বাংলাদেশকে পাঁচ উইকেটে হারাল পাকিস্তান
২৪ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:৩৫
বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাঁচ উইকেটের জয় পেয়েছে পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তানের সামনে ১৪২ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ৫৮ রানে অপরাজিত থেকে।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ করার আগেই শফিউলের শিকার হয়ে ফেরেন অধিনায়ক বাবর আজম। এরপর উইকেটে আসেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজ। আহসান আলীর সঙ্গে জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে নেন তিনি। তবে পঞ্চম ওভারের শেষ বলে মোস্তাফিজুর রহমানের শিকার হয়ে হাফিজ (১৭) ফিরলে ভাঙে ৩৫ রানের জুটি।
পাওয়ার প্লে’তে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া পাকিস্তানের হাল ধরেন অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক এবং অভিষিক্ত আহসান আলী। এই দুইয়ের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। তবে ইনিংসের ১২তম ওভারে আহসান আলীকে ব্যক্তিগত ৩৬ রানে ফেরান আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এর আগে মালিক আর আহসান মিলে গড়েন ৪৬ রানের জুটি।
আহসান ফিরলে উইকেটে আসেন ইফতেখার আহমেদ। তার সঙ্গে নতুন করে জুটি গড়েন উইকেটের এক প্রান্ত আগলে রাখা শোয়েব মালিক। ইফতেখারের সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি গড়েন মালিক। এবার জুটি ভাঙার দায়িত্ব নেন শফিউল। ১৬ রানে ইফতেখারকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন শফিউল। পাকিস্তানের দলীয় ১১৭ রানে ফেরেন এই ব্যাটসম্যান। শেষ দিকে ইমাদ ওয়াসিমের উইকেট তুলে নিলে কেবল হারের ব্যবধানটাই কমাতে পারেন আল-আমিন হোসেন।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ দু’টি উইকেট নেন শফিউল ইসলাম। ৪ ওভারে ২৭ রান খরচ করেন শফিউল। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন এবং আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে দেন ৪০ রান। আল-আমিন ৪ ওভারে খরচ করেন ১৮ আর বিপ্লব দেন ২৮ রান।
এর আগে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। উদ্বোধনী জুটিতে তামিম ইকবাল এবং মোহাম্মদ নাইম সাবধানী সূচনা করেন। দু’জনে মিলে গড়েন ৭১ রানের জুটি।
ব্যক্তিগত ৩৯ রানে রান আউটের ফাঁদে পড়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় তামিমকে। আর তাতেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। তামিমের ফেরার পর উইকেটে আসেন লিটন দাস। নাইমকে সঙ্গী করে সচল রাখেন রানের চাকা। ইনিংসের ১৫তম ওভারে এই দুই সেট ব্যাটসম্যান পরপর আউট হলে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় সফরকারীরা।
১৫তম ওভারের ৩য় বলে রান আউট হয়ে ফেরেন লিটন দাস (১২)। ঠিক পরের বলেই শাদাব খানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ইফতেখার আহমেদের তালুবন্দি হন নাইম। প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার আগে নাইম করেন দলীয় সর্বোচ্চ ৪৩ রান। এরপর আফিফকে সঙ্গী করে দলীয় রান শতক পার করেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
তবে ইনিংস বেশি বড় করতে পারেননি আফিফ। হ্যারিস রউফের বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ১০ বলে ৯ রান করেন তিনি। এরপর উইকেটে আসেন সৌম্য সরকার। বড় ইনিংসের দেখা পাননি তিনিও। ১৯তম ওভারে শাহিন শাহ্ আফ্রিদির বলে বোল্ড হওয়ার আগে নামের পাশে যোগ করেন মাত্র ৭ রান। তিনি ফেরেন দলীয় ১২৮ রানে।
শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক রিয়াদের ব্যাটে ভর করে ১৪১ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অপরাজিত থাকেন ১৪ বলে ১৯ রান। আর ৩ বলে ৫ রান করেন মোহাম্মদ মিঠুন। পাকিস্তানের হয়ে একটি করে উইকেট তুলে নেন হ্যারিস রউফ, শাদাব খান এবং শাহিন শাহ্ আফ্রিদি।
দীর্ঘ প্রায় এক যুগ পর পাকিস্তানের মাটিতে সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। তিন ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই সিরিজের প্রথম ধাপে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। একই ভেন্যুতে ২৫ এবং ২৭ জানুয়ারি মাঠে গড়াবে সিরিজের বাকি দুইটি টি-টোয়েন্টি। সিরিজ শেষে আগামী ২৮ জানুয়ারি দেশে ফিরবে টিম বাংলাদেশ।