সিনিয়র ক্রিকেটারদের ‘ষড়যন্ত্র’র স্বীকার হয়েছিলেন ইউনিস খান
৪ মে ২০২০ ১৬:৪৮
পাকিস্তান ক্রিকেটের সঙ্গে অতপ্রতভাবে জড়িত নানান গুঞ্জন। বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ক্রিকেটার পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সঙ্গের নানান গোপনীয় কথা প্রকাশ করেছেন জনসম্মুখে, গণমাধ্যমের সামনে। কেউ জড়িত থেকেছেন ম্যাচ গড়পেটায় কেউ আবার নিষিদ্ধ কোনো কিছুর সঙ্গে। আবার কেউ বা আবার নিজ সতীর্থ এবং দেশের বিরুদ্ধেই করেছেন ‘ষড়যন্ত্র’। সম্প্রতি এমন বিস্ফোরক মন্তব্যই করেছেন পাকিস্তানের সাবেক পেসার রানা নাভিদুল হাসান।
তখন পাকিস্তানের ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান ইউনিস খানের কাধে। তার নেতৃত্বে দুর্দান্ত খেলছিল পাকিস্তান দল। আরব আমিরাতে তখন কেবল নিজেদের ডেরা গড়ে তুলছে পাকিস্তানের ক্রিকেট। ২০০৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ‘ইচ্ছে করেই’ খারাপ খেলেন দলের কিছু সিনিয়র ক্রিকেটার। অধিনায়ক ইউনিস খানের নেতৃত্বে অসন্তুষ্ট হয়েই এমন কাজ করেছিল পাকিস্তানের তখনকার সিনিয়র ক্রিকেটাররা বলে জানিয়েছেন রানা নাভিদ।
সেবার দুর্দান্ত ফর্মে থাকা পাকিস্তান দল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই কিউইদের উড়িয়ে ১৩৮ রানের বড় জয় তুলে নেয় ইউনিস খানের দল। সিরিজ জয়ের স্বপ্নও দেখছিল পাকিস্তান দল, তবে আকস্মিকভাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে যথাক্রমে ৬৪ ও ৭ রানে হেরে যায় পাকিস্তান। আর শেষ দুই ম্যাচে দলের এমন হারের পেছনে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের ইচ্ছে করেই খারাপ খেলার কারণটাই তুলে ধরেছেন রানা নাভিদ।
সম্প্রতি স্থানীয় এক টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় আরব আমিরাতের ওই সিরিজ সম্পর্কে কথা বলেন রানা নাভিদ। কথায় কথা বলেন, ‘২০০৯ সালে আরব আমিরাতে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দু’টি ওয়ানডে ম্যাচ হেরেছিলাম। দলের কিছু খেলোয়াড় ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ খেলেছিল আর সেই কারণেই আমরা হেরেছিলাম।’
নাভিদ আরো বলেন, ‘সেই সিরিজে আমি পুরোটা সময়ই সাইড বেঞ্চে বসে কাটিয়েছিলাম। সে সময় আমি ইউনিস ভাইকে বলেছিলাম তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমিও সেই ষড়যন্ত্রের শিকার।’ এ ষড়যন্ত্রে প্রায় সাত – আট জন ক্রিকেটার জড়িত ছিলেন বলে জানান ৯ টেস্ট ও ৭৪ ওয়ানডে খেলা পেসার।
ইউনিস খানের নেতৃত্বে কেনই বা ক্রিকেটাররা ইচ্ছাকৃত খারাপ খেলবে? ইচ্ছা করে কেনই বা দলের দুর্দশা ডেকে আনবে? আর কেনই বা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি সিরিজ জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করবে পাকিস্তান? সেসবের উত্তরও দিয়েছেন রানা নাভিদ। তিনি জানান, ‘অধিনায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করার ইউনিস বেশ কঠোর হয়েছিল। অভিজ্ঞ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার তা পছন্দ করতে পারেনি। তারা বলেছিল যে আমরা ইউনিসকে অপসারণ করতে চাই না। আমরা চাই পিসিবি চেয়ারম্যান তার সঙ্গে কথা বলে জানাক অধিনায়ক হিসেবে সে কেন দলের অভিজ্ঞদের পরামর্শ নেয় না।’ তবে এটা যে ইউনিসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছিল না, তাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন রানা নাভিদ।
এমন ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়ে অবশেষে ২০০৯ সালের অক্টবরে পাকিস্তানের ওয়ানডে এবং টেস্ট দলের অধিনায়কত্বের পদ থেকে সরে দাঁড়ান ইউনিস খান।
ইউনুস খান ইউনুসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র পাকিস্তানি ক্রিকেটার রানা নাভিদ