প্রতিপক্ষের কাছে স্লেজিং নয়, পরামর্শ পেয়েছিলেন গাভাস্কার
৮ জুন ২০২০ ২০:৩২
খেলার মাঠে দুইজন ব্যাটসম্যান মাঠে আর বাকি ১১ জন প্রতিপক্ষ, সে সময়েই খেলার ভেতরে শুনতে হয় নানান কথা। প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানকে স্লেজিং করে রাগিয়ে দিয়ে তার মনোবল নষ্ট করা এক প্রকার কৌশল। ক্রিকেটীয় নীতির বহির্ভুত না হওয়ায় আইসিসিও এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারে না। তবে স্রোতের বিপরীতের এক গল্প শোনালেন সুনীল গাভাস্কার। প্রতিপক্ষের এক ক্রিকেটারের কাছে মাঠে স্লেজিংয়ের বদলে পেয়েছিলেন পরামর্শ।
ভারতের কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাস্কার স্মৃতিচারণ করলেন এমনই এক ব্যতিক্রমী ঘটনার। সময়টা ১৯৭১, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক সিরিজে ব্যাট করতে নেমেছিলেন তিনি। আর সেই সিরিজেই ভুল শট করলেই পরামর্শ মিলত ক্যারিবিয়ান এক ক্রিকেটারের কাছ থেকে। স্লেজিং বা কটাক্ষ করে কোনো কথা নয়, দায়িত্বশীল হয়ে খেলার উপদেশ পেয়েছিলেন গাভাস্কার।
অবশ্য এর জন্য ওই ক্রিকেটার নিজের দলের থেকে লুকিয়েই কাজটা সারতেন। তার নাম রোহন কানহাই। যার নামের সঙ্গে মিলিয়ে নিজের পুত্রের নাম ‘রোহন’ রেখেছিলেন গাভাস্কার।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত গাভাস্কার স্মৃতিচারণ করলেন সেই ঘটনার। তিনি বলেন, ‘আমার অভিষেক সিরিজে কোনো ভুল শট খেললে ওভার শেষে ফিল্ডিং পজিশন পালটে স্লিপে যাওয়ার সময় রোহন কানহাই আমার কানে কানে ফিসফিস করে বলতেন, “মনযোগী হও! তুমি কি ১০০ করতে চাও না? সমস্যাটা কী তোমার?” এমন ভাবে বলতেন, যাতে করে নিজ দলের উইকেটরক্ষকের কান পর্যন্ত ওই কথা না পৌঁছায়। এক বার ভাবুন। বিপক্ষ দলের এক ক্রিকেটার আমাকে উল্টোপাল্টা কিছু বলছে না। বরং সে চাইছে আমি যেন সেঞ্চুরি করি। যা একেবারেই অবিশ্বাস্য!’
সে সময় ব্যাটসম্যান রোহন কানহাইয়ের প্রতি মুগ্ধ তো হয়েছিলেনই, সেই সঙ্গে মানুষ রোহনের প্রতিও মুগ্ধ হয়েছিলেন গাভাস্কার। এ ব্যাপারে গাভাস্কার বলেন, ‘ব্যাটিং দক্ষতার কারণে তো বটেই। তবে যে ভাবে উনি গোপনে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন তার জন্য বেশি শ্রদ্ধা করি রোহন কানহাইকে। মাঠের বাইরে উনি ছিলেন মানুষ হিসেবে সেরাদের একজন। সেই কারণেই ছেলের নাম রেখেছিলাম তার নামে।’
ক্যারিবিয়ান এই ব্যাটসম্যান ১৯৫৭ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ৭৯টি টেস্ট খেলেছেন। আর ৪৭ দশমিক৫৩ গড়ে ১৫টি শতকে রান করেছেন ৬ হাজার ২শ ২৭ রান।
ব্যাটিং পরামর্শ ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ সুনীল গাভাস্কার স্লেজিং