কাকার সতীর্থের জোড়া গোলে সাইফকে হারিয়ে সেমিতে পুলিশ
৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৮:৪২
ঢাকা: চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো ঘরোয়া ফুটবলে সর্বোচ্চ পর্যায়ে এসে দারুণ সাফল্য পাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ এফসি। প্রথম আসরে ফেডারেশন কাপে চমক দেখিয়েছে নিকোলা ভিটোরোভিচের শিষ্যরা। হ্যাভিওয়েট সাইফকে বিদায় করে প্রথমবারের মতো সেমি ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে পুলিশ। আর গোল মিসের খেসারত দিতে হয়েছে সাইফকে। হ্যাভিওয়েট দুই আবাহনী, শেখ জামাল, শেখ রাসেলের পর আরেক হ্যাভিওয়েট দল সাইফ বিদায় নিয়েছে টুর্নামেন্ট থেকে।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে চলতি টুর্নামেন্টের সেমি ফাইনালে পা রেখেছে বাংলাদেশ পুলিশ।
ফল যদিও বলছে ভালো ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে পুলিশ। কিন্তু পুরো ম্যাচের লাগাম ছিল সাইফের হাতে। আধিপত্য বজায় রেখে আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বারবার হতাশ হতে হয়েছে সাইফকে।
এই যেমন ১৭ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার সেট পিসের শটটা দুর্দান্তভাবে সেভ দেয় পুলিশের গোলরক্ষক আরিফুজ্জামান হিমেল। দুই মিনিট পর পুলিশের ডিফেন্ডারের ভুলে দারুণ সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হয় সাইফ।
২১ মিনিটে মন্টে কার্লো ফরোয়ার্ড লুকা আরেকটি সুযোগ নষ্ট করলে হতাশার পর হতাশা জন্ম নেয় সাইফ সমর্থকদের।
এদিকে প্রথম সুযোগটাই কাজে লাগায় পুলিশ। ৩১ মিনিটে এমএস বাবলুর সাইড ভলিতে লিড নেয় পুলিশ। পিছিয়ে পড়া সাইফকে বড় ধাক্কাটাই প্রথমার্ধেই দিয়ে দেয় নীলরা। অতিরিক্ত সময়ে কাকার সতীর্থ সিডনি রিভেরার গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে পুলিশ (২-০)।
প্রথমার্ধে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধও শুরু করে পুলিশ গোল দিয়ে। ৫২ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে লুকার পাস। সেই পাস থেকে ডি বক্সের সিক্স ইয়ার্ডের ভেতরে থাকা সিডনি গোলপোস্টের ডান কোণা দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দলের তৃতীয় ও নিজের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেন। আমেরিকান এই ফুটবলার গ্রুপ পর্বেও আরামবাগের বিপক্ষে জোড়া গোল করেছিলেন। এই আসরে তার মোট গোল চারটি। এ যাবৎ টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোল তার দখলে।
এদিকে পিছিয়ে থেকে গোলের সন্ধানে হন্ন হয়ে ওঠা সাইফও ব্যবধান কমিয়ে ফেলে ৫৫ মিনিটে। ফ্রি-কিক থেকে দারুণ একটা গোল করেন সাইফের মুরোলিমজন আখমেদভ (৩-১)। সেটা অবশ্য সমতায় ফেরার জন্য যথেষ্ট ছিল না। পরের ৩৫ মিনিটে বহু সহজ সুযোগ তৈরি করেও ব্যবধান কমাতে ব্যর্থ হয় সাইফ।
৬৯ মিনিটে জাহাঙ্গীর এরগাসেভ দারুণ আরেকটি সুযোগ নষ্ট করেন। একা গোলরক্ষককে পেয়েও বল বারে মেরে দেন সাইফের এই ফরোয়ার্ড। আরেকবার হতাশ হয় দলের সমর্থকরা। ৭৬ মিনিটে ডি বক্সের সামনে থেকে ভলিতে বারের উপর দিয়ে বল মেরে দেন দেইনের কর্দোবা।
৮১ মিনিটে ব্যবধান কমানোর সবচেয়ে সহজ সুযোগটাও হাতছাড়া করে সাইফ। এবারও দেইনের কর্দোবার মিস। জাহাঙ্গীর দারুণভাবে ড্রিবলিং করে বল নিয়ে ঢুকে যান ডি বক্সের ভেতরে। গোলবারের সামনে থেকে একেবারে ফাঁকায় থাকা কর্দোবার সামনে বল ঠেলে দেন। ডি বক্সের সিক্স ইয়ার্ড থেকে বল বারের উপর দিয়ে মেরে দেন কলম্বিয়ান এই ফুটবলার।
যার ফলে হার নিয়ে টুর্নামেন্টকে বিদায় বলতে হয় জামাল ভূঁইয়ার সাইফকে। আর ভাল ব্যবধানের জয় নিয়ে সেমি নিশ্চিত করে ফেলে পুলিশ।
এ জয়ে খুশি নিকোলা ভিটোরোভিচ বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমরা জানতাম ম্যাচটা কঠিন হবে। লোকাল প্লেয়াররা ভালো ওদের। অভিজ্ঞ ভালো ফুটবলার আছে। প্রথমবারের মতো ইতিহাসের অংশ হতে পারে ভাল লাগছে। আমি খেলোয়াড়দের বলেছি, আমরা ম্যাচটা জিতবো। তোমরা ভালো খেলবে। সেটাই করে দেখিয়েছে আমার দল।’
এমন হারের পেছনে খেলোয়াড়দের রিলাক্সিং হয়ে খেলতে যাওয়াকে কারণ হিসেবে দেখছেন মোহাম্মদ নিজাম, ‘তিনটা গোল মিস করেছি আমরা। অপোনেন্টদের শ্রদ্ধা করা উচিৎ। বেশি রিলাক্সিং ছিল ফুটবলাররা। স্কোর খুবই দরকার ছিল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি প্রেসার থাকায়।’