Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অনিশ্চিত লিগে বড় লোকসানের মুখে ক্লাবগুলো


১২ এপ্রিল ২০২০ ২২:১২

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: কী একটা জমজমাট ফুটবলই না উপহার দিয়ে চলছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। বিপিএলে প্রথম পর্বে প্রত্যেক দল ৫-৬ টা ম্যাচ খেলেছে মাত্র। তাতেই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার নজির স্থাপন শুরু হয়েছি। হঠাৎ সম্ভাবনার এই লিগে অনামন্ত্রিত করোনা ঝড়ে চুরমার সব। লিগের ভবিষ্যতও অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত। অনিশ্চয়তার চাদরে ঢেকে থাকা লিগের কালো ছোবল পড়েছে ক্লাবগুলোতেও।

করোনাভাইরাসের কারণে লিগ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। সব ফুটবলার এখন যে যার ঘরে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত লিগের ভবিষ্যত অন্ধকারে। মাঠের ফুটবল স্থবির হওয়ায় ক্লাব কর্মকর্তাদের মাথায় চিন্তার ভাঁজ। অনভিপ্রেত করোনা ঝড়ে নড়বড়ে ক্লাব অর্থনীতি এখন শঙ্কায়। বড় লোকসানের ‍মুখে ক্লাবগুলো। বিশেষ করে মাঝারি ও ছোট ছোট দলগুলোর নাজুক অবস্থা।

বিজ্ঞাপন

মৌসুমভিত্তিক লিগে এর মাঝেও স্থানীয় ও বিদেশি ফুটবলারদের বেতন দিয়ে যেতে হচ্ছে ক্লাবগুলোকে। করোনাক্রান্তিতে মন্দা অর্থনীতির করুণ অবস্থা থাবা বসিয়েছে ক্লাবগুলোর ভঙ্গুর অর্থনীতিতেও। লিগ দেরি করে শুরু হলে বা লিগ বন্ধ হয়ে গেলেও ফুটবলারদের বেতন চালিয়ে যেতে হবে ক্লাবগুলোকে। বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে মাসিক পদ্ধতি বেতন আর স্থানীয় ফুটবলারদের বেলায় মৌসুমভিত্তিক বেতন দেয়ার চুক্তি থাকে। স্থানীয়দের প্রাথমিক পর্যায়ে একরকম অর্থ পরিশোধ করে মাসে মাসে বাকীটা দেয়া হয় ক্লাব থেকে। অনিশ্চিত লিগের কারণে বিশেষ করে বিদেশি খেলোয়াড়দের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিয়ে যেতে হচ্ছে ক্লাবগুলোকে।

এমন চিত্রটাই পুরো লিগের ক্লাবগুলোতেই। করোনার এমন পরিস্থিতিতে চোখে সর্ষের ফুল দেখছেন ক্লাব কর্মকর্তারা। সবচেয়ে বড় লোকসানের মুখে আছে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, রহমতগঞ্জ, মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংঘের মতো মাঝারি দলগুলো।

বিজ্ঞাপন

পুরান ঢাকার দল রহমতগঞ্জ এমএফসির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পৃষ্ঠপোষক বা যারা অবদান রাখেন সবার অবস্থাই নাজুক এই পরিস্থিতিতে। তার মধ্যেও আমাদের ফুটবলারদের বেতন দিয়ে দিতে হয়েছে। মার্চ মাসের পুরো বেতন দেয়া হয়েছে। বিদেশি ফুটবলারদের অন্ততপক্ষে খাওয়া-থাকার খরচটা দিতে হচ্ছে। জানি না এ পরিস্থিতি কতদিন থাকবে।’

ক্যাসিনো কাণ্ডের পর ভেঙে পড়া আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের হালও একই। কোনওরকম দল গড়া এই ক্লাবকেও করুণ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে বলে মত দেন আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের একজন জানান, ‘লিগ দেরি হোক বা বন্ধ হোক আমাদের লোকসান দেখতে হচ্ছেই। খেলোয়াড়দের বেতন দিতে হচ্ছে। এই অবস্থায় বিদেশি ফুটবলারসহ স্থানীয়দের বেতন দেয়াটা মুশকিল। ক্লাবের অর্থনৈতিক অবস্থা এমনিতেই খারাপ। করোনার এমন একটা ধাক্কা আসলে অনেক বড় আঘাত হয়ে হানা দিচ্ছে।’

এমতাবস্থায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে জানালেন শেখ জামাল ক্লাবের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দীন আহমেদ চুন্নু , ‘আমরা মনে করি এক্ষেত্রে সমাধান দিতে পারে বাফুফেই। কারণ ফিফা বলেছে এটা তাদের প্রস্তাব কোনো নির্দেশনা না। ফেডারেশনের সঙ্গে বসে একটা সিদ্ধান্ত ক্লাবগুলো নিতেই পারে।’

বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী জানান, ‘বর্তমান যে অবস্থা সামনে যদি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে তাহলে চলতি মৌসুমে আমাদের লিগ হবে কি না তা নিয়ে আমি শঙ্কিত। ফিফা প্রস্তাব দিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর আর্থিক অবস্থা ভিন্ন। তাই যত দ্রুত সম্ভব এ নিয়ে আমরা ক্লাবগুলোর সঙ্গে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাই।’

ক্লাব কর্মকর্তারাও চায় এটার একটা সমাধান আসুক। তবে তা যে এই করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত হচ্ছে না সেটা নিশ্চিত। সে পর্যন্ত লোকসানের মাত্রাটা বড় হবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

সারাবাংলা/জেএইচ

করোনা ক্লাব ফুটবল ফুটবলার বাফুফে লোকসান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর