ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কাছ থেকে ২ কোটি ৩০ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবী করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। তবে এই বিষয়ে শুরু থেকেই যেন গায়ে মাখছে না বিশ্বের সব থেকে ধনী ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। তবে এবার ক্ষতিপূরণ আদায়ে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ প্রশাসন। আইসিসি’র বিরোধ নিস্পত্তি কমিটির হাতে এই বিষয়টি তুলে দিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে দুবাইতে সরাসরি আইসিসির বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। এর পরিবর্তে শুক্রবার (২৭ মার্চ) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় বোর্ড সভা। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে এটি সৌরভ গাঙ্গুলীর প্রথম আইসিসি’র বোর্ড সভা ছিল। তবে আইসিসির সঙ্গে আর্থিক ঝামেলাটা বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটির কাছে যাওয়াটাকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন বিসিসিআই সভাপতি।
২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর বসে ভারতে আর সেই টুর্নামেন্ট শেষে ভারতীয় সরকার আইসিসিকে কোনো আয়কর ছাড় দেয়নি। এই বিষয়টি নিয়েই বেশ নাখোশ আইসিসি। এ কারণেই সে সময় ভারতীয় বোর্ডের কাছে ওই পরিমাণ অর্থ দাবি করে ক্ষতিপূরণ বাবদ।
যেহেতু বিসিসিআই আয়কর মওকুফ করাতে পারেনি সেহেতু আইসিসি এরপরই তাদের প্রাপ্য বাৎসরিক রাজস্ব থেকে টাকা কেটে নেওয়ার কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অবশ্য কেবল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকেই নয়, সকল সদস্য দেশগুলোকে আয়কর মওকুফ করাতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেয় আইসিসি।
আইসিসি আরও জানায় এরপর থেকে এমন ঘটনা ঘটলে কোনো বোর্ডই আইসিসির কোনো ইভেন্ট আয়োজনের সত্ব পাবে না। অবশ্য এই হুমকির তীরটা ছোড়া হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দিকেই। কারণ ২০২০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের একক আয়োজক ভারত।
এছাড়া উক্ত বোর্ড সভায় আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যাপারেও আলোচনা করেছে আইসিসি। আগামি ১৮ অক্টোবর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বসতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ৭ম আসর। তবে করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভুত এমন পরিস্থিতিতে তা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবতে বাধ্য করছে আইসিসিকে। তবে এখনই বিশ্বকাপ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে যাচ্ছে না আইসিসি। পরিস্থিতি নজরে রেখে আগামী মে মাসে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী সভায় এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। আইসিসির প্রধান নির্বাহী মনু সনি বলেছেন, সব সদস্যই বৈশ্বিক এই মহামারি সংশ্লিষ্ট দৃশ্যপট বিবেচনায় নিয়ে সব বিকল্প ভেবে দেখবেন।
এছাড়াও আগামী জুলাই মাসে আইসিসির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বর্তমান চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর অবশ্য আগেই জানিয়ে রেখেছেন এবার প্রার্থী হবেন না। তবে এটা প্রত্যাশিতই যে তিন ‘মোড়ল’ ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বোর্ডের বড় ভূমিকা থাকবে এই নির্বাচনকে ঘিরে।