আজ যেন রানের নহর বইছিলো তার ব্যাট থেকে। প্রতিপক্ষের বোলাররা হয়ে উঠেছিলেন নস্যি। যে লেংথেই বল পেয়েছেন, হাঁকিয়েছেন। কখনো তা সীমানা গড়িয়ে বাইরে আছড়ে পড়েছে কখনো বা বাতাসে ভেসে। পাগলাটে ব্যাটে তছনছ করে দিয়েছেন রাজশাহী রয়্যালসের বোলিং লাইন আপ। এই বুঝি ম্যাচ বেরিয়ে গেল! ম্যাচের শেষ বলটি পর্যন্ত এমন দুর্ভাবনায় ভাঁজ ফেলে দিয়েছেন আন্দ্রে রাসেলদের কপালে। ওভার শেষ হয়ে গিয়েছিল বিধায় শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে জয় উপহার দিয়ে মাঠ ছাড়া হয়নি। বলছিলাম সৌম্য সরকারের কথা।
১৮৩.৩৩ স্ট্রাইক রেটে ৪৮ বলে অপরাজিত ছিলেন ৮৮ রানে। তার এই নান্দনিক কখনো ক্রিজের অপর প্রান্তে ও কখনো ডাগ আউটে থেকে উপভোগ করেছেন সতীর্থ অধিনায়ক ডেভিড মালান। আর তাই তাকে আখ্যা দিলেন ফ্যান্টাসটিক বিশেষণে।
অথচ বঙ্গবন্ধু বিপিএলের প্রথম ৫ ম্যাচে ব্যাট হাতে স্বরুপে উদ্ভাসিত হয়ে উঠতে পারেননি লাল সবুজের এই ওপেনার। তবে ব্যাটিংটা ছান্দসিক না হলেও বোলিংটা করেছেন দারুণ। প্রায় প্রতি ম্যাচেই উইকেটের দেখা পেয়েছেন (৯টি)। কিন্তু ষষ্ঠ ম্যাচে খোলশ ছেড়ে বেড়িয়ে এলেন প্যারিস্কোপ শটসের এই জনক। ৩৬০ ডিগ্রী ব্যাটে বিপিএলে ব্যক্তিগত প্রথম ফিফটিতো করলেনই, হাতছানি দিচ্ছিলেন শতকেরও। তাইতো অধিনায়কের এমন স্তুতির ঝর্নাধারা।
‘সৌম্য আজ ফ্যান্টাসটিক খেলেছে। রাজশাহী আমাদের যে লক্ষ্য দিয়েছিল তাতে এমন ব্যাটিং অপরিহার্য্য হয়ে উঠেছিল। ও সামনে থেকে হাল ধরেছে। ওর হিটগুলো ছিল অসাধারণ। সত্যি বলতে আমাদের প্রথম দিকের ব্যাটসম্যানরা আসল কাজটি করতে পারেনি। শুরু থেকে যে ভয়ংকর ব্যাটিং সৌম্য করেছে তাতে মনে হয়েছে ম্যাচটি ও একাই বদলে দেবে।’
সৌম্যকে প্রশংসা বাক্যে ভাসালেও দলের টপ অর্ডারকে ঠিকই এক হাত নিয়েছেন কুমিল্লার এই ইংলিশ দলপতি। জয়ের জন্য ১৯১ রানের লক্ষ্যটি মোটেও মামুলি ছিল না। যা এবারের বিপিএলে মিরপুরে সর্বোচ্চ। অথচ কুমিল্লার দুই ওপেনার রবিউল ইসলাম রবি ও ভ্যানজিল দলকে দিতে পারলেন মাত্র ২২ রান। পারেননি তিনে নামা খোদ মালানও। তাতে সাড়ে সর্বনাশও যা হবার হল। চারে নামা সৌম্যর ৮৮, সাব্বির রহমানের ২৩ বলে ২৫ ও ডেভিড ওয়াইজের ৬ বলে ১৬ রানের ঝড়ো ইনিংসে ২০ ওভারে ৪ উইকেটের খরচায় ১৭৫ রানের সংগ্রহ পেল কুমিল্লা। ১৫ রানের জয়ে মাঠ ছাড়ল রাজশাহী।
শেষ চারে খেলতে সামনের ম্যাচগুলোতে এই ভুলের পুনরাবৃত্তি তিনি আর চাইছেন না। ‘মাচ জিততে হলে আমাদের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হাল ধরতে হবে।’