কে-লিগ শুরু, বিশ্বকে বার্তা দিল দক্ষিণ কোরিয়া
৯ মে ২০২০ ১৯:১৩
মহামারি করোনাভাইরাস ইস্যুতে দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের কাছে বড় এক দৃষ্টান্ত। শুরুর দিকে চীনের মতো দক্ষিণ কোরিয়াতেও ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছিল ভাইরাসটি। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেসব জয় করেছে কোরিয়ানরা। গতকাল শুক্রবার (৮ মে) থেকে ফুটবলের শীর্ষ লিগও শুরু করেছে দেশটি।
কে-লিগ শুরুর কথা ছিল গত ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখে। কিন্তু সেদিনই দক্ষিণ কোরিয়াতে রেকর্ড ৯শ ৯ জন করোনায় আক্রান্ত হন। লিগ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়। কবে নাগাদ পুনরায় লিগ শুরু করা হবে সে বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি তখন। দুই মাস পর লিগ শুরুর অবস্থা তৈরি করেছে দেশটি।
গত কিছুদিন ধরে দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা এক অঙ্কে নেমেছে। গত মঙ্গলবার (৪ মে) আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শূন্য। এসব কারণেই পুনরায় লিগ শুরুর সিদ্ধান্ত। তবে লিগ খেলা শুরু হলেও বেশ কিছু বাধ্যবাধকতা মানতে হচ্ছে ক্লাব ও ফুটবলারদের।
আগেই বলা হয়েছিল, কোনো ফুটবলার বা কোচিং স্টাফের শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে তাকে আলাদা থাকতে হবে। করোনা পজেটিভ হলে তাকে, তার দলকে এবং যাদের সঙ্গে মিশেছেন তাদেরকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের হোম কোয়ারেনটাইনে থাকতে হবে। লিগ শুরুর দিন দেখা গেল আরও অনেক কিছু।
শুক্রবার প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিল জেওনবুক মোটরস ও সুওন ব্লউইংস। মাঠে প্রবেশের আগে দুই দলের খেলোয়াড়দের শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখা হয়। ম্যাচ শুরুর সময় হাত না মিলিয়ে দুই দলের খেলোয়াড়রা সৌজন্য বিনিময় করেছেন মাথা ঝুঁকিয়ে। রিজার্ভ বেঞ্চে বসা ফুটবলার, কোচ, চতুর্থ রেফারি, মেডিকেল স্টাফসহ মাঠে থাকা সবাইকে গ্লাভস ও মাস্ক পরতে দেখা গেছে।
৮৩ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকার পর লিং ডং এর গোলে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলে জিতেছে জেওনবুক মোটরস। গোলের পর কনুইয়ে কনুই মিলিয়ে উদযাপন করতে দেখা গেছে ফুটবলারদের। ম্যাচ শেষেও একে অপরের সঙ্গে হাত মেলাননি।
দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবল লিগ খুব একটা জনপ্রিয় নয়। তবে শুক্রবার লিগটির দিকে নজর ছিল পুরো বিশ্বেরই। যারা লাইভ খেলা দেখার জন্য অধির আগ্রহী ছিলেন তাদের জন্য বড় এক উপলক্ষ্য হয়েই যে হাজির হয়েছে কে-লিগ।
বিশ্বের ২০টি দেশে সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে শুক্রবারের ম্যাচটি। কোরিয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, পর্যাক্রমে সম্প্রচার সংখ্যাটা বাড়বে। লাইভ খেলা সম্প্রচারের জন্য কোরিয়া লিগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করতে আগ্রহী অনেক দেশের সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান। শুক্রবারের ম্যাচটি অনলাইনেও সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। কোরিয়ানদের দারুণ এই উদ্যোগের সাক্ষী হয়েছেন বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষ।