‘কী ভয়ংকর একটা ব্যাপার’ বললেন করোনা জয়ী আর্সেনাল কোচ
২৭ মার্চ ২০২০ ১৩:৩৬
নামকরা ফুটবল ব্যক্তিত্বদের মধ্যে আর্সেনালের কোচ মিকেল আর্তেতাই প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফুটবলের ইভেন্টগুলো বন্ধ হওয়া শুরু করেছিল তার আক্রান্ত হবার পর থেকেই। করোনাভাইরাস চীন থেকে বিভিন্ন দেশে ছড়াতে শুরু করলে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলা চালানো যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছিল প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আর্তেতা আক্রান্ত হওয়ার পর সেসব চিন্তা হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।
সাথে সাথেই বন্ধ করে দেওয়া হয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। পরে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগ এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ ফুটবলের প্রায় সব ইভেন্টই স্থগিত হয়ে যায়। এখনো বন্ধই আছে ফুটবলসহ বিশ্বের প্রায় সব ধরনের খেলাধুলা। কবে নাগাদ মাঠে বল গড়াবে তা নিশ্চিত নয় কেউই। এদিকে, আর্তেতা করোনা জয় করে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে এসেছেন।
আর্সেনাল কোচের করোনায় আক্রান্ত হবার পর ১৪ দিন পেরিয়ে গেছে। এখন পুরোপুরি সুস্থ তিনি। সুস্থ আর্তেতা করোনা যুদ্ধে জয়ী হওয়ার অভিজ্ঞতা শুনিয়েছেন।
ইউরোপা লিগের শেষ ৩২ এর ম্যাচে অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে খেলা ছিল আর্সেনালের। ওই ম্যাচটা খেলতে গিয়েই মূলত করোনায় আক্রান্ত হন আর্তেতা। অলিম্পিয়াকোসের মালিক যে করোনায় আক্রান্ত ছিলেন সেটা জানতেন না কেউই। তার মাধ্যমেই আর্সেনাল কোচের কাছে ছড়িয়ে পড়েছিল ভাইরাসটি।
আর্সেনাল ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আর্তেতা বলেন, ‘আমার মনে হয, আমি এখন পুরোপুরি সেরে উঠেছি। এটা সত্য যে অলিম্পিয়াকোসের মালিকের করোনা ধরা পড়ার পর ক্লাব যখন আমাদের জানালো যে আমরাও ঝুঁকিতে আছি, তত দিনে আমার শরীরে লক্ষণগুলো দেখা দিতে শুরু করেছিল। ওই মুহূর্তে মনে হচ্ছিল আমার শরীরে কিছু একটা আছে।’
নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি গোাপন না করে সাথে সাথেই ব্যবস্থা নিয়েছিলেন আর্তেতা। তিনি বলেন, ‘তাঁদের (ক্লাব কর্তৃপক্ষ) বলছিলাম, আমাদের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় ঝুঁকিতে আছে। আমিই প্রথম লক্ষণগুলো টের পাচ্ছি। আর এটার মানে প্রতিদিনই আমার সংস্পর্শে যে খেলোয়াড়েরা বা ক্লাবের লোকজন আসেন সবাই ঝুঁকিতে, এটা হতে দেওয়া যাবে না। আমি বলেছিলাম, প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা বলতে হবে, ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে কথা বলতে হবে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
আর্তেতা বলেন, ‘তখন মনে হলো, আমার সংস্পর্শে যারা আসছে সবাই-ই তো তাহলে ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে। কী ভয়ংকর একটা ব্যাপার এটা! যে মানুষগুলো আমার সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদের নিয়ে চিন্তা চলে আসে তখন। আর তখনই ভয়টা লাগে।‘
কঠিন সময়ে নিজের পরিবারকে নিয়েও ভাবতে হচ্ছিল আর্তেতাকে। বলেছেন, ‘লক্ষণ বলতে, আমার কাছে অন্য ভাইরাসের মতোই মনে হয়েছে। তিন-চার দিন একটু কঠিন গেছে। জ্বর ছিল, শুকনো কাশি ছিল, বুকে অস্বস্তি হচ্ছিল অনেক। এই তো! সবচেয়ে কঠিন দিক হচ্ছে, আমার ঘরে তো আরও মানুষ আছে। তিনটা বাচ্চা আছে আমার। ওদের নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। আমার স্ত্রী এর মধ্য দিয়ে গেছে, আমার নানিও। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, বাচ্চাদের কিছু হয়নি। এখন আমরা সবাই ঠিক আছি।’