এমন অধিনায়ক বাংলাদেশে আর আসবে না: মুশফিক
৫ মার্চ ২০২০ ২০:৩৫
সিলেট থেকে: পরিসংখ্যান বলছে অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি বিন মুর্ত্তজাই বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা। শেষ দফায় ২০১৪ সালের একেবারে শেষে যখন আবার ব্যাটন তুলে নিলেন ক্যারিশমাটিক নেতৃত্বে একের পর এক জয় থলিতে পুরেছেন। প্রায় ৫ বছরে মোট ৮৭টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে ৪৯ ম্যাচেই তুলে নিয়েছেন জয়।
শুধু জয়ের হিসেবেই নয়, ড্রেসিংরুম এমনকি ম্যাচ চলাকালীন তার অভিভাবকসুলভ আচরণও তাকে সবার চাইতে আলাদা করে রেখেছে, দিয়েছে সেরার তকমা। যে কোনো বিপর্যয়ে দলকে চাঙা রাখতে যা যা করনীয় তার সবকটুকু করেছেন। এক দুই বার নয় আটবার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছে। কিন্তু তবুও দমে যাননি দুরন্ত দুর্বার এই যোদ্ধা। হৃদয় নিংড়ানো নিবেদনে বল হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। হাত দিয়ে নয় যেন হৃদয় দিয়ে বল করেন ম্যাশ। পেছনে উদ্দেশ্য একটিই- দিন শেষে দেশ হাসবে। সতীর্থ হিসেবে মুশফিকুর রহিম খুব কাছ থেকেই এর সব দেখেছেন। তাই প্রিয় অধিনায়কের বিদায়ের খবর শুনে মন্তব্যটিই করেছেন ভুবন ভোলানো- মাশরাফি ভাইইয়ের কোনো বদলি হবে না। এমন অধিনায়ক বাংলাদেশে আর আসবে না।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি নিজের অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর সেখানেই আয়োজিত হয় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দলবদল। সেখানে এসে মুশফিক এমন মন্তব্য করেন।
তবে শুধু মুশফিকই নন প্রিয় অধিনায়কের বিদায় নিয়ে মর্মস্পর্শী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল. মোহাম্মদ মিঠুন ও মেহেদি হাসান মিরাজও। সারাবাংলার পাঠকদের উদ্দেশ্যে তা তুলে ধরা হল।
মুশফিকুর রহিম: মাশরাফি ভাইয়ের কোনো বদলি হবে না। এমন অধিনায়ক আর বাংলাদেশে আসবে না। উনি যেনো পরিবারের অংশ। তার ক্যাপ্টেন্সি মিস করব। শুধু অন দ্য ফিল্ড না। অফ দ্য ফিল্ডেও মাশরাফির অভাব দেখা দেবে। তার সঙ্গে খেলাটা অন্যরকম অনুভূতি।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে অনেক কিছুই দিয়েছেন। এখন তিনি অবসর পরবর্তী যে প্ল্যান করুক না কেন সেটার জন্য শুভ কামনা জানাই। কোনো সংশয় নেই যে বাংলাদেশের অন্যতম ডিসেন্ট খেলোয়াড় তিনি। আরও কয়েক বছর খেলতে পারবেন তিনি। আশা করি ভাল করবেন। আমার তরফ থেকে শতভাগ শুভ কামনা। যেখানেই থাকুন ভাল থাকবেন আশা করি। আর যদি খেলাটা চালিয় যায় সেজন্য শুভ কামনা। অধিনায়ক হিসেবে উনি কতটা সফল সেটা দেখাই যায় রেকর্ডে। মাশরাফি ভাই যখন বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়েছিল তখন দলের চেহারাই পাল্টে গিয়েছিল। আর আমরা বেশ স্ট্রাগল করছিলাম। উনি আসায় কাজ সহজ হয়েছিল।’
তামিম ইকবাল: মাশরাফির অবদান ভোলার মত না। ২০১৫ থেকে আমাদের দলটি এ পর্যন্ত যা করেছে সেটা অস্বীকার করা যাবে না।’
মোহাম্মদ মিঠুন: সাফল্যই বলে উনি অধিনায়ক হিসেবে কেমন। অবশ্যই তাকে শুভ কামনা জানাই। আশা করি তিনি ভাল থাকবেন।’
মেহেদী হাসান মিরাজ: অনেক গুলো ওয়ানডে খেলেছি। প্রায় ৪০টার মতো ওয়ানডে খেলা হয়েছে। যে কয়দিনই ছিলাম, খুবই আগলে রেখেছেন তিনি সবাইকে। আমরা বেশিই মিস করব। বিশেষ করে আমরা তো তাকে অল্পসময় পেয়েছি। তারপরও যতটুকু পেয়েছি, নিজেকে সৌভাগ্যবান বলতে হয়। তাঁর নেতৃত্ব খেলেছি, এটা আমাদের জীবনে সবচেয়ে বড় পাওয়া ছিল। অনেক সিরিজ জিতেছি তাঁর নেতৃত্বে। অনেক মিস করব।
প্রসঙ্গত, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে মাশরাফি জানিয়ে দেন, অধিনায়ক হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগামিকালের ম্যাচটিই তার শেষ।
তামিম ইকবাল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল মাশরাফি বিন মুর্ত্তজা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ মুশফিকুর রহিম মেহেদি হাসান মিরাজ মোহাম্মদ মিঠুন