ডিফেন্ডাররা পারেনি, করোনা আটকেছে রোনালদোকে
১২ এপ্রিল ২০২০ ১৪:০১
ব্রাজিলের হয়ে ১৯৯৪ আর ২০০২ এ বিশ্বকাপ জয় করেছেন রোনালদো নাজারিও। আর ১৯৯৮ সালেও দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন ফাইনালে। তবে ফাইনালে দুর্দান্ত জিনেদিন জিদানের কাছেই যেন হারতে হয়েছিল ব্রাজিলকে। আর ক্যারিয়ার সেরা পারফরম্যান্স করেও তাই রানার আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল রোনালদো নাজারিওকে। তার সময়ে কোনো ডিফেন্ডারই তাকে আটকানোর দুঃসাহস দেখাননি। তবে এবার তিনি আটকেছেন নিজের বাড়িতেই। করোনাভাইরাসের প্রকোপে স্পেনে গৃহবন্দি হয়ে আছেন তিনি।
ক্রমে ক্রমেই যেন করোনার প্রাদুর্ভাব আরো বেড়েই চলেছে। আর এই মুহুর্তেই তিনি থাকতে পারেননি নিজ দেশের নিজের শহরে। আটকে পড়ে আছেন স্পেনে। আর সেখান থেকেই লা লিগার কর্তাদের সঙ্গে মিলে চালাচ্ছেন করোনার বিরুদ্ধের লড়াই।
ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তী এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমিও কঠিন এক স্পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি সবার মতোই। আমাদের সবাইকে আত্মত্যাগ করে এই ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস নামক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জিততে হবে।’
দু’বছর আগে লা লিগার ক্লাব রিয়াল ভায়োদলিদের ৫১ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন রোনালদো। আর তাতেই মালিক বনে গেছেন ওই ক্লাবের। সে সময়টাতেই মাদ্রিদে নিজের অফিস খুলেছেন রোনালদো নাজারিও। স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে অবশ্য আগে থেকেই তার বাড়ি ছিল। আর ক্লাবের মালিক এবং প্রেসিডেন্ট হওয়ায় তাই সর্বক্ষনিকই থাকতে হয় ক্লাবের সঙ্গে। আর তাই তো স্পেন লকডাউনের পর থেকে তিনি মাদ্রিদেই গৃহবন্দী হয়ে আছেন।
রোনালদো নিজের বিবৃতিতে আরো জানান, ‘আমরা চেষ্টা করছি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে।এই কাজটা খুবই কঠিন কারণ এর আগে কখনোই আমরা এই ধরনের পরিস্থিতির মুখে পড়িনি। আমরা বাড়ি থেকে কাজ করছি কারণ এখন বাইরে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা। লা লিগা, স্পানিশ ফুটবল সংস্থা এবং স্পেনের প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ সবার সঙ্গে আমরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা করছি। সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া তো সম্ভব নয়, তাই আমরা যতটা সম্ভব কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
তবে কেবল ক্লাবের কাজই কর যাচ্ছেন না রোনালদো এবং তার ক্লাব। সেই সঙ্গে অসহায় মানুষদের জন্য সাহায্যের হাতও বাড়িয়ে দিয়েছেন এই কিংবদন্তী এবং তার ক্লাব। রিয়াল ভায়োদলিদ এই ভাইরাস মোকাবিলায় বিশেষ ‘মাস্ক’ তৈরি করছে। ভায়াদলিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিলে এখন হাজার হাজার মাস্ক বিতরণ করছে স্পেনের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য।
তবে ফুটবলারদের অনুশীলনের বিষয়টি নিয়ে বেশ আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন বিশ্বকাপজয়ী এই স্ট্রাইকার। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, এই পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের অনুশীলনে ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা মাদ্রিদ সিটির কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছি, তারা যখন মনে করবেন তখনই আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’
কত শতবার প্রতিপক্ষকে নাকানিচুবানি খায়িয়েছেন রোনালদো। বোতল বন্দী করেছেন কত শত ডিফেন্ডারদের, তবে এবার নিজেই বোতল বন্দী হয়ে পড়েছেন করোনাভাইরাসের প্রকোপে। তাই তো সবাইকে পরামর্শ দিচ্ছেন ঘরে থাকার। রোনালদো বলেন, ‘আমাদের সবাইকে অনেক ধৈর্য ধরতে হবে সেই সঙ্গে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সরকারের নির্দেশ মেনে চলতে হবে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি করোনাভাইরসের বিপক্ষের এই লড়াইয়ে আমরা জয়ী হবো। তবে তার জন্য সকলকে বাড়িতে থাকতে হবে, আমি নিজেও বাড়িতেই থাকছি।’
করোনা মোকাবিলা করোনাভাইরাস গৃহবন্দি মাদ্রিদে রোনালদো নাজারিও