ওয়ার্নের পরামর্শ বোলারদের সুবিধায় বলের ওজন বাড়াও
৬ মে ২০২০ ১৩:১২
করোনাভাইরাসের প্রভাব বিশ্বজুড়ে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এর প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটেও। সম্প্রতি বোলারদের বলে থুতু লাগিয়ে এক পাশ চকচকে রাখার বিষয়টি নিয়ে বেশ সমালচোনা চলছে। কারণ থুতুর থেকে ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস। তাই তো থুতু নিষিদ্ধের আলোচনা চলছে অনেক। তাহলে? বোলাররা দীর্ঘ টেস্ট ম্যাচে বাড়তি কোনো সুবিধা পাবে না? সেই সমাধান নিয়ে এসেছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তী স্পিনার শেন ওয়ার্ন। ওয়ার্ন বলছেন সুইং করানোর জন্য বলার একটা দিকের ওজন বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। তাহলে বল সুইং করাতে কোনো সমস্যা থাকবে না। এই ব্যাপারটাকে টেনিস বলে টেপ পেচানোর সঙ্গে তুলনাও করেছেন ওয়ার্ন। তবে এটা সত্য যে বলের একটা দিক ভারী থাকলে সুইং করানোটা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
থুতুর বিকল্প উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে ক্রিকেট সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী নামকরা প্রতিষ্ঠান কোকাবুরা। পেসারদের জন্য থুতুর বিকল্প আনছে কোকাবুরা, এক ধরনের মোমের প্রলেপ বাজারে আনছে প্রতিষ্ঠানটি। যেটা থুতু বা ঘামের বদলি হিসেবে বলে ব্যবহার করা যাবে।
শীঘ্রই এই পন্যটি উৎপান শুরু হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রেট ইলিয়ট। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট মাঠে বল চকচকে রাখার দীর্ঘদিনের উপায় থুতু ও থামের বিকল্প উদ্ভাবনে আমরা গবেষণা চালিয়েছি। অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমরা থুতু ও ঘামের বিকল্প হিসেবে মোমের তৈরি এক ধরনের প্রলেপের উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছি।’
কিংবদন্তি লেগস্পিনার শেন ওয়ার্ন মনে করছেন, বলের পালিশ নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে বা বল-বিকৃত না করেও সুইং করাতে পারবেন পেসাররা। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে ওয়ার্ন বলেন, ‘সুইং করানোর জন্য বলের একটা দিকের ওজন বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। তা হলে বল সুইং করায় সমস্যা থাকবে না। ব্যাপারটা অনেকটা টেনিস বলে টেপ জড়ানোর মতো হবে।’
ওয়ার্ন অবশ্য এই ব্যাপারে নিশ্চিত নন যে আসলেই তা কাজ করবে কি না। তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত নই, ওয়াসিম আকরাম বা ওয়াকার ইউনুস যে রকম সুইং করাতো, সেটা সবাই চাইবে কি না। তবে বলটার ওজন এক দিকে বেশি হলে পেসারদের সুবিধে হবে। বিশেষ করে গরমের মধ্যে দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনের নিষ্প্রাণ উইকেটে।’
যেহেতু বলে থুতু লাগানোটা এখন কিছুটা অস্বাস্থ্যকর এবং বিপজ্জনক হয়ে গেছে তাই এর বিকল্প অবশ্যই ভাবতে হবে। আর ওয়ার্ন মনে করেছেন এটাই ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। ওয়ার্ন বলেন, ‘এটা একটা ভালো পন্থা। কাউকে তা হলে বল নিয়ে কিছু করতে হবে না। বল বিকৃত করারও প্রশ্ন থাকবে না। কেউ শিরিস কাগজ, বোতলের ছিপি বা অন্য কিছু দিয়ে বল বিকৃত করছে কি না, তার উপরে নজরদারিও করতে হবে না।’
তবে এক দিকের বলের ওজন বাড়িয়ে কীভাবে স্বাভাবিক বা রিভার্স সুইং ধরে রাখা সম্ভব, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত জরুরি। এখন ক্রিকেট বলের ওজন বাধ্যতামূলক ভাবে ১৫৫ থেকে ১৬৩ গ্রামের (৫.৫ থেকে ৫.৭৫ আউন্স) মধ্যে হয়। কীভাবে ভারসাম্য রক্ষা করে এক দিকের ওজন বাড়ানো যেতে পারে? এখানেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ওয়ার্ন। ক্রিকেট ব্যাটে যদি বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটতে পারে, তা হলে বলের ক্ষেত্রে কেন নয়?
এ ব্যাপারে কথা বলেছেন অজি তারকা ব্যাটসম্যান মার্নাস লাবুশেনও। তিনি বলেন, ‘সবার সামনে এখন একটাই লক্ষ্য। মাঠে ফেরা। সে জন্য দরকার হলে যা আত্মত্যাগ করা দরকার, তা করতে হবে। ক্রিকেটের নিয়মে কিছু পরিবর্তন আনার দরকার হলে তা আনতে হবে।’
আর বলে থুতু লাগানোর বিষয়টি নিয়েও নিজের মতবাদ প্রকাশ করেছেন লাবুশেন। এ ব্যাপারে লাবুশেন বলেন, ‘থুতু দিয়ে বল পালিশ বন্ধ হয়ে গেলে একটু অদ্ভুত তো লাগবেই। আমাদের নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’