Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জয়ের রেকর্ড ধরে রাখতে চায় আবাহনী, ছেড়ে দেবে না মাজিয়া


৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৬:০১

ঢাকা: গত এএফসি কাপে ঢাকা আবাহনী যেন অন্য এক ফুটবল উপহার দিয়েছিল। ঘরের মাঠে একটা ম্যাচও হারেনি আকাশী-নীলরা। ঘরের মাঠে ভারতের হ্যাভিয়েট চেন্নাইন এফসিকে হারিয়েছে। মিনার্ভা পাঞ্জাবের সঙ্গে ড্র করেছে। নেপালের মানাং মার্শিয়াংদিকে হারিয়েছিল আবাহনী। ইন্টার জোনাল সেমিতে উত্তর কোরিয়ার দল এপ্রিল ২৪কেও হারিয়েছিল জীবন-বেলফোর্ট-সানডেরা। এবারও ঘরের মাঠে সেই জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় ঢাকা আবাহনী।

বিজ্ঞাপন

প্রথমবারে মতো এএফসি কাপের প্লেঅফে খেলতে হচ্ছে আবাহনীকে। এবার মালদ্বীপের দিবেহি প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন মাজিয়া এস অ্যান্ড আরএসকে হারিয়ে ২০১৭ সালের এএফসি কাপের বদলা নিতে চায় মারিও লেমসের শিষ্যরা।

এএফসি কাপে মালদ্বীপের ক্লাবগুলোর সঙ্গে পেরে ওঠে না ঢাকার শীর্ষ দলগুলো। শুধু মাজিয়া নয়, মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস, নিউ রেডিয়ান্টের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্লাবগুলো এখনও জয়ের মুখ দেখতে পারেনি। হারতে হয়েছে বড় বড় ব্যবধানে। তবে এবার এক অন্য আবাহনীকে দেখবে মাজিয়া এমনটাই প্রত্যাশা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) রানার্স আপদের।

অন্তত দলের কোচ ও ফুটবলারদের মধ্যে মালদ্বীপ ভীতি কাটিয়ে ওঠার আশ্বাস দেখা গেল। এএফসি কাপকে সামনে রেখে তিন সপ্তাহ ধরে অনুশীলন করছে দল। গেল এএফসি কাপের অতীতকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে দলের রক্ষণ, মাঝমাঠ ও আক্রমণে সেই ধার আনতে মরিয়া আবাহনী।

গত এএফসি কাপে দেশের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইন্টার জোনাল সেমি ফাইনাল খেলেছিল ঢাকা আবাহনী। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবার মাজিয়া বাধা ডিঙিয়ে গ্রুপ পর্বে পা রাখতে চায় আবাহনী।

রাখাটা কঠিন নয় আবাহনীর। আবার সহজও বলা যাবে না। এই প্রথমবার এএফসি কাপের প্লেঅফ খেলতে হচ্ছে আবাহনীর। আবার এ মৌসুমে ফেডারেশন কাপে সেমি থেকে বিদায় নিয়ে বড় ধাক্কা এসেছে ক্লাব ডেরায়। সেই ডেরার নতুন মিশন মাজিয়া। এদিকে নিকট অতীত বলছে মাজিয়ার সঙ্গে হোম এবং অ্যাওয়ে দুই ম্যাচেই আবাহনী হেরেছে ২-০ ব্যবধানে। এদিকে মালদ্বীপের দিবেহী প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলে সবার ‍উপরেই আছে মাজিয়া। ২০ ম্যাচে তারা হেরেছে মাত্র একটি ম্যাচ। দেড় সপ্তাহ আগে প্রিমিয়ার লিগ জিতে আসা দলটাও ছেড়ে কথা বলবে না বলে জানিয়েছেন মাজিয়া দলের কোচ ও ফুটবলাররা।

বিজ্ঞাপন

ফেডারেশন কাপে বড় ধাক্কার পর এএফসি কাপের মিশনে অনুশীলনে নামতে হয়েছে আবাহনীকে। মাঝে ইনজুরি সমস্যা ছিল। সেগুলা কাটিয়ে দল এখন চাঙা। দলের প্রস্তুতি নিয়ে জানালেন পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমস, ‘তিন সপ্তাহ ধরে অনুশীলন করছি। জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা এক সপ্তাহ আগে ক্যাম্পে যুক্ত হয়েছে। ইনজুরি থেকে অনেকেই ফিরেছে। ঠিকমতো অনুশীলন চলছে।’

গতবারের থেকে এবারের আবাহনীর স্কোয়াডে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। আগের মৌসুমে রক্ষণভাগের ত্রাতা আফগানি মাশিহ সাইঘানির পরিবর্তে দলে এসেছে ব্রাজিলিয়ান মাইলসন। সঙ্গে তপুর পরিবর্তে দলের রক্ষণে ভরসা অভিজ্ঞ নাসির। রাইটব্যাকে রায়হান আর সাদ আছেন।

মাঝমাঠের পরীক্ষাটাও বড় চ্যালেঞ্জ নিতে হবে আবাহনীকে। দলে এক ঝাঁক মিডফিল্ডার। শেখ রাসেল থেকে আবাহনীতে আসা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার সোহেল রানা, মিডফিল্ডার সোহেল রানা (জুনিয়র), মামুনুল ইসলাম মামুন আছেন। দলের মাঝমাঠের শক্তি বাড়াতে কিরগিজস্তানের বার্নহার্ড এডগার অটো চয়েজে খেলবেন। মামুন আর দুই সোহেলের মধ্যে থেকে এখন দলের একাদশে কে সুযোগ পাবে সেটাই দেখার বিষয়। আর আক্রমণভাগে ত্রয়ী জীবন-সানডে-বেলফোর্ট অটো চয়েজেই খেলবেন।

গত এএফসি কাপে সব মিলে ১৬ বার বল জালে পাঠিয়েছে ঢাকা আবাহনী। খেয়েছে ৮ টি। এবারও গোলের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় গত এএফসি কাপে ৪ গোল করা

দল উজ্জ্বীবিত হয়েই মাঠে নামবে এমন আশা মারিও লেমসের। ৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকেল পাঁচটায় মাজিয়া ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে আবাহনীর প্লেঅফ পর্ব। অ্যাওয়ে ম্যাচ আছে ১২ ফেব্রুয়ারি মালেতে।

দলে গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের পর নতুন অধিনায়কের ভূমিকায় থাকছেন নবীব নেওয়াজ জীবন। দলের সার্বিক অবস্থান নিয়ে জানালেন তিনি, ‘এএফস কাপকে সামনে রেখে অনেকদিন যাবত ট্রেনিং করেছি। গতবারের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই এবারও। আশা করছি ঘরের মাঠে রেকর্ড ক্ষুণ্ণ থাকবে।’

এদিকে ২০১৭ সালে এএফসি কাপে ঢাকা আবাহনীকে মাজিয়া হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ‍দুই ম্যাচেই হারিয়েছিল। এবার মাজিয়ার ডাগআউটে একই কোচ মারিয়ান সেকেলোভস্কি। চেনা প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাল গবেষণা করেই ঢাকায় পা রেখেছে মারিয়ানের দল সেটা কথাতেই বোঝা গেল। কোন ছাড় দিতে চায় না মাজিয়ার এই কোচ,‘আমাদের টার্গেট সবসময় থাকে জেতার। নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে জয় তুলে নেয়া। দুই সপ্তাহ আগে লিগ জিতেছি।’

সেবার যে দলটা আবাহনীকে হারিয়েছিল সেই দলের ছয় ফুটবলার এখন বর্তমান দলে আছে। পরিচিত প্রতিপক্ষকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে ঘরে ফিরতে চায় দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ ইরফান, ‘সবাই ডিটারমাইন্ড ম্যাচ খেলে জেতার জন্য। এখানে জয় নিয়ে গেলে আমাদের হোম ম্যাচেও অ্যাডভানটেজ পাবো।’

এখন দেখার বিষয় কে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে। একদিকে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া আবাহনী। অন্যদিকে উড়ন্ত মাজিয়া জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চায়। সবমিলে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ যে হতে যাচ্ছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরও পড়ুন: এএফসি কাপ: মাজিয়া ‘ভীতি’ কাটানোর আশা আবাহনীর

এএফসি কাপ ২০২০ ঢাকা আবাহনী মাজিয়া এস অ্যান্ড আরসি

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর