‘জাতি যে প্রত্যাশা করছে তা পূরণ করবে জামাল-জীবনরা’
১ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:৪১
ঢাকা: সাম্প্রাতিক পারফরম্যান্সে বলতে গেলে নবজাগরণ হচ্ছে দেশের ফুটবলে। প্রত্যাশা বাড়ছে জামাল ভূঁইয়াদের ঘিরে। আশা-প্রত্যাশার এমন সমীকরণের সামনে বড় একটা চ্যালেঞ্জের সামনে লাল-সবুজরা। এসএ গেমস খেলতে বাংলাদেশ দল এখন নেপালে। সোমবার (০২ ডিসেম্বর) ভুটানকে দিয়ে শুরু হবে শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন। সবশেষ ২০১০ সালে এসএ গেমসের শিরোপা ঘরে তুলেছিল বাংলাদেশ। ৯ বছরের শিরোপা খরা ঘোচানো এখন সময়ের দাবি মনে করছেন দেশের সাবেক চ্যাম্পিয়ন ফুটবলার ও সংশ্লিষ্টরা।
১৯৯৯ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গোলরক্ষক থেকে শুরু করে ২০০৩ সালের সাফজীয় ফুটবল তারকা, ২০১০ সালে ঘরের মাঠে এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী ফুটবল দলের সদস্য ও জাতীয় দলের সাবেক কোচ কথা বলেছে সারাবাংলাডটনেটের সঙ্গে। জামাল ভূঁইয়াদের নিয়ে জানিয়েছে তাদের প্রত্যাশার কথা। তাদের করণীয়’র কথা।
আলফাজ আহমেদ (২০০৩ সালে সাফজয়ী ফুটবল দলের সদস্য):
এই দলটা নিয়ে প্রত্যাশা বেশি। যেহেতু বেশিরভাগ ফুটবলারই মূলত এই দলের। তাই প্রত্যাশাটাও বেশি। ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই যদি চেষ্টা করে। গত কয়েকবছর ধরে কোনও সাফল্য নেই। আবার কে কার সঙ্গে খেলছি, ইন্ডিয়া নেই বা মালদ্বীপ শক্তিশালী দল এসব চিন্তা করা যাবে না। স্টেপ বাই স্টেপ যেতে হবে। চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে। দুই বছর ধরে একই কোচ জেমি ডে’র আন্ডারে আছে তাই আশা করা যায়।
এনামুল হক (২০১০ সালে এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী দলের সদস্য):
আমি চাইবো সবসময় বাংলাদেশের ফুটবল ভাল করুক। সুনাম যেন হয়। ফুটবলের ভাবমূর্তি আরও উঁচুতে যাক। এখন আমাদের টিম টাস ভাল খেলে ডিফেন্স ভাল। শুধু ফিনিশিংয়ের একটু অভাব আছে। স্ট্রাইকাররা সেভাবে গোল দিতে পারছে না। আমাদের স্ট্রাইকারের মধ্যে গোলের ক্ষুধা বা ফাইটিংনেসটা কম। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো ফিনিশিংয়ের সময় একজন থাকছে। ম্যাচ যখন গোলের খেলা। আমি স্ট্রাইকার হিসেবে বলতে চাই ফিনিশিংয়ের সময় ঠাণ্ডা মাথায় তাদের গোল করতে হবে। তাহলেই রেজাল্ট বের হবে। আমাদের লিগে ক্লাবগুলো যদি স্থানীয় স্ট্রাইকারদের বেশি করে সুযোগ দেয় তাহলে এরাই জাতীয় দলের হয়েও ভাল করবে। বাফুফেকেও উদ্যোগী হতে হবে এই স্ট্রাইকার সংকট নিরসনে। লিগে খেলতে খেলতেই তারা জাতীয় দলে ভাল করবে। আশা করি এই দলটা এসএ গেমস জিতবে।
শফিকুল ইসলাম মানিক (জাতীয় দলের সাবেক কোচ):
এবারের প্রত্যাশাটা একটু ভিন্ন। সম্প্রতি জাতীয় দলের খেলোয়াড় ও কোচ যেভাবে দলটাকে খেলাচ্ছে মানসিক ও শারীরিকভাবে আমরা প্রস্তুত সবসময় এটা বুঝা যায়। এদিকে ভারত ফ্যাবারিট দল। তারা নেই। আমাদের অলমোস্ট ন্যাশনাল টিম। আমরা যে পারফরম্যান্স দেখেছি সেটার ধারাবাহিকতা যদি বজায় রাখতে পারি আমি নিঃসন্দেহে বলতে আমরা ফ্যাবারিট হয়ে চ্যাম্পিয়ন হবো। এ ধরনের একটা প্রত্যাশা করতেই পারি। তারা অনেকদূর এগিয়েছে আমার মনে হয়েছে। কয়েকদিন আগেও বাংলাদেশ যার সঙ্গেই খেলতাম যেন খেলার আগেই হেরে বসতাম। সম্প্রতি আমরা সেটা ওভারকাম করেছি।
সেকেন্ড কাউকে ফ্যাবারিটভাবে তাহলো বাংলাদেশ। ভাগ্য বিড়াম্বনা বা অন দ্য ডে’তে বেশি খারাপ না খেললে আমরা নিশ্চিত প্রত্যাশা করি চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের ফুটবলের পুনর্জাগরণে ভূমিকা রাখবে। যেহেতু দেশের মানুষ মাঝে একটু ভিন্নমূখী হয়ে গিয়েছিল। এখন আবারও প্রত্যাশা করছে। প্রত্যাশা কিন্তু বেশি না। সাফে ভাল করা বা দক্ষিণ এশিয়ায় একটু ভাল করা এটাই চায়।
বিপ্লব ভট্টাচার্য: (১৯৯৯ সালে সাফজয়ী ফুটবল দলের গোলরক্ষক):
আমরা যখন ২০ বছর আগে জিতেছি তখন সাফ গেমস জিতেছি। তখন সিনিয়র দল ছিল। এবার অ: ২৩ দল। আমরা চাই শুধু এসএ গেমস না সাফ গেমসেও জিতুক। আমাদের রেকর্ডটা ভাঙ্গুক জামাল ভূঁইয়ারা। আমাদের ফুটবলে এখন যা অবস্থা তৈরি হয়েছে সামনে আরও ভাল অবস্থায় যাবে আমি আশা করি। কালকের ম্যাচে ভুটানের সঙ্গে আছে। মাঝে অ: ১৯ পর্যায়ে ভুটানের সঙ্গে হেরেছি। যেখানে বাহরাইন-জর্ডানের মতো দলগুলোকে আটকে দিয়েছি। আমরা সবসময় ভাবি ভুটান চার-পাঁচ গোল খাবে মিনিমাম। সম্প্রতি যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে সেই প্রত্যাশা আর পারফরম্যান্স যেন ধরে রাখে জামালরা সেটাই চাই। কালকের ম্যাচটা জিতলে আমরা বড় ধাপ এগিয়ে যাবো। ফোকাস করা উচিৎ ম্যাচটা কীভাবে জিতবো। প্রথম ম্যাচটা জিতি তাহলে টুর্নামেন্টের টার্গেটের মিনিমাম ৭০ শতাংশ অর্জন হয়ে যাবে। আমাদের প্রথম দরকার ভাল মার্জিনে ম্যাচটা জেতা। যদি ভাল মার্জিনে জিততে পারি তাহলে ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে যাবে। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে সবার।
আলফাজ আহমেদ এনামুল হক এসএ গেমস জামাল ভূঁইয়ারা জেমি ডে পুনর্জাগরণ বাংলাদেশ বিপ্লব ভট্টাচার্য শফিকুল ইসলাম মানিক