অনুশীলন ফেরাতে প্রস্তুত বিসিবি
৪ জুন ২০২০ ১৪:৩৫
করোনাত্তর পরিস্থিতিতে ক্রিকেটারদের অনুশীলনে ফেরাতে আইসিসি’র গাইডলাইন অনুসরণ করে বিসিবি তার মেডিকেল বিভাগকে যে মডিউল তৈরির নির্দেশনা দিয়েছে তা ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। লাল সবুজের ক্রিকেটের মেডিকেল ও ফিজিক্যাল ট্রেনিং বিভাগ এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে দুই দিনের প্রস্তুতিতেই তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রিকেটারদের অনুশীলনে ফেরাতে পারবেন বলে মনে করছে বিসিবি মেডিকেল বিভাগ। সেই মডিউলের একটি হল একক বা সলো অনুশীলন। অপর দুটি; গ্রুপ অনুশীলন ও বোলারদের নিয়ে অনুশীলন।
সলো বা একক অনুশীলন হবে নিরেট দূরত্ব বজায় রেখে। অনুশীলনে এক একজন ক্রিকেটারের জন্য সময় বরাদ্দ থাকবে এক ঘণ্টা করে। একজন সুপারভাইজার, ট্রেনার ও ফিজিওর উপস্থিতিতে উক্ত সময়ের মধ্যে ক্রিকেটাররা ফিটনেস ও স্কিল ট্রেনিং (ব্যাটি, বোলিং, ফিল্ডিং) সারবেন। এর বাইরে আর কেউই মাঠে থাকবেন না।
সংবাদ মাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী।
তিনি জানিয়েছেন, ‘প্রথমে হচ্ছে সলো বা একক ট্রেনিং। মানে পুরোপুরি আইসোলেশনে থাকবে। দূরত্ব বজায় রেখে। যেমন একজনের জন্য এক ঘন্টা বরাদ্দ থাকবে। নির্দিষ্ট ক্রিকেটার এসে তার ট্রেনিং গুলো করবে, কিছু স্কিল করলো। সব একা একা। সাথে একজন সুপারভাইজার থাকবে, ট্রেনার, ফিজিও থাকবে মাঠে। অন্য আর কেউ থাকবে না। সে চলে গেলে আরেকজন ঢুকবে। পরিকল্পনাগুলো ক্রিকেটারদেরকে আগে দিয়ে দেওয়া হবে। ট্রেনার এসে পরিচালনা করবে। এভাবে একজন একজন করে করলে তো কোনো অসুবিধা নাই।’
একক অনুশীলনের মেয়াদ শেষ হলে শুরু হবে দলগত অনুশীলন। যেখানে অনুমিতভাবেই প্লেয়ারদের সংখ্যাটি বেশি হবে।
‘দলগত অনুশীলনে ৩ জন আনবো আমরা। আইসিসি বলছে, ১ জন, ৩ জন, ১০ জন ও ১০ জনের বেশি। এটা আসলে গাইডলাইন। এটা তো সবাই অনুসরণ করছে না। শ্রীলঙ্কা শুরু করেছে ১৩ জন নিয়ে। একটা গাইডলাইন দিয়ে রেখেছে। এভাবে আস্তে আস্তে চালু করার জন্য। আমরা ওইভাবে তৈরি করে রেখেছি। এটা যদি দল কেন্দ্রিক হয়, তাহলে আমরা সলোটা করতে পারবো না। আমাদের রেডি করা আছে। যখন বলবে শুরু করতে, তখন এটা করবো। হয়তো আমাদের ২ দিন সময় লাগবে প্রস্তুতির জন্য।’
তৃতীয় ও শেষ মডিউলটি হলো বোলারদের নিয়ে করা। যেখানে শুধুই পেসাররা থাকবেন। তবে স্পিনাররা থাকলেও থাকতে পারেন। ‘আরেকটা করেছি শুধু বোলারদেরকে নিয়ে। পেস বোলারই মূলত, স্পিনাররা হয়তো আসবে।’
দেবাশীষের কথায় এটা মনে করবেন না খুব শিগগিরই বুঝি ক্রিকেট ফেরাতে যাচ্ছে বিসিবি। তেমন কোনো সম্ভাবনা আসলে নেই। একমাত্র করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে তবেই। কেননা করোনাভাইরাস নামক মহামারি এখনো বিশ্বব্যাপী তার দোর্দন্ড দাপট অব্যাহত রেখেছে। রাত পোহালেই দেশে ও দেশের বাইরে প্রতিদিনই নতুন নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যুর খবর। কোনোভাবেই যেন অদৃশ্য এই অপশক্তির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না! কিন্তু এরমধ্যেই আগামি মাস থেকে ফিরছে ক্রিকেট। জুলাইয়ে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার সিরিজ দিয়ে ৫ মাস পর মাঠে গড়াচ্ছে ২২ গজের লড়াই।
এমতাবস্থায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও ক্রিকেট ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছে। আর এর প্রথম ধাপ হিসেবে গোটা বিসিবি জীবাণুনাশ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এর আওতায় আসবে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি, জিসমেনিয়াম ও ইনডোরসহ ক্রিকেটারদের ব্যবহার্য্য সকল অবকাঠামোই। জীবাণুনাশ কার্যক্রম শেষে করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণপূর্বক অনুশীলন ফিরবে হোম ক্রিকেট মিরপুর শের-ই-বাংলায়।