আইসিসির চ্যাম্পিয়ন্স কাপের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ভারত
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:০৭
আগামি ২০২৩ সাল থেকে প্রতি বছরই বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা ভাবছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সঙ্গে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ন্যয় আরো দুইটি টুর্নামেন্ট আনছে আইসিসি। ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নস কাপ এবং টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নস কাপ নামে। কেবল পুরুষদের ক্রিকেটে নয়; নারীদের ক্রিকেটেও যোগ হবে এই টুর্নামেন্ট।
৫০ ওভারের চ্যাম্পিয়নস কাপকে চ্যাপিয়নস ট্রফির মতোই ধরা হবে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে আইসিসির বোর্ড সভাতেই এই প্রস্তাবনা তোলা হয়েছিল। যা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ড এবং আইসিসি’র কর্তাদের মাঝে।
ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থার প্রস্তাবিত চক্র বাস্তবায়িত হলে এসব টুর্নামেন্ট করতেই ক্যালেন্ডারের বড় একটা অংশ শেষ হয়ে যাবে। যাতে করে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ সেভাবে আয়োজন করা সম্ভব হবে না। এসবের সঙ্গে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ তো আছেই। আইসিসির প্রস্তাবনায় আরো উঠে এসেছে অলিম্পিকে ক্রিকেট সংযুক্তি। লস অ্যাঞ্জেলসে ২০২৮ সালের অলিম্পিকে ক্রিকেট ইভেন্ট থাকার ব্যাপারে আশাবাদী আইসিসি।
আইসিসির নতুন এই সিদ্ধান্ত স্বার্থে আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের। আইসিসির নতুন এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তাঁরা। করবেই বা না কেন? আইসিসি যে ভারতের মতামত উপেক্ষা করে বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে তাদের সিদ্ধান্ত। সেই সঙ্গে আগামী মার্চে আইসিসির যে বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টা উত্থাপন হবে, সেখানে তুমুল বিতর্ক এবং আলোচনার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে।
আইসিসির নতুন এই পরিকল্পনায় তুলনামূলক ছোট দেশগুলোর সাথে খেলা বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়াবে। এখন এই বাধ্যবাধকতা আছে শুরু টেস্টে। কিন্তু নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিও খেলতে হবে প্রতিটা দেশের সাথে বাধ্যতামূলকভাবে। ছোট দেশের বিপক্ষে খেলা হলে সেখান থেকে আয়ও আসবে কম। ফলে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে বড় রকমের আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে ক্রিকেটের বিগ থ্রি’র। আর এতে বেশি ভুগবে ভারত। কেননা ক্রিকেট থেকে প্রতি বছর তাদের আয়টা নেহাত কম নয়।
বিসিসিআই খুব ভালো করে বুঝতে পারছে বিষয়টি। তাই আইসিসির নতুন প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে। বিসিসিআইয়ের এক কর্তা ক্রিকইনফোকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমরা আমাদের জায়গায় পরিষ্কার। যদি গুরুত্বপূর্ণ বোর্ডগুলো তাদের মতামত উপস্থাপন করতে না পারে, তাহলে… আইসিসির টুর্নামেন্ট কি এমনি এমনি হয়ে যাবে? প্রত্যেক বছর টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা বিশ্ব ক্রিকেটে কাজ করবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইসিসিকে বিষয়টি বুঝতে হবে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রভাব পড়বে আইপিএল, বিগ ব্যাশ ও অন্যান্য টুর্নামেন্টের ওপর। কোনও জায়গাই তো থাকবে না খেলার। তাছাড়া খেলোয়াড়রা কতই বা খেলতে পারবে?’
গেল অক্টোবরে আইসিসি বিশ্ব ক্রিকেটের স্বার্থে নতুন পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিল। সে সময় ভারত সেই পরিকল্পনার তুমুল বিরোধীতা করে বসে। সেই সঙ্গে নিজেদের একটা পরিকল্পনাও তখন তারা পাঠায় আইসিসির কাছে। যেখানে ছিল ভারতের দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ আয়োজনসহ নানা ক্রিকেটীয় কর্মসূচির একটা বিস্তারিত ক্যালেন্ডার।
কিন্তু আইসিসি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সেই ক্যালেন্ডারকে মোটেই আমলে নেয়নি। ভারতের পরিকল্পনাকে পুরোপুরি পাশ কাটিয়ে নতুন প্রস্তাবকে চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে তারা। এ কারণেই আইসিসির উপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
আইসিসি ওয়ানডে চ্যাম্পিয়নস কাপ টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন্স কাপ প্রতি বছর টুর্নামেন্ট