আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিকের ১৫ বছর
২৬ মে ২০২০ ১২:২৫
কাঁটায় কাঁটায় ঠিক ১৫ বছর অতিবাহিত হলো মুশফিকুর রহিমের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার। ২০০৫ সালের ২৬ মে, ঐতিহাসিক লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে এক মিডল অর্ডার উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের মাথায় ক্যাপ পরিয়ে দেন তখনকার অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। লর্ডসের সেই অভিষেক টেস্টে অবশ্য ইতিহাস গড়তে পারেননি তিনি, দুই ইনিংস মিলিয়ে সেবার করেছিলেন মোট ২২ রান। তবে এরপর বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাস গড়া কত যে ইনিংস খেলেছেন নেই তার কোনো ইয়ত্তা।
শুরুটা ম্যাড়ম্যাড়ে হলেও ধীরে ধীরে মুশি নিজের জাত চেনাতে শুরু করেন। আর অল্প সময়ের মধ্যেই টাইগারদের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে ওঠেন। এরপর আসতে আসতে তার নাম পালটে বনে যান মিস্টার ডিপেন্ডেবল। শত বাধার মুখেও যার কাঁধে নিঃসন্দেহে ভরসা রাখা যায়। মুশফিকুর রহিম সবকিছুর প্রতিদান দিয়েছেন তার ব্যাটের মাধ্যে। তাই তো টাইগারদের হয়ে মোট ৭০টি টেস্ট, ২১৮টি ওয়ানডে এবং ৮৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে তার প্রতিদানও দিয়েছেন। ব্যাট হাতে এই ম্যাচগুলোতে ১৪টি শতক এবং ৫৯টি অর্ধশতক। যার ভেতর রয়েছে টেস্টে ২১৯ এবং ওয়ানডেতে ১৪৪ রানের দুর্দান্ত দুটি ইনিংস। টাইগারদের ইতিহাসে টেস্টের সর্বপ্রথম ডাবল শতক হাঁকান মুশফিকই, শ্রীলংকার বিপক্ষে গলে ২০১৩ সালে। এরপর অবশ্য আরও ২টি ডাবল শতক হাঁকিয়েছেন মুশি দুটোই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
লম্বা সময় দেশের হয়ে খেলে পার করেছেন অনেক চড়াই-উৎরাই। লম্বা সময়ের এই সফরে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন অনেককেই। তাঁর ভালো খারাপ সব সময়ের সঙ্গী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মুশফিক। সম্প্রতি জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি জানান দিলেই তার কৃতজ্ঞতা।
মুশফিক বলেন, ‘প্রথমত আলহামদুলিল্লাহ। আমি যেটা মনে করি যে, এটা আল্লাহ’র অশেষ রহমত। যেকোনো খেলোয়াড়েরই স্বপ্ন থাকে নিজের দেশকে রিপ্রেজেন্ট করা আর বাংলাদেশের মতো জায়গায় ১৫ বছর খেলা চাট্টিখানি কথা নয়। আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই, বিশেষ করে আমার সতীর্থ, কোচ, আমার ফ্যামিলি এবং বিশেষ করে তুই (তামিম), মাশরাফি ভাই, রিয়াদ ভাই, সাকিবসহ যত জনের সঙ্গে খেলেছি। স্পেশালি তুই আর সাকিবের সঙ্গে তো আমার ‘৯৭ সাল থেকে খেলা।’
এখানেই অবশ্য থামেননি মুশফিক, আরও যোগ করেন, ‘অবশ্যই আমার ফ্যামিলি বলতে গেলে তুই, মাশরাফি ভাই। এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া এবং সম্মানের। আমি সবসময় বলি, আমার সামনে যখন মাশরাফি ভাই, রিয়াদ ভাই, সাকিব, তোর মতো রোল মডেলরা থাকে তখন আমার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।’
নিজের খারাপ সময়ে মুশফিক অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তারই সতীর্থ সাকিব, মাশরাফি, তামিম এবং মাহমুদউল্লাহের কাছ থেকে। তাদের ভালো খেলা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে নিজে ফিরেছেন ফর্মে। তাই বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ তিনি জাতীয় দলের এই চার নক্ষত্রের ওপর।
এ ব্যাপারে মুশি বলেন, ‘আমি যখন ধারাবাহিক ভাবে ভালো খেলতে পারছিলাম না তখন আসলে নিজের ভেতরও এই তাগিদটা আসছে যে, উনারা ভালো খেলছে সঙ্গে আমিও যদি পারি তাহলে দলের জন্যই ভালো। এরপরই মূলত রিয়েলাইজেসন আসছে। আমি মনে করি মাশরাফী ভাই, রিয়াদ ভাই, সাকিব এবং তোকে ধন্যবাদ। এছাড়াও অনেক কোচ এবং যখন যাদের সঙ্গে খেলেছি সবাই আমাকে হেল্প করেছে। তো, ইনশা আল্লাহ সামনে আরও যত ম্যাচ খেলতে পারি বাংলাদেশের জয়ের জন্য যেন কন্ট্রিবিউট করতে পারি।’
১৫ বছর ক্রিকেটে টেস্টে অভিষেক দেড় দশক বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল মুশফিকুর রহিম