শুরুকেই শেষ ভেবেছিলেন শচীন
২৬ এপ্রিল ২০২০ ১৬:০২
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের প্রায় সব রেকর্ডই শচীন টেন্ডুলকারের দখলে। তার গড়া সর্বোচ্চ রান, সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি, সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডগুলো আদৌ কোনোদিন ভাঙবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। স্যার ডন ব্র্যাডম্যানকে পাশ কাটিয়ে শচীনকে সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান বলেন অনেকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার যাত্রাটা সুখকর ছিল না।
স্কুল ক্রিকেট, ঘরোয়া ক্রিকেটে দ্যুতি ছড়িয়ে ১৯৮৯ সালের নভেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে জাতীয় দলে ডাক পান শচীন। পাকিস্তানের বোলিং আক্রামণ তখন দুর্বার। ওয়াসিম আকরাম, ইমরান খান তো ছিলেনই, ওই ম্যাচে অভিষেক হয় আরেক কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার ওয়াকার ইউনুসের। স্পিন বিভাগে ছিলেন কিংবদন্তি আব্দুল কাদির। এদিকে, শচীনের অভিষেক হয়েছিল মাত্র ১৬ বছর বয়সে। কিশোর শচীনের মনে হচ্ছিল যেন অথৈ সাগরে গিয়ে পড়েছেন!
এদিকে, ভারতীয় দলের অবস্থাও তখন ভালো ছিল না। শচীন অভিষেক ম্যাচে যখন ব্যাটিংয়ে নামছিলেন তার আগে ৪১ রানে চার উইকেট নেই ভারতের। অভিষেকে এত কিছু জয় করতে পারেননি লিটল মাস্টার। ওয়াকার ইউনুসের বলে বোল্ড হওয়ার আগে করতে পেরেছিলেন মাত্র ১৫ রান। শচীনের নাকি সেদিন মনে হয়েছিল, এরপর হয়ত জাতীয় দলে আর সুযোগ মিলবে না।
শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) ৪৭ বছর পূর্ণ করেছেন ভারতীয় কিংবদন্তি। সে উপলক্ষে স্কাই স্পোর্টসের ‘নাসের মিটস শচীন’ অনুষ্ঠানে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইনের সঙ্গে আলাপচারিতায় যুক্ত হয়েছিলেন শচীন। অভিষেকের সেই বাজে স্মৃতিও উঠে আসে আলোচনায়।
শচীন বলেন, ‘আমি কিছু বুঝেই উঠতে পারছিলাম না, এটা স্বীকার করতেই হবে। প্রথম টেস্ট খেলেছিলাম যেন আমি স্কুল ম্যাচ খেলছি। ওয়াসিম ও ওয়াকার খুব জোরে বল করছিল, শর্ট বল করছিল। তাদের পক্ষে সম্ভব, ভয়ঙ্কর এমন সবকিছুই করছিল তারা। আগে কখনও এরকম অভিজ্ঞতা আমার হয়নি। প্রথম ইনিংস তাই সুখকর ছিল না। মাঝে মধ্যেই আমি ওদের পেস ও বাউন্সে পরাস্ত হচ্ছিলাম। ১৫ রানে আউট হয়ে যখন ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটছিলাম, খুব বিব্রত লাগছিল। মনে হচ্ছিল, ‘এটা তুমি কী করলে, কেন তুমি এভাবে খেললে…।’ ড্রেসিংরুমে ঢুকে সোজা বাথরুমে চলে যাই, প্রায় কেঁদেই ফেলেছিলাম।’
শচীন বলেন, ‘মনে হচ্ছিল, আমি অথৈ সাগরে পড়েছি। নিজের দিকে তাকিয়ে বলছিলাম, ‘মনে হয় এটিই তোমার প্রথম ও শেষ ম্যাচ।’ কেবলই ভাবছিলাম, এই পর্যায়ে খেলার জন্য যথেষ্ট ভালো আমি নই। খুবই হতাশ হয়েছিলাম, খুব ছোট মনে হচ্ছিল নিজেকে।’
তবে শচীনকে ছুড়ে ফেলেনি তৎকালীন ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তার প্রতিদানও দিয়েছিলেন শচীন। দ্বিতীয় টেস্টেই ১৭২ বলে ৫৯ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছিলেন। তার পরের গল্পটা তো সবারই জানা। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি কিংবদন্তী শচীন টেন্ডুলকারকে।