ফিরেই মেসির ইতিহাস
১৪ জুন ২০২০ ১৩:৩০
করোনাভাইরাস স্তব্ধ করে দিয়েছে পুরো বিশ্বকে। ভাইরাসটির প্রভাবে অমূল পবির্তন এসেছে মানুষের জীবনযাত্রায়। তবে করোনা লিওনেল মেসিকে পরিবর্তন করতে পেরেছে হয়তো সামান্যই, বিশেষ করে মাঠের ফুটবলে। তিন মাসের বেশি সময় পর মাঠে ফিরে শনিবার রাতে (১৩ জুন) রিয়াল মায়োর্কার বিপক্ষে যে ফুটবল খেললেন, তাতে বুঝা মুশকিল এতদিন ফুটবলের বাইরে ছিলেন। নিজে গোল করেছেন একটি, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও দুটি। করোনার মধ্যে ফুটবলে ফেরার দিনে বার্সেলোনাকে জিতিয়েছেন ৪-০ গোলে। ইতিহাসও গড়েছেন মেসি।
এ নিয়ে চলতি মৌসুমে ২০ গোল হলো আর্জেন্টিনাই মহাতারকার। যাতে টানা ১২ মৌসুমে ২০ বা তার বেশি গোল করা একমাত্র ফুটবলার হলেন মেসি। স্প্যানিশ লা লিগায় অতীতে এই রেকর্ড গড়তে পারেননি আর কোনো ফুটবলারই। মেসির এই ইতিহাসের সূচনা ২০০৮-০৯ মৌসুমে। সেবার ৩১ ম্যাচ গোল করেছিলেন ২৩টি। এরপরের মৌসুমগুলোতে তার গোলসংখ্যা যথাক্রমে- ২০০৯-১০ মৌসুমে ৩৫ ম্যাচে ৩৪ গোল, ২০১০-১১ মৌসুমে ৩৩ ম্যাচে ৩১ গোল, ২০১১-১২ মৌসুমে ৩৭ ম্যাচে ৫০ গোল, ২০১২-১৩ মৌসুমে ৩৪ ম্যাচে ৪৬ গোল, ২০১৩-১৪ মৌসুমে ৩১ ম্যাচে ২৮ গোল, ২০১৪-১৫ মৌসুমে ৩৮ ম্যাচে ৪৩ গোল, ২০১৫-১৬ মৌসুমে ৩৩ ম্যাচে ২৬ গোল, ২০১৬-১৭ মৌসুমে ৩৪ ম্যাচে ৩৭ গোল, ২০১৭-১৮ মৌসুমে ৩৬ ম্যাচে ৩৪ গোল, ২০১৮-১৯ মৌসুমে ৩৪ ম্যাচে ৩৬ গোল এবং ২০১৯-২০ মৌসুমে ২৩ ম্যাচে ২০ গোল (চলমান)।
অথচ মেসির কাল খেলা নিয়েই ছিল শঙ্কা। মাঠে ফিরতে ব্যাকুল, এমন কথা বলছিলেন অনেকদিন যাবতই। কিন্তু অনুশীলনে চোটে পড়লেন। করোনাকালে বার্সেলোনার প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে মেসির খেলা নিয়ে তাই যথেষ্ট শঙ্কাই তৈরি হয়েছিল। শঙ্কা কাটিয়ে মেসি মাঠে নামলেন এবং বিশ্বকে দেখালেন কী করতে পারেন তিনি।
তিন মাস মাঠের বাইরে থাকার পর ফিরেই চোটে পড়েছিলেন, কাল মেসির খেলায় তা বুঝাই গেল না। যোগ করা সময়ে করা তার গোলটা ছিল দেখার মতো। ডি-বক্সের ভেতর লুইস সুয়ারেজের পাস পেয়েছিলেন। পাশে তখন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের শক্ত প্রহরা। তাতে পাত্তাই দিলেন না মেসি। জায়গা করে নিয়ে ডান পায়ের দুর্দান্ত এক বাঁকানো শট দূরের পোস্ট দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন জালে।
নজরকাড়া এক গোল আর দুই অ্যাসিস্ট শুধু নয়, বার্সেলোনা তারকা পুরো ম্যাচেই দুর্দান্ত খেলেছেন। কার্লোস ব্র্যাথওয়েট ও জর্দি আলবাকে দিয়ে দুই গোল করিয়ে নেওয়াতে এবারের মৌসুমে মেসির ‘অ্যাসিস্ট’ সংখ্যা দাঁড়াল ১৪। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত যা সর্বোচ্চ। গোল সংখ্যায় তো আগে থেকেই সবার ওপরে। কিংবদন্তিরা হয়তো এমনই হয়!