অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে স্বর্ণ পেলেন বাংলাদেশের শাহবাজ
১২ জানুয়ারি ২০২০ ২২:১৩
ঢাকা: আন্তর্জাতিক হকি অঙ্গন থেকে সুখবর নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের হকি আম্পায়ার শাহবাজ আলী। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ‘অস্ট্রেলিয়ান ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপ অ:২১ মেন্স আম্পায়ার অব দ্য গোল্ড ফাইনাল’ পুরস্কার পেয়েছেন দেশের এই প্রথিতযশা আম্পায়ার।
অস্ট্রেলিয়ায় সদ্য হয়ে যাওয়া ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপে আম্পায়ার হিসেবে গ্রুপপর্ব, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন শাহবাজ আলী। টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত সাফল্য দেখিয়ে নজর কাড়ায় তাকে ‘আম্পায়ার অব দ্য গোল্ড ফাইনাল’ পুরস্কার দিয়েছে আয়োজক অস্ট্রেলিয়া।
দেশের হয়ে বিদেশের মাটিতে এমন অর্জনে খুশি শাহবাজ আলী সারাবাংলাকে জানান, ‘বাংলাদেলের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। প্রতিটি ম্যাচেই আয়োজকরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এমন অর্জনে ভাল লাগছে।’
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চার বছর হলেও ঘরোয়া লিগে ১২ বছর বয়স থকে বাঁশি বাজানোর দায়িত্ব পালন করে আসছেন শাহবাজ আলী। প্রিমিয়ার লিগে খেলতে না পারলেও আম্পায়ারিংয়ের পাশাপাশি প্রথম লিগ খেলে নিজেকে শানিয়ে নিয়েছেন। এরপর ২০১৫ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক আউটডোর হকি টুর্নামেন্টে আম্পায়ারিংয়ে অভিষেক হয় তার। ২০১৯ সালে এসে ইনডোর হকিতেও অভিষেক হয়েছে শাহবাজের। তিনি দেশের একমাত্র আম্পায়ার যার হকির দুই ফরম্যাটেই আন্তর্জাতিক প্রাঙ্গনে আম্পায়ারিং করেছেন।
দেশে কোনও ইনডোর হকি স্টেডিয়াম না থাকা সত্বেও হকির নিয়ম বই ও ভিডিও দেখে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন শাহবাজ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুনামও কুড়িয়েছেন অনেকগুলো টুর্নামেন্টে। তবে দেশের এমন বেহাল অবস্থার মধ্যেও নিজেকে প্রস্তুত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার গল্প শোনালেন শাহবাজ, ‘সবশেষ থাইল্যান্ডে ইনডোর এশিয়া কাপে আম্পায়ারিং করি। এরপর এই পাঁচ মাসে নিজেকে ফিট রাখি। এরপর অস্ট্রেলিয়ার আমন্ত্রণ পাই।’
আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে সাফল্যের ঝুড়ি বয়ে আনা শাহবাজের কণ্ঠে কষ্টগাঁথা, ‘এখানে হকি নিয়ে অনেক উন্মাদনা। আমাদের দেশে ঠিকমতো টুর্নামেন্টই হয় না। এখানে আমাদের কোনও আর্থিক নিশ্চয়তা নেই। পেশা হিসেবে আম্পায়ারিং চালিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন বাস্তবতা। খেলোয়াড়দের তাওতো বিভিন্ন ফোর্সে চাকরি আছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক আম্পায়াররা কিভাবে চলবে? তরুণ আম্পায়াররা কি দেখে এই পেশা বেছে নিবে?’
এমন অচলাবস্থার সমাধান করতে হবে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনকে বলে মনে করেন শাহবাজ, ‘দেশের হকি অভিভাবক হিসেবে বাহফেকে এই বিষয়গুলো নজরে আনতে হবে। অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে হবে।’ আম্পায়ারিংয়ে আগ্রহীদের নিয়ে কোচিং কোর্স করানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আমাদের পটেনশিয়াল আছে। কিন্তু আমাদের ঘরোয়া হকি নিয়মিত না। এখানে কাজ করতে হবে বাহফেকেই।’
‘অন্তত আমি চাই আন্তর্জাতিক আম্পায়ারদের আর্থিক নিশ্চয়তার বিষয়টি দেখবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। আমাদের প্রেসিডেন্টকেও (বাহফে) আম্পায়ারিংয়ের দিকে ফোকাস দিতে হবে। দেশের জন্য গর্বের জায়গা সবসময় সবার উপরে থাকে এবং থাকবে।’ যোগ করেন ২৭ বছর বয়সী এই আম্পায়ার।
আগামী ১৪ জানুয়ারি অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরবেন শাহবাজ আলী।