হুমকির মুখে স্বপ্ন চূড়ার ২৩ মেয়ে ফুটবলারের স্বপ্ন
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৯:০৭
ঢাকা: বহু প্রশ্নের মধ্যে সাত বছর পর দেশের মাঠে গড়াচ্ছে নারী লিগ। গেল মাসেই রেজিস্ট্রেশন ও দলবদলের কার্যক্রম শেষে লিগের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে এক ঝাঁক স্বপ্নাতুর নারী ফুটবলার। ফুটবলে ক্যারিয়ার গড়ার সেই স্বপ্ন হঠাতই দুঃস্বপ্নে রূপ নিলো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) এক আচমকা সিদ্ধান্তে। লিগে অংশ নেয়ার বৈধতা পাওয়া স্বপ্ন চূড়া এবং আক্কেলপুর ফুটবল একাডেমির নাম লিগ থেকে বাদ দিয়েছে ফেডারেশন। এ সিদ্ধান্তে পরিবার ছেড়ে ঢাকায় ফুটবলে নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করা ২৩ নারী ফুটবলারের স্বপ্ন এখন হুমকির মুখে।
বাফুফের এমন আচমকা সিদ্ধান্তে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বপ্ন চূড়া একাডেমির নারী ফুটবলাররা। গ্রাম ছেড়ে ফুটবলে ক্যারিয়ার গড়ার সেই স্বপ্নাতুর চোখে এখন বিভীষিকার ঝলকানি, ‘আমার কাছে অনেক খারাপ লাগতেছে। বাড়িতে এখন কি বলবো। সুযোগ দেয়ার আগেই সুযোগ কেড়ে নিয়েছে। আমরা তো বঞ্চিত হচ্ছি। প্রথমবার আইসাই যদি এমন হয় তাহলে পরে আর কিভাবে আসবো। যদি আমরা খেলতে পারি খুবই খুশি হবো।’
সাবেক ফুটবলার কাননকে নিয়ে ২৫ জানুয়ারি থেকে অনুশীলন করছে সারাদেশ থেকে বাছাইকৃত ২৩ জন ফুটবলার। ২০ জানুয়ারি রেজিস্ট্রেশন করে ২৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে দলবদলে অংশ নেয় একাডেমি। নিয়ম মেনেই একাডেমিকে লিগে অংশ নেয়ার টিকিট দেয় বাফুফের নারী লিগ কমিটি। একাডেমিকে অন্তর্ভূক্ত করে লিগে ৮ দলের নাম ঘোষণা দেয় ফেডারেশন। লিগ দফায় দফায় পেছাতে পেছাতে ২২ তারিখে গিয়ে ঠেকে। ফিক্সচারও তৈরি। নাম নেই স্বপ্ন চূড়া একাডেমির।
১২ ফেব্রুয়ারি মেইলের মাধ্যমে ক্লাবের অংশ নেয়ার আবেদন খারিজ করে দেয় ফেডারেশন। এমন সিদ্ধান্তে উঠতি নারী ফুটবলারদের স্বপ্ন ধ্বংসের মুখে মনে করেন ক্লাবের ম্যানেজার রাকিব আহমেদ, ‘ক্লাবের সমস্যা আগেই মিটমাট করা হয়েছে। আমরা সেটা বাফুফে ভবনে গিয়ে জানিয়েছি। তারপর মেইলে কেন জানিয়ে দিয়েছে যে আমরা থাকছি না সেটা মাথায় ঢুকছে না। মেয়ে ফুটবলারদের ক্যারিয়ার শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।’
কী কারণে একাডেমি ক্লাব বাদ দেয়া হয়েছে সেটা এখনও স্পষ্ট করেনি ফেডারেশন। তবে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ জানান, ‘মহিলা ফুটবল লিগ কমিটি তাদের কর্মকাণ্ডে কনভিন্সড না। কমিটি উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেছিল। সবকিছু বিষয় মাথায় রেখে মহিলা কমিটি সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।’
এবারের লিগে অংশ নিতে না পারলে প্রয়োজনে আইনের দ্বারস্থ হবে বলে জানান ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক কায়সার হামিদ, ‘ক্লাবের অন্ত:কোন্দল দেখার বিষয় না বাফুফের। বৈধভাবে রেজিস্ট্রেশন আর দলবদলে অংশ নিয়েছি আমরা। কমিটির চেয়ারপারসনের কাছেই সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। এরপর আমাদের নামও ঘোষণা করা হয়। এর মাঝেও আবেদন করেছি। আবার পুনর্বিবেচনা করার আবেদন করেছি। অংশ নিতে না পারলে আমরা মামলা করবো।’
সারাবাংলা/জেএইচ
২৩ নারী ফুটবলার কায়সার হামিদ নারী লিগ সাবেক ফুটবলার কায়সার হামিদ স্বপ্ন চূড়া এবং আক্কেলপুর ফুটবল একাডেমি