অলিম্পিক পেছানোর ইঙ্গিত জাপানের প্রধানমন্ত্রীর
২৪ মার্চ ২০২০ ১১:১৬
করোনাভাইরাস যখন মহামারী আকার ধারণ করেছে বিশ্বজুড়ে ঠিক সেখানেই গো ধরে বসে ছিল জাপানের অলিম্পিক আয়োজক কমিটি। মহামারী এই করোনাভাইরাসের কারণেও তারা অলিম্পিক পেছাতে চাইছিল না। তবে এবার বেঁকে বসতে শুরু করেছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া সরাসরি জানিয়ে দেয় তারা টোকিও অলিম্পিকে এ বছর অংশগ্রহণই করবে না। আর শেষ পর্যন্ত অলিম্পিক নিয়ে বাড়তে থাকা বিদ্রোহের সুরের কারণেই নিজেদের সুর নরম করতে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। সেই সঙ্গে নিজেদের সুরও পরিবর্তন করে ভিন্ন কথা বলছে জাপান।
অলিম্পিক পিছিয়ে গেলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে আয়োজকরা। আর এ কারণেই অলিম্পিক নিয়ে সিদ্ধান্তের জন্য অতিরিক্ত সময় নিচ্ছে জাপান এবং আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। এর মধ্যেও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দেশের সংসদে বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতিতে পূর্ণাঙ্গ অলিম্পিক যদি করা সম্ভব না হয়, তা হলে গেমস পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিশ্ব এখন অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুত নয়।’
এদিকে কানাডা জানিয়ে দিয়েছে তারা টোকিও অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করতে জাপানে যাবে না। করোনায় আক্রান্ত প্রথম দেশ হিসেবে টোকিও অলিম্পিক থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে কানাডা। আর এরপর অস্ট্রেলিয়াও ঘোষণা দেয় তারাও টোকিও অলিম্পিকে যাচ্ছে না। এবং অলিম্পিক ২০২১ সালে হবে সেটা ধরে নিয়ে আগাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
কানাডার অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক সংস্থা যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা জানি, অলিম্পিকের মতো এমন বড় আয়োজন পিছিয়ে দেওয়াটা কতটা কঠিন। কিন্তু সবার আগে গুরুত্ব পাবে আমাদের অ্যাথলেটদের স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা। পাশাপাশি শুধু অ্যাথলেটদের স্বাস্থ্যই নয়, গুরুত্ব দিতে হবে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের উপরেও।’
অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিক কমিটি জানায়, ‘এই পরিস্থিতিতে টোকিওতে দল পাঠাবে না অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের মধ্যে এক টেলিকনফারেন্সের পরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি।’ অস্ট্রেলিয়ার শেফ দ্য মিশন ইয়ান চেস্টারম্যান বলেছেন, ‘এটা পরিষ্কার যে, জুলাইয়ে কোনো ভাবেই অলিম্পিক হতে পারে না। আমাদের অ্যাথলেটরা যথেষ্ট ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু এই অনিশ্চয়তা এবং চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে।’
সোমবার (২৩ মার্চ) টোকিও অলিম্পিক সংগঠক কমিটির প্রেসিডেন্ট ইয়োশিরো মোরি সাংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা এখনও অলিম্পিক পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। তবে অলিম্পিক যে পিছিয়ে দেওয়া হবে না, সেটাও নিশ্চিত নয়।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘করোনাভাইরাসের আক্রমণে পৃথিবীর যা অবস্থা, তার পরে অলিম্পিক নির্ধারিত সময় হবেই, এটা বলার মতো বোকা আমি নই।’ তবে সংগঠক কমিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তোশিরো মুতো জানিয়েছেন, ‘পিছিয়ে গেলেও অলিম্পিক কোনো ভাবেই বাতিল করা হবে না।’