অনভিজ্ঞতায়ই ব্যাকফুটে বাংলাদেশ
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৯:৫৭
টেস্ট খেলেতে বাংলাদেশ দল সব শেষ পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল আজ থেকে ১৭ বছর আগে। ২০০৩ সালে স্বাগতিক দেশটির বিপক্ষে খেলেছিল তিন ম্যাচ সিরিজের টেস্ট। এরপর থেকে আজ অবধি দেশটির মাটিতে একটি ম্যাচও খেলেনি লাল সবুজের দল। কাজেই কন্ডিশন সম্পর্কে সফরকারী দলটি একেবারেই অনভিজ্ঞ।
সমস্যার শেষ এখানেই নয়। স্বাগতিক দলটির বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ম্যাচটি খেলতে রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের যে স্কোয়াডটি পাঠানো হয়েছে এদের মধ্যে অভিজ্ঞ বলতে আছেন একমাত্র তামিম ইকবালই। বাকিরা নবাগতই বলা যায়। যা আসন্ন টেস্ট সিরিজে সফরকারী বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
২০০৩ সালে পাকিস্তানে বাংলাদেশ দলের হয়ে যারা খেলেছিলেন এই দলে তার কেউই নেই। ১৭ বছর পেরিয়ে গেছে, অতএব থাকার প্রশ্নও উঠে না। সেটা না হয় না থাকল। কিন্তু বাংলাদেশ দলে টেস্টে অভিজ্ঞ বলতে যারা আছেন তাদের সিংহভাগই স্কোয়াডে নেই। নিষেধাজ্ঞার কারণে নেই সাকিব আল হাসান। পারিবারিক কারণে সিরিজ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় নেই মুশফিকুর রহিম। আর কাফ মাসেলের ইনজুরির কারণে বাদ পড়েছেন আরেক অভিজ্ঞ টপ অর্ডার ইমরুল কায়েস।
অভিজ্ঞতার বিচারে সবেধন নীলমনি বলতে আছেন কেবল তামিম ইকবাল। তিনি একা তো আর পাকিস্তানের ১১ জনের বিপক্ষে লড়তে পারবেন না। সঙ্গত কারণেই সিরিজ শুরুর আগেই দুর্ভাবনায় দিনাতিপাত করছেন নান্নু।
এর বাইরেও আরো দুইটি বিষয় আছে যা নান্নুকে পাকিস্তান সিরিজে কিছুতেই স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। প্রথমটি হল- সাদা পোষাকে বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। সেটা কেমন? চলুন দেখে আসি।
প্রথম ইনিংসে দুইশ বিশ থেকে আড়াইশ, দ্বিতীয় ইনিংসে একশ বিশ করতেই প্রাণ যায় যায় অবস্থা। ব্যাটসম্যানদের টেস্ট মেজাজ বলতে কিছুই নেই, নেই মানসিকতাও। উইকেটে আসা যাওয়াই সার। প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় যাবৎ এসবই বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের নিয়মিত চিত্র হয়ে উঠেছে।
আর দ্বিতীয়টি- সিরিজের আগে কোন প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ। এমনকি পাকিস্তানে গিয়ে পর্যাপ্ত অনুশীলনের সুযোগও পায়নি। মাত্র এক দিনের প্রস্তুতি নিয়েই ম্যাচ খেলতে নেমে যাচ্ছে। কাজেই সিরিজটিতে কিছুতেই আশার আলো দেখতে পরছেন না এই টাইগার প্রধান নির্বাচক।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) হোম অফ ক্রিকেট মিরপুরে তিনি এ কথা জানান।
নান্নু বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে পারফরম্যান্স আপ টু দ্যা মার্কে না। সে হিসেবে পাকিস্তানে যেভাবে দল যাচ্ছে এভাবে কিন্তু পারফরম্যান্সটা পুরো পাওয়া কঠিন। কারণ আমাদের এখনকার খেলোয়াড়দের কিন্তু ওখানে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। সেক্ষেত্রে একটা প্রস্তুতি ম্যাচ বা অন্তত চার-পাঁচ দিনের একটি অনুশীলন সেশন যদি না পাওয়া যায় তাহলে প্লেয়ারদের মানিয়ে নেওয়াতে অনেক সমস্যা হয়। সম্পূর্ণ আলাদা জায়গা, মাঠ ও কন্ডিশনও আলাদা। সে হিসেবে আমি মনে করি যে পাকিস্তান সফরের আগে থেকে বলা মুশকিল আমরা কেমন খেলবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব বিভাগেই আমাদের দল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে। কারণ পাকিস্তান দল যথেষ্ট ভালো। ঘরের মাটিতে যেকোন দলই শক্ত। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব দিক দিয়ে। প্রতিটি বিভাগেই সংগ্রাম করতে হবে। আমি মনে করি যে প্রতিটি সেশন বাই সেশন যদি খেলা যায় এবং মনোযোগ যদি সর্বোচ্চ লেভেলের থাকে তবে ইনশাল্লাহ ভালো ক্রিকেট খেলতে পারবে।’
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায়।