অধিনায়ক মাশরাফির জয়ের অর্ধশতক
৬ মার্চ ২০২০ ২২:৪৫
কঠিন সময়ে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্ত্তজা। মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের আগে হারের বৃত্তে বন্দি হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ দল। ওই সময়টাতে তৃতীয় দফায় অধিনায়কত্ব পান মাশরাফি। বোর্ডের ভাবনাটা ছিল এমন, মাশরাফি যতটা পারেন চালিয়ে নিক, বাকিটা পরে দেখা যাবে। এমন ভাবনার বড় কারণ মাশরাফির ঘন ঘন চোটে পড়া।
বিভিন্ন সময়ে সাতটি অস্ত্রোপচার হয়েছে মাশরাফির হাঁটুতে। চোটের কারণে ক্যারিয়ার থমকে গেছে বারবার। ফলে তিনি কতদিন বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যেতে পারবেন সেটা নিয়ে ছিল বড় শঙ্কা। দলের বাজে ফর্ম, নিজের চোটে পড়ার প্রবণতাসহ আরো বহু প্রতিবন্ধকতা জয় করে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছেন মাশরাফি। এই যাত্রাই অনেক আগেই বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক বনে গেছেন।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচের আগে বাংলাদেশকে ৮৭টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি। তার মধ্যে ৪৯ ম্যাচে জয় আর এই পরিসংখ্যানে যুক্ত হলো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষের তৃতীয় ম্যাচটিও। সর্বোচ্চ ম্যাচে অধিনায়কত্ব, সর্বোচ্চ জয় এবং জয়ের হারসহ প্রায় সব ক্যাটাগরিতেই এগিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি তার নেতৃত্বে ৮৮তম ম্যাচ ছিল। আর এই ম্যাচ জিতে ৫০টি ওয়ানডে ম্যাচ জয় পেলেন অধিনায়ক মাশরাফি। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জয়ের হার ৫৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।
সব দেশ মিলিয়ে এই রেকর্ডে সবার ওপরে রিকি পন্টিং। তার নেতৃত্বে ৭৬ দশমিক ১৪ শতাংশ ম্যাচই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ২৩০ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ১৬৫ টিতে জিতিয়েছেন পন্টিং, হেরেছে ৫১ ম্যাচ। দুই ম্যাচ টাই হয়েছে, বাকি ১২টি পরিত্যক্ত।
জয়ের হিসেবে পন্টিংয়ের পরেই আছেন ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ধোনির নেতৃত্বে ২০০ ম্যাচ খেলে ১১০টিতে জিতেছে ভারত, হেরেছে ৭৪টি। টাই হয়েছে ৫ ম্যাচ, বাকি ১১ ম্যাচ পরিত্যক্ত।
এই ফাঁকে চলুন দেখে নেওয়া যাক ওয়ানডেতে বিভিন্ন দেশের হয়ে সর্বোচ্চ সাফল্য পাওয়া অধিনায়কদের পরিসংখ্যান-
নিউজিল্যান্ডকে সর্বোচ্চ সাফল্য এনে দেওয়া অধিনায়ক স্টেফেন ফ্লেমিং। তার নেতৃত্বে ২১৮ ম্যাচ খেলে ৯৮টিতে জিতেছে নিউজিল্যান্ড, হেরেছে ১০৬টি। এক ম্যাচ টাই হয়েছে, বাকি ১৩ ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। জয়ের হার ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ।
দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতম অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ। তার নেতৃত্বে ১৫০ ম্যাচ খেলে ৯২টিতে জিতেছে প্রোটিয়ারা। হেরেছে ৫১ ম্যাচ। এক ম্যাচ টাই হয়েছে, পরিত্যক্ত হয়েছে ৬ ম্যাচ। জয়ের হার ৬৪ দশমিক ২৩ শতাংশ।
পাকিস্তানের সফল অধিনায়কের নাম ইমরান খান। তার নেতৃত্বে ১৩৯ ম্যাচ খেলে ৭৫টিতে জিতেছে পাকিস্তান, হেরেছে ৫৯টিতে। ১ ম্যাচ টাই, ৪ ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। জয়ের হার ৫৫ দশমিক ৯২ শতাংশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক ব্রায়ান লারা। তার নেতৃত্বে ১২৫ ম্যাচ খেলে সমান ৫৯টিতে জয় ৫৯টিতে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাকি ৭ ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। জয়ের হার ঠিক ৫০।
ইংল্যান্ডের সফল অধিনায়ক ইয়ন মর্গান। তার নেতৃত্বে ১১৪ ম্যাচ খেলে ৬৯টিতেই জিতেছে ইংল্যান্ড, হেরেছে ৩৬টিতে। দুই ম্যাচ টাই হয়েছে বাকি সাত ম্যাচ পরিত্যক্ত। জয়ের হার ৬৫ দশমিক ৪২ শতাংশ।
জিম্বাবুয়েকে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে জিতিয়েছেন ডগলাস ক্যাম্পাবেল। তার নেতৃত্বে ৮৬ ম্যাচ খেলে ৩০টিতে জিতেছে জিম্বাবুয়ে, হেরেছে ৫২টিতে। দুই ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে, দুই ম্যাচ টাই। জয়ের হার ৩৬ দশমিক ৯০ শতাংশ।
আয়ারল্যান্ডের সফলতম অধিনায়ক উইলিয়াম পোটারফিল্ড। ১১৩ ম্যাচ নেতৃত্ব দিয়ে আইরিশদের ৫০ ম্যাচ জিতিয়েছেন পোটারফিল্ড। হেরেছেন ৫৫ ম্যাচ। দুই ম্যাচ টাই হয়েছে, বাকি ৬ ম্যাচ পরিত্যক্ত। জয়ের হার ৪৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
আফগানিস্তান সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জিতেছে আসগর আফগানের নেতৃত্বে। তার নেতৃত্বে ৫৬ ম্যাচ খেলে ৩১টিতে জিতেছে আফগানরা, হেরেছে ২১টিতে। এক ম্যাচ টাই হয়েছে, পরিত্যক্ত হয়েছে তিন ম্যাচ। জয়ের হার ৫৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
জয়ের অর্ধশতক বাংলাদেশ অধিনায়ক বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে মাশরাফি বিন মুর্ত্তজা