অ্যানফিল্ডেই লিভারপুলকে চূর্ণবিচূর্ণ করে কোয়ার্টারে অ্যাটলেটিকো
১২ মার্চ ২০২০ ০৫:২৫
মাদ্রিদে অ্যাটলেটিকোর কাছে হেরে হুংকার দিয়েছিলেন লিভারপুলের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ, ‘অ্যানফিল্ডে আসো’। সেই অ্যানফিল্ডেই ক্লপের হুংকারকে বেদনার নীল রঙে ফিরিয়ে দিলো অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। অ্যানফিল্ডতো জয় করলই সঙ্গে দুই ম্যাচেই লিভারপুলকে হারিয়ে অনেকটা ম্যাজিকের মতই কোয়ার্টার ফাইনালে পা রেখেছে ডিয়াগো সিমিওনের শিষ্যরা।
এই হারে অ্যানফিল্ডে ৪৩ ম্যাচের পর কোন ম্যাচ হারল লিভারপুল। ৩-২ ব্যবধানে হেরে দুর্দান্ত ফুটবল খেলতে থাকা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা বিদায় নিয়েছে শেষ ষোল থেকেই।
এমন হার হয়তো অনেকেই আশা করেনি। তবে এবার ইংলিশ প্রিমিয়ার অবিশ্বাস্য ফর্মে থাকা লিভারপুলকে প্রথম হার দিয়ে চমকে দিয়েছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। সেই থেকে কুফাটা ছাড়েনি লিভারপুল। পরে সবমিলিয়ে তিন ম্যাচে হেরে ক্লপ বাহিনী। সিমিওনের দেখানো পথে লিভারপুলকে হারানোর মন্ত্র যেন শিখে ফেলে বাকী দলগুলো। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের হোম ম্যাচ বলে এই কুরুক্ষেত্র জেতা কঠিন নয় অসম্ভব!
সেই অসম্ভবকেই যেন সম্ভব করে দেখালো মোরাতা-মার্কোসরা। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়েছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।
তবে নির্ধারিত ৯০ মিনিট যেন শাসন করে খেলেছে লিভারপুল। মাদ্রিদ রক্ষণে মানে-ফিরমিনহো-সালাহদের একের পর এক আক্রমণ আছড়ে পড়ছিল। ৪৩ মিনিটে জর্জনিও উইজনাল্ডামের গোলটাতে যখন লিভারপুল এগিয়ে গেলো মনে হচ্ছিল আরেকটা গোলইতো! ছিটকে যাবে সিমিওনে। নাহ! বিরতিতে ভিন্ন কৌশল এটেই যেন নেমেছে অ্যাটলেটিকো। পুরো ম্যাচেই লিভারপুলকে আটকে রাখলো প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়া সিমিওনা। ব্যস ম্যাচ চলে যায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে।
সেখানেই যেন নাটকের সবটুকু মজা অপেক্ষা করছে। অতিরিক্ত সময়ের তখন ৯৪ মিনিট। ফিরমিনহোর গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে লিভারপুল (২-০)। এই বুঝি নিভে গেল অ্যাটলেটিকোর স্বপ্ন! কিসের কি? তিন মিনিটের মাথায় লিভারপুলের জালে গোল! জাও ফেলিক্সের পাস থেকে বদলি হিসেবে নেমে ব্যবধান কমালো মার্কোস লিওরেন্তে (২-১)। দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধান ২-২। অ্যাওয়ে গোলে ফ্রন্ডফুটে অ্যাটলেটিকো।
খেলা তখনও বাকী। মাথায় বাঁজ পড়লো লিভারপুলের। অ্যানফিল্ডে সুমসাম নিরবতা। মরিয়া স্বাগতিকরা। এর মাঝেই ১০৫ মিনিটে লিভারপুলের আশাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে বসে অ্যাটলেটিকো। গোলদাতা সেই আবারও মার্কোস। ব্যস যেন অ্যানলিল্ডের রঙটাই ফিকে হয়ে গেল। এরপরে বাকী ১১ মিনিটে সিমিওনের রক্ষণ বাধা পেরিয়ে দুই গোল করে লিড নেয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এরইমাঝে লিভারপুলের কফিনে শেষ প্যারেকটি ঠুকে দেন বদলি হিসেবে নামা অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আলভারো মোরাতা। গোল করে ব্যবধান ৩-২ করে ফেলে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
অ্যানফিল্ডের জয়ের রথ থামলো ৪৩-এ। শেষ পর্যন্ত অ্যানফিল্ড দুর্গ জয় করা গেল! লিভারপুলের স্বপ্নটা যেন গুড়ি দিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে যায় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ইয়ুর্গেন ক্লপ চ্যাম্পিয়নস লিগ ডিয়াগো সিমিওনে লিভারপুল