ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির লুইস চলে গেলেন
২ এপ্রিল ২০২০ ১২:৫১
ক্রিকেটকে আধুনিক করে গড়ে তোলা ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির উদ্ভাবক টনি লুইস চলে গেলেন। বুধবার (১ এপ্রিল) রাতে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইসিবি জানায় ৭৮ বছর বয়সে মারা গেছেন টনি লুইস। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড। ‘গভীর দঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে টনি লুইস এমবিই ৭৮ বছর বয়সে মারা গেছেন।’
টনি লুইস ১৯৯৭ সালে তার সতীর্থ এবং গণিতবিদ ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থকে সঙ্গে নিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য আবিষ্কার করেন ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি। বৃষ্টির হানা দেওয়া ম্যাচে ওয়ানডেতে প্রতিপক্ষ ঠিক কত ওভারে রানের লক্ষ্যে ব্যাট করবে তা বের করায় ছিল তাদের এই পদ্ধতির কাজ। তাদের আবিষ্কারের দুই বছর পর আইসিসি এই পদ্ধতি গ্রহণ করে। ১৯৯৯ সালে আইসিসি আনুষ্ঠানিক ভাবে ডি-এল পদ্ধতি চালু করে।
অবশ্য প্রথম থেকেই এই পদ্ধতির নাম ডি-এল পদ্ধতি থাকলেও ১৫ বছর পর ২০১৪ সালে এই পদ্ধতির নাম করণ করা হয় ডি-এল-এস। এর পেছনের কারণ হচ্ছে অস্টড়েলিয়ার অধ্যাপ স্টিভেন স্টার্ন এই পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনেন। আর সেখান থেকেই বৃষ্টি আইনের নাম রাখা হয় ডি-এল-এস।
১৯৯২ সালে বিশ্বকাপের ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচের কথা ক্রিকেট প্রেমীদের ভুলে যাওয়ার কথা নয়। বিখ্যাত সেই ম্যাচে জয়ের জন্য যখন প্রোটিয়াদের প্রয়োজন ছিল ১৩ বলে ২২ রান ঠিক তখনই হানা দেয় বৃষ্টি। আর তখনকার বৃষ্টি আইনে ছিল রান তাড়ায় যত ওভার কাটা যেত, প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলের সবচেয়ে কম রান ওঠা সেই কয় ওভারের রান বাদ যেত। আর তাতেই দেখা মেলে স্কোরবোর্ডে মাত্র ১ বলে ২২ রানের প্রয়োজন দক্ষিণ আফ্রিকার।
৮০’র দশক থেকেই বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ নিয়ে কাজ করে আসছিলেন ডাকওয়ার্থ। তবে তার কাজকে গুরুত্বের সহিত দেখেনি সে সময়ে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা। পরে ১৯৯২ সালে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল সোসাইটির কনফারেন্সে ‘ফেয়ার প্লে ইন ফাউল ওয়েদার’ নামের একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন ডাকওয়ার্থ। ব্রিস্টলের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট অব ইংল্যান্ডের ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞানের সেই সময়ের লেকচারার লুইসও উপস্থিত ছিলেন সেই কনফারেন্সে। ডাকওয়ার্থের প্রবন্ধে মুগ্ধ লুইস একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়েই দুজনে হিসাবনিকাশ শুরু করেন।
ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি মেনে প্রথম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯৭ সাল ইংল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ম্যাচে। সে ম্যাচে আগে ব্যাট করতে জিম্বাবুয়ে সংগ্রহ করে ২০০ রান কিন্তু বৃষ্টি আইনে ইংলিশদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮৬। যদিও ম্যাচটি ইংল্যান্ড ৭ রানে হেরেছিল।
আর এই পদ্ধতির জনকের একজন টনি লুইস ছেড়ে গেলে পৃথিবী। ১৯৪২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বল্টনের ল্যাঙ্কাশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন টনি লুইস। আর ২০২০ সালের ১ এপ্রিল মারা গেলেন এই গণিতবিদ।