয়েছিলেন দুইবার এবং মাত্র একটিবার পেয়েছেন ৫ উইকেট। ১৯৯৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেন ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট।

শচীন টেন্ডুলকার (ভারত)

ভারতের লিটল মাস্টার শচীন টেন্ডুলকারও টেস্টে পা রেখেছিলেন ১৭ বছর পেরোনোর আগেই। ১৬ বছর ২০৫ দিন বয়সে পাকিস্তানের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলেন এই ব্যাটসম্যান। এরপর একে একে খেলেছেন ২০০ টেস্ট। ৫৩.৭৮ গড়ে করেছেন ১৫ হাজার ৯২১ রান। বর্ণিল ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারে রয়েছে তার ৫১টি শতক, ৬৮টি অর্ধশতক। ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস তার ২৪৮ নট আউট। বল হাতে নিয়েছেন ৪৬টি উইকেট। ২০১৩ সালে টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানেন এই কিংবদন্তি খেলোয়াড়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ম্যাচে তিনি খেলেন ৭৪ রানের ইনিংস।

আফতাব বেলুচ (পাকিস্তান)

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯৬৯ সালে ঢাকায় টেস্টে অভিষিক্ত হন আফতাব বেলুচ। ১৬ বছর ২১১ দিন বয়সে আন্তর্জাতিক টেস্টে নাম লেখানো এই ব্যাটসম্যান পাকিস্তানের হয়ে খেলেছিলেন মাত্র দু’টি টেস্ট। ফোর হান্ড্রেড ক্লাবের এই সদস্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক ইনিংসে করেছিলেন ৪২৮ রান। ১৯৭৫ সালে লাহোরে খেলেন ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট।

তালহা জুবায়ের (বাংলাদেশ)

১৬ বছর ২৩৩ দিনে ২০০২ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে পা রাখেন বাংলাদেশের তালহা জুবায়ের। শুরুতে বেশ সম্ভাবনা দেখালেও বেশি দিন টেস্টে বিচরণ করতে পারেননি চোট ও প্রত্যাশার চাপে। মাত্র ৭ টেস্টে খেলেই দেশের হয়ে সাদা পোশাকের খেলা থেকে ছিটকে যান তালহা। ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্টের পর আন্তর্জাতিক টেস্ট অঙ্গনে আর দেখা মেলেনি সম্ভাবনাময়ী এই ক্রিকেটারের।

নাসিম উল গনি (পাকিস্তান)

১৯৫৮ সালে মাত্র ১৬ বছর ২৪৮ দিন বয়সে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখেন নাসিম উল গনি। পাকিস্তানের একমাত্র নাইটওয়াচম্যান উপাধিপ্রাপ্ত এই ব্যাটসম্যান পাকিস্তানের হয়ে ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরি করার কীর্তি অর্জন করেছিলেন। বল হাতেও তার অর্জন ফেলে দেওয়ার মতো নয়। ২৯ টেস্ট খেলা এই ক্রিকেটারের ২.৬৬ ইকোনোমি রেটে উইকেট পেয়েছিলেন ৫২টি। ইনিংস সেরা বোলিং ৬/৬৭, ম্যাচসেরা বোলিং ৮/১২০।

মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)

২০০৫ সালে ঐতিহাসিক লর্ডসের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬ বছর ২৬৭ দিনে অভিষেক ঘটে মুশফিকুর রহিমের। এখন পর্যন্ত খেলা ৬৮ টেস্টে ৩৫.০৫ গড়ে করেছেন ৪ হাজার ১৩৬ রান। ৬টি শতকের সাথে তার ঝুলিতে রয়েছে ২০টি অর্ধশতক। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস তার অপরাজিত ২১৯ রান, যা এখন পর্যন্ত টেস্টের এক ইনিংসে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের করা সর্বোচ্চ রান। আজ (২২ নভেম্বর) ক্যারিয়ারের ৬৯তম ম্যাচ খেলতে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবেন মুশি। শচীন টেন্ডুলকারের পর ১৭ বছর বয়সের আগে টেস্টে অভিষিক্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলা ক্রিকেটার বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।

নাসিম শাহ (পাকিস্তান)

২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৬ বছর ২৭৯ দিন বয়সে টেস্টে অভিষেক ঘটে পাকিস্তানি বিস্ময়বালক নাসিম শাহের। মাত্র ৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা এই পেসার নির্বাচকদের নজরে পড়েন গতি ও সুইংয়ের কারণে।

শাহাদাত হোসেন (বাংলাদেশ)

২০০৫ সালে লর্ডসে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে অভিষেক হয়েছিল উদীয়মান পেসার শাহাদাত হোসেনের। মাত্র ১৬ বছর ২৯২ দিনে বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখেন এই পেসার। ২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত খেলেছেন ৩৮টি টেস্ট। নিয়েছেন ৭২টি উইকেট। তবে বদ মেজাজ ও পারফরম্যান্সের জন্য দলে খুব একটা বেশি সময় দেখা যায়নি এই পেসারকে। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক টেস্ট ছাড়লেও খেলতেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। কিন্তু সম্প্রতি খেলা চলাকালীন সতীর্থকে মারধরের দায়ে ৫ বছরের জন্য ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয় এই ক্রিকেটারকে।

এনামুল হক জুনিয়র (বাংলাদেশ)

২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অভিষিক্ত হন ১৬ বছর ৩২০ দিন বয়সী এনামুল হক জুনিয়র। ১০ বছরে ক্যারিয়ারে ১৫ টেস্ট খেলে ৪৪ উইকেট শিকার করেছিলেন এই স্পিনার। ২০১৩ সালে হারারেতে টেস্টকে বিদায় জানান এই স্পিনার।

খালিদ হাসান (পাকিস্তান)

এখন পর্যন্ত ১৭ এর নিচে অভিষিক্ত টেস্ট খেলোয়াড়দের ভেতর তিনিই সবচেয়ে সিনিয়র। ১৭ ছুঁই ছুঁই সময় আন্তর্জাতিক টেস্টে পা দেন। ১৬ বছর ৩৫২ দিন বয়সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা অভিষেক টেস্টটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম ও শেষ টেস্ট। ওই সময় তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ টেস্ট অভিষিক্ত খেলোয়াড়। সেইসঙ্গে একমাত্র টেস্ট খেলা সবচেয়ে ছোট খেলোয়াড় হিসেবে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন তিনিই।

১৭ বছর বয়সের আগে অভিষেক অভিষিক্ত ক্রিকেটার অভিষেক টেস্ট ক্রিকেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর