ড্রয়ে আশা টিকে থাকলো শেখ জামাল ও রহমতগঞ্জের
২২ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৮:৪৬
ঢাকা: টিভিএস ফেডারেশন কাপে প্রথম ম্যাচে সাইফকে রুখে দেয়া রহমতগঞ্জ এমএফসির সামনে সমীকরণটা ছিল এমন, কোয়ার্টার ফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে দ্বিতীয় ম্যাচে পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হবে। নিজেদের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে তিনবারের ফেডারেশন কাপের শিরোপাজয়ী হ্যাভিওয়েট শেখ জামালকেও রুখে দিয়েছে পুরান ঢাকার দলটি। শেষ পর্যন্ত পয়েন্টের স্বস্থি নিয়ে মাঠ ছেড়েছে সাঈদ গোলাম জিলানীর শিষ্যরা।
দুই ড্রয়ে টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ থাকছে রহতমগঞ্জের। অন্যদিকে প্রায় আড়াই মাসের অনুশীলন প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমে প্রথম ম্যাচে হোঁচট খেলেও নকআউট পর্বে পা রাখার সুযোগ থাকছে শফিকুল ইসলাম মানিকের দলের।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ হাড়কাপা শীতের মধ্যেও দারুণ ফুটবল উপহার দিয়েছে দু’দল। কাগজে-কলমে ফেভারিট তকমা নিয়ে মাঠে নেমে আজ আধিপত্য বিরাজ করে খেলেছে শেখ জামাল। আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের দারুণ ফুটবল প্রদর্শন করতে দেখা গেছে ধানমন্ডি জায়ান্ট আর পুরান ঢাকার দলটির।
আধিপত্য বজায় দারুণ কিছু সুযোগ তৈরি করে শেখ জামাল। ৩৮ মিনিট সলোমন কিংয়ের দূরপাল্লার শট বার ঘেষে বাইরে চলে গেলে হতাশ হলুদ-নীল শিবিরদের। ফিনিশিংয়ের অভাব ম্যাচের প্রথমার্ধকে রূপ দেয় গোলশূন্যে।
দ্বিতীয়ার্ধে নেমে এবার যেন তেতে উঠে রহমতগঞ্জ। শেখ জামালকে অনেকবারই চমকে দেয় পুরান ঢাকার দলটি। গোছানো ফুটবলে দারুণ কিছু সুযোগও তৈরি করে দ্বিতীয়ার্ধ থেকে। তার একটি ৫২ মিনিটে। কাউন্টার এটাকে পেনালটি বক্সের ভেতর থেকে রহমতগঞ্জের তুয়ারেভ আকবিরের শট রুখে দেয় শেখ জামালের গোলরক্ষক জিয়াউর রহমান জিয়া। তার নয় মিনিট পর আনেকটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে রহমতগঞ্জ। এবার মিডফিল্ডার আরাফাতের শট কর্নারের বিনিময়ে ফিরিয়ে দেন জিয়া।
অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি শেখ জামালের। সেই কর্নার থেকে গোল করে ম্যাচের লিড নিয়ে নেয় রহমতগঞ্জ। নাহিদের কর্নার থেকে বল ডি বক্সের ভেতরে জটলায় ঘুরপাক করতে থাকে। ঠিকমতো বল বিপদমুক্ত না করতে পারায় সেখান থেকে বলটাকে কোণাকুণি শটে জালে জড়ান ডিফেন্ডার কামারা ইউনৌসা।
পিছিয়ে পরে অবশ্য ম্যাচে ফিরতেও খুব দেরি করেনি শেখ জামাল। ৭২ মিনিটে বদলি হিসেবে নামা মোজাম্মেলের হোসেইন নিরার পাস থেকে বল দারুণভাবে কাট করে বাঁ পায়ে ডি বক্সের ভেতর থেকে জোরালো শটে বল মুহূর্তের মধ্যে জালে জড়ান নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ওসাইগি মানডে। সমতায় ফেরে ধানমন্ডির জায়ান্টরা।
এরপরে আর কোন গোলের দেখা পায়নি দু’দল। ১-১ ব্যবধানে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয়। এতে অবশ্য আন্ডারডগ হিসেবে টুর্নামেন্টে নামা রহমতগঞ্জই চার পয়েন্ট নিয়ে আপাতত সি গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল। ২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে শেখ জামাল। একই পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে সাইফ তিন নম্বরে।
দুই ম্যাচই পয়েন্ট পেয়ে অবশ্য খুশি রহমতগঞ্জের কোচ জিলানী, ‘ওভারল আমাদের ম্যাচটা ডু আর ডাই ছিল। পয়েন্ট পাওয়া দরকার ছিল। জয় আশা করেছিলাম। ছেলেরা চেষ্টা করেছে। তিন সপ্তাহের প্রাকটিসে ভাল খেলেছে। আরও ভাল করতে হবে।’
এদিকো প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট খুইয়ে দুশ্চিন্তা দেখছেন না শেখ জামালের কোচ মানিক, ‘প্রথম ম্যাচ। ইনজুরি টুকিটাকি ছিল। রহমতগঞ্জের ডু আর ডাই ম্যাচ ছিল। ওদের শতভাগ দেয়ার প্রবণতা ছিল। প্রথম ম্যাচ, টেম্পারেচার সব মিলিয়ে কঠিন ম্যাচ ছিল। সন্তুষ্ট। নেক্সড ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি।’
শেষ ম্যাচটা অনেক সমীকরণের একটা ম্যাচে পরিণত হতে যাচ্ছে। সহজ হিসেব বলছে ২৭ ডিসেম্বরে সাইফ-শেখ জামালের ম্যাচটা জয়ে মীমাংসা হয় তাহলেই সহজ সমীকরণে কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে দুটি দল।
ফেডারেশন কাপ রহমতগঞ্জ এমএফসি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব