সেমির লড়াইয়ে মোহামেডানের ‘হাইপ্রেসিং’ ও রহমতগঞ্জের ‘রক্ষণ’
১ জানুয়ারি ২০২০ ২২:০২
ঢাকা: অনেকটা আন্ডারডগ হিসেবে টুর্নামেন্টে নামে রহমতগঞ্জ এমএফসি ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। প্রতিবারের ন্যায় এবারও কম বাজেটের দল হিসেবে ফেডারেশন কাপের আসরে নেমেছে রহমতগঞ্জ। পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে রক্ষণের দারুণ প্রদর্শন করে জায়ান্টদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছে পুরান ঢাকা দলটি। অন্যদিকে ক্যাসিনো ঝড়ের পর নড়বড়ে তরুণ দল নিয়ে আসরে নেমেছে মোহামেডান। টুর্নামেন্টে নামার পরই সেই নড়বড়ে দলটা হয়ে উঠেছে আরও ভয়ংকর। টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো পর্যবেক্ষণ করলে বলা যায় সবচেয়ে ভয়ংকর ‘হাইপ্রেসিং’ মোহামেডান দলেরই দখলে।
সেই দুই আন্ডারডগ দল এখন শিরোপার স্বপ্ন দেখছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিকেল চারটায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে নামতে চলেছে সেমি ফাইনালের লড়াইয়ে।
বলা চলে এই ম্যাচে মূলত পরীক্ষাটা হবে কৌশলের। একদিকে মোহামেডানের হাইপ্রেসিং অন্যদিকে রহমতগঞ্জের রক্ষণ দুর্গ।
এই আসরে এর আগে গ্রুপ পর্বে কোন জয় না পেয়েও কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয়া একমাত্র দল রহমতগঞ্জ। গ্রুপ পর্বে দুই হ্যাভিয়েট সাইফ ও শেখ জামালকে রুখে দিয়ে শেষ আট নিশ্চিত করেছে পুরান ঢাকার দলটি। এই গ্রুপ থেকেই শেখ জামালকে বিদায় নিতে হয়েছে।
জায়ান্ট কিলার হিসেবে আখ্যা দেয়াই যেতে পারে কম বাজেটের এই দলকে। গ্রুপে আন্ডারডগ হিসেবে খেলে শেষ আটে যাওয়ার পথে সাইফকে ০-০ ব্যবধানে রুখে দিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেও শেখ জামালকে ১-১ ব্যবধানে থামিয়ে দেয় রহমতগঞ্জ।
অন্যদিকে দুর্দান্ত ফর্মে ছিল ঢাকা আবাহনীও। শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে বিস্ফোরক হিসেবেই আবির্ভূত হয়েছে ধানমন্ডির জায়ান্টরা। বাংলাদেশ পুলিশকে ৪-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেও আরামবাগকে উড়িয়ে দিয়েছে ৫-১ ব্যবধানে।
ফেভারিট হিসেবে নামলেও রহমতগঞ্জের রক্ষণভাগে ভালোই ভুগতে হয়েছে ঢাকা আবাহনীকে। কোয়ার্টার ফাইনালে পুরো ম্যাচে আবাহনীকে রুখে ম্যাচটাকে টাইব্রেকার পর্যন্ত ঠেলে নিয়ে সেই ম্যাচ পকেটেও পুড়েছে রহমতগঞ্জ জমাট রক্ষণ দিয়ে।
এদিকে ক্যাসিনো কাণ্ডের পর ভাঙাচোরা দল গঠন করে যাদুর কাঠির ছোঁয়ায় বদলে গেছে ঐতিহ্যবাহী দলটি। সিন লেনের কোচিংয়ে দলটি যে চার বছর পর ফেডারেশন কাপের সেমিতে। সেমিতে আসতে পেরুতে হয়েছে বিশাল লম্বা পথ। সেটা সম্ভব হয়েছে লিনের হাই প্রেসিং কৌশল মাঠে খাটিয়েই।
কোয়ার্টার ফাইনালটাই উদাহরণ হিসেবে নেয়া যায়। অপরাজিত চট্টগ্রাম আবাহনীকে হাইপ্রেসিং দিয়েই নাকানিচুবানি খাইয়েছে মোহামেডান। দুটি গোলও আদায় করে নিয়েছে প্রেসিং দিয়ে।
তাই ম্যাচটা যে দুই দলের জন্য বড় পরীক্ষা আর উত্তেজনার হচ্ছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেমিতে নিজেদের সেরাটাই নিংরে দিতে চায় রহমতগঞ্জের কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানী, ‘আমাদের হারানোর কিছু নেই। পাওয়ার অনেক কিছু আছে। আমরা এখন সেই পাওয়াটাকে দীর্ঘায়িত করতে চাই। মোহামেডান দল হিসেবে এবার দারুণ করছে। তাদের কৌশল নিয়ে কাজ করেছি। তাদের হারিয়ে স্বপ্নপূরণ করতে চাই।’
রহমতগঞ্জকে সমীহ করে মোহামেডানের কোচ সিন লেন জানান, ‘আমরা জানি রহমতগঞ্জ খুব কঠিন একটা দল। তারা এখনও পর্যন্ত অপরাজিত। কোনও ম্যাচই হারেনি তারা। আমরা ফাইনালে যেতে হলে অবশ্যই আমাদের সেরাটাই দিতে হবে। সুখের খবর হলো আমাদের সব প্লেয়ারই ফিট আছে। আশা করছি প্লেয়ার প্রেসার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেরাটাই দিবে।