ছয়বারের যাতনা ভোলার পালা মুশফিকের
১৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৯:৩৪
ব্যাটে তাঁর রানের ফল্গুধারা বইছে। এই মুহুর্তে দেশের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান তিনি। ১৩ ম্যাচে ৭৮.৩৩ গড়ে ৪৭০ রান নিয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় আছেন সর্বাগ্রে। অধিনায়ক হিসেবে তো আরো ক্ষুরধার। সামনে থেকে নিপুণ নেতৃত্বে খুলনা টাইগার্সকে সবার আগে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের ফাইনালে তুলেছেন। বলা হচ্ছিল মুশফিকুর রহিমের কথা।
ক্যারিয়ারে এই প্রথম বিপিএলের ফাইনাল খেলতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা এই ব্যাটসম্যান। বিগত ছয় আসরে যা তার পক্ষে সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি। অধরা রয়ে গিয়েছিল বিপিএলের শিরোপা। আর বঙ্গবন্ধু বিপিএলের এই ফাইনালই তাকে দিচ্ছে শিরোপা যাতনা ভোলার হাতছানি। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) মহারণের লড়াইয়ে রাজশাহী রয়্যালসের হারের কফিনে পেরেক পুঁতে দিতে পারলেই ব্যাস। ছয়বারের শিরোপা যাতনা ভুলতে পারবেন লাল সবুজের সাবেক এই দলপতি।
অথচ অধিনায়ক হিসেবে জাতীয় দলের সতীর্থ মাশরাফি ইতোমধ্যেই তা চারবার শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছেন। অপর দুই সতীর্থ সাকিব আল হাসান ও ইমরুল কায়েসও একবার করে। ভাগ্য দেবীর প্রশন্ন দৃষ্টি থাকলে মাত্র ২৪ ঘণ্টার কিছু সময় পরেই সেই কাতারে সামিল হবেন মুশফিক।
কিন্তু তিনি যে আগেই চাপ নিয়ে নিয়েছেন! চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী ফাইনালের আগে সংবাদ সম্মেলনে দুই ফাইনালিসস্ট দলের অধিনায়কের আসার কথা থাকলেও তিনি এলেন না! এর পেছনে তার যুক্তি ছিলো ‘মিডিয়ার সঙ্গে কথা বললেই চাপ বেড়ে যাবে।‘
পক্ষান্তরে প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল কিন্তু এমন চাপ অনুভব করছেন না। তিনি ঠিকই এসেছেন এবং কথাও বলেছেন।
যা হোক, মুশফিককে না হয় তার দর্শন নিয়েই থাকতে দেওয়া যাক। আখেরে সেটা যদি মঙ্গলজনক হয় তাতে ক্ষতি কি? কিন্তু এটাও তো সত্যি যে, শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে সেই চাপ তাকে জয় করতেই হবে। এক্ষেত্রে সতীর্থদের পাশাপাশি দায়িত্বটা কিস্তু তাকেও নিতে হবে। সেক্ষেত্রে অবশ্য খুব বেশি কিছু করার প্রয়োজন নেই। প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচের রণ কৌশল অবলম্বন করলেই হবে।
আপনাদের মনে আছে নিশ্চয়ই গেল ১৩ জানুয়ারির সেই ম্যাচে এই রাজশাহী রয়্যালসকেই স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছিল মুশফিকের খুলনা। ব্যাট হাতে নাজমুল হোসেন শান্তর একার ব্যাটে ১৫৮ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল রুপসা পাড়ের দলটি। রান তাড়ায় নেমে মোহাম্মদ আমির, মেহেদি হাসান মিরাজ ও রবি ফ্রাইলিংকের বলে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল পদ্মা পাড়ের দলটি। ফাইনালের মহারণে নিশ্চয়ই তার পুনরাবৃত্তি চাইবেন অধিনায়ক মুশফিক।
পুনরাবৃত্তি চাইবে আন্দ্রে রাসেলের রাজশাহী রয়্যালসও। তবে সেটা ওই ম্যাচের নয়, দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে হারা ম্যাচও তারা যেভাবে বের করে নিল তাতে মুশফিকদের নির্ভার থাকার সুযোগ একেবারেই থাকছে না।
রাজশাহীর হয়ে ব্যাট হাতে বিধ্বংসী কেবল অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেলই নন; টাইগারদের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লিটন দাসও টুর্নামেন্ট জুড়ে দেখিয়েছেন তাঁর ব্যাটের জাদু। তবে তিনি একা নন; সঙ্গ দিয়েছেন আর এক তরুণ টাইগার আফিফ হোসেন। চলতি বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় অবস্থান করেছেন ছয় নম্বরে, নামের পাশে আছে ১৪ ম্যাচে ৪৩০ রান আর ১৩৮ দশমিক ২৬ স্ট্রাইক রেটে তিনটি অর্ধশতক। আর লিটনের সঙ্গী আফিফ হোসেন ১৩১ দশমিক ৩৮ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৩৬০ রান। অর্থাৎ নিজেদের দিনে ভয়ংকর এই জুটিই হতে পারে মুশফিকুর রহিমের স্বপ্ন ভঙ্গের প্রধান কারণ।
শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ক্ল্যাশ অব দ্য টাইটান্সের তকমা পাওয়া ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়।
আন্দ্রে রাসেল খুলনা টাইগার্স বনাম রাজশাহী রয়্যালস ফাইনাল বঙ্গবন্ধু বিপিএল ২০১৯ মুশফিকুর রহিম