এবার ফাঁকা মাঠেই গোল দিচ্ছেন সালাউদ্দিন!
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৬:৫৬
ঢাকা: আর তিন মাস পরেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন। আসন্ন এ নির্বাচনের ঠিক আগেই মাঠ থেকে ‘সরে গেছেন’ কাজী সালাউদ্দিনের প্রধান প্রতিপক্ষ তরফদার মো. রুহুল আমিন। গেল কয়েকবছরে মাঠ গুছিয়ে নির্বাচন থেকে তরফদারের সরে যাওয়ায় আপাতত মাঠ ফাঁকাই পাচ্ছেন টানা তৃতীয়বার বাফুফের সভাপতি পদে বহাল থাকা কাজী সালাউদ্দিন।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন জানিয়ে দিয়েছেন, আসন্ন ফুটবলের সবচেয়ে বড় নির্বাচনে সভাপতির পদে দাঁড়াচ্ছেন না। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নির্বাচনের মঞ্চ থেকে সরে দাঁড়ানোর এমন সিদ্ধান্তে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এতে নির্বাচনের মাঠ আদতে ফাঁকা হয়ে গেছে। কাজী সালাউদ্দিনের ‘গলার কাঁটা’ পথ থেকে বিদায় নিয়েছে।
বাফুফে নির্বাচন নিয়ে এই ‘ট্র্যাজেডি’র নেপথ্যের কারণ এখনো অজানা হলেও আপাতদৃষ্টিতে এটা বলাই যায়, ভোটের হিসাবে বাফুফে বস সালাউদ্দিনের সামনের মাঠ ফাঁকা।
তবে রোববারের (১৬ ফেব্রুয়ারি) আগেও নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে একটা জমজমাট ভোটের দ্বৈরথ দেখার অপেক্ষায় ছিল ফুটবল সংশ্লিষ্টরা। ভোট দখলের আখের গুছিয়ে ফেলেছিলেন তরফদার। ক্যাম্প, বৈঠকসহ নির্বাচনের প্যানেলও প্রায় নিশ্চিত করে ফেলা এই সংগঠক নিজের নাম তুলে নিয়েছেন তরী ঠিকানায় নোঙর ফেলার আগেই।
অনেকেই অবশ্য রাজনীতির প্রেক্ষাপটের পটপরিবর্তনের সঙ্গে তরফদারের সিদ্ধান্তের যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছেন। দু’দিন আগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি তরফদারের ঘনিষ্ঠজন আ জ ম নাছির উদ্দীন। তার পরপরই ফুটবলে এমন সিদ্ধান্ততে কী কোনো যোগসূত্র আছে এমন প্রশ্নের জবাবে তরফদার বলেন, ‘না কোনো সম্পর্ক নেই। এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’
তাই নির্বাচনে কথিত সেই ‘তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার’ আঁচ পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, সামনের তিন মাসে অনেক পট পরিবর্তন হতে পারে। উপর মহল থেকে বড় কোনো সিদ্ধান্তও আসতে পারে। আপাতত দৃষ্টিতে ভোটের মাঠে ফাঁকা গোলই করতে যাচ্ছেন কাজী সালাউদ্দিন এমনটাই ধারণা নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের।
অনেকটা বাঁজ পড়ার মতোই ঘটনা। নির্বাচনকে সামনে রেখে গত দুই বছর থেকে মাঠ গোছাতে শুরু করেছিলেন তরফদার। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ক’দিন আগেও সাবেক ফুটবলার ও সংগঠকদের (অন্তত ১০ জন সালাউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন নির্বাহী কমিটির) নিয়ে প্যানেল গঠনের কার্যক্রমও সেরে ফেলেছিলেন তিনি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কার্য নির্বাহী কমিটির ষষ্ঠ সভা শেষে নির্বাচন ও প্যানেল নিয়ে খোলামেলা আলাপও করেছিলেন এই সংগঠক।
তবে নিজে সরে দাঁড়ালেও সভাপতি ছাড়া বাকী পদগুলোতে নির্বাচনে আসতে একটা প্যানেল গড়া হবে বলে জানিয়েছেন তরফদার, ‘আমি দাঁড়াচ্ছি না। তবে নির্বাচনেই থাকছি না এমন নয়। আমাদের ‘জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন’ নিয়ে একটা প্যানেল গঠন করা হবে বলে আমার বিশ্বাস। তারা নির্বাচনে অংশ নিবে।’
কে দাঁড়াবে কে দাঁড়াবে না তা এখন আরো জটিল সমীকরণে পৌঁছে গেছে তরফদারের এমন সিদ্ধান্তের পর। তবে খোলা চোখে বাফুফে বসের নির্বাচন জেতা অনেকটাই পাকাপোক্ত হয়ে গেল বলে মত সংশ্লিষ্টদের।