নেপালের কাছে হেরে স্বর্ণের স্বপ্ন শেষ বাংলাদেশের
৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:২৪
নেপালকে হারাতে পারলেই বাংলাদেশ চলে যাবে ফাইনালে। দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসের ফুটবলে এমনটাই সমীকরণ ও লক্ষ্য ছিল জামাল ভূঁইয়াদের সামনে। সেই চ্যালেঞ্জে সফল হতে পারেনি বাংলাদেশ। স্বাগতিক নেপালের কাছে হেরে স্বর্ণ স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় লাল-সবুজদের।
ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে সুনিল বালের পা থেকে।
এবছর অংশ নেয়নি ভারত। আর তাই তো শক্তিমত্তার বিচারে বাংলাদেশই ছিল ফেবারিট। তবে শুরুটা বেশ ম্যাড়মেড়ে হয়েছে জামাল ভূঁইয়াদের। ক্লাবগুলো খেলোয়াড় না ছাড়ায় অনুশীলন করতে পারেননি জেমি ডে। নেপালে পৌঁছে অনুশীলনের সুযোগ মিলেছে মাত্র দুই দিন। আর তাতে যা হওয়ার তাইই ঘটেছে। প্রথম ম্যাচেই ভুটানের কাছে হার। এরপর মালদ্বীপের সঙ্গে ড্র করে ফাইনাল খেলার স্বপ্ন যেন দু:স্বপ্ন হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের।
তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১-০’র জয় আবারও টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার আশা দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু সেখানে শর্ত ছিল নিজেদের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নেপালকে হারাতে হবে কমপক্ষে তিন গোলের ব্যবধানে। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী দুই দলের পয়েন্ট সমান হলে গোল ব্যবধানে যারা এগিয়ে থাকবে পরের পর্বে খেলবে তারা। ঘরের মাঠে স্বাগতিক নেপালকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারানোটা অসাধ্যকর ছিল বটে। তবে সেখানে আবারও আশার সঞ্চার ঘটেছিল।
সেই আশা ধুলোয় মিলিয়ে যায় নেপালের কাছে হেরে। দেশটির দশরথ স্টেডিয়ামে সন্ধ্যায় হওয়া ম্যাচটি ১-০ ব্যবধানে হেরে যায় বাংলাদেশে।
হলুদ কার্ডের নিষেধাজ্ঞায় ম্যাচে বিপলু ও সুফিলকে ছাড়াই মাঠে নেমে আধিপত্য নিয়ে খেলছিল বাংলাদেশ। জয়ের জন্য গোলমুখে যেন আক্রমণের পর আক্রমণ সাজিয়ে চলছিল জামাল ভূঁইয়ারা। নেপালের দরকার ছিল একটা ড্র। না হারলেই চলে অবস্থা। হঠাৎ এক ঝড়ে এলোমেলো হয়ে যায় লাল-সবুজরা।
সুজল শ্রেষ্ঠের পাস থেকে ডান পায়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়ায় সুনিল। লিড ধরে ম্যাচটা আরও কঠিন করে তোলে নেপাল। ওই এক গোল ছাড়া বলার মতো কোন আক্রমণ করতে পারেনি স্বাগতিকরা। এদিকে গোল শোধে উঠেপড়ে লাগে বাংলাদেশ।
কর্নারের পর কর্নার পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। সঙ্গে সেট পিস থেকেও অনেক সুযোগ এসেছেও। প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে থেকে আর দ্বিতীয়ার্ধেও দারুণ চাপ অব্যাহত রাখে জামাল ভূঁইয়ারা। আধিপত্য বজায় রেখে অসংখ্য সুযোগ তৈরি করে ফুটবলাররা। সেগুলো যেন জাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছিল না লাল-সবুজরা।
৬১ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে ডি বক্সের ভেতরে দারুণভাবে লব করে বলটা ইব্রাহিমের পায়ে এগিয়ে দেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। বক্সের ভেতরে বলটা জুতসইভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রক্ষণভাগের ফুটবলারকে ওয়ান টু ওয়ানে বিটও করেছিলেন। কিন্তু অনেকটা ফাঁকা পোস্টে ঠিকমতো শটটাই নিতে না পারায় বলটা একেবারে বারের কান ঘেষে বাইরে চলে যায়। আরেকবার হতাশ হয় দেশের ফুটবল সমর্থকরা।
চাপ অব্যাহত রেখে ৯৪ মিনিটে দারুণ সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। এবারও হতাশ হতে হয় ফিনিশিংয়ের অভাবে। ইব্রাহিম প্রায় একইরকমভাবেই ব্যর্থ হন। ডি বক্সের ভেতরে পেয়ে বলটা ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় আরেকটি হতাশার জন্ম হয়।
ম্যাচজুড়ে অবশ্য নেপালের ফুটবলারদের সময় নষ্ট করার প্রবণতা দেখা যায়। ম্যাচের মিনিট দুয়েক বাকী তখনও। উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে ফাউল করে বসেন জামাল ভূঁইয়া। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে লাল কার্ড নিয়ে ১০ জনে পরিণত হয় বাংলাদেশ। ওই ব্যবধানেই হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে জেমির শিষ্যরা।
পয়েন্ট টেবিলে তিনে থেকে ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।