অভিষেকের সেই স্মৃতি আজও মোস্তাফিজের মানসপটে জ্বলজ্বলে
১৮ জুন ২০২০ ১৫:৪৪
ঢাকা: কথায় আছে- সকাল দেখে দিন বোঝা যায়। আবার এটাও ঠিক, সব সকাল দিনের সঠিক জানান দেয় না। তবে কিছু কিছু সকাল দেখে কিন্তু পুরোদিনের একটি সম্যক ধারণা ঠিকই পাওয়া যায়। মোস্তাফিজুর রহমান সেই গুটিকয়েক দিনের সকালের মতই। যার অভিষেক বোলিং দেখেই ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলা সম্ভব ছিল।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মোস্তাফিজের অভিষেক হয়েছিলো গল্পের রাজপুত্রের মতই। কাটারের পসরা সাজিয়ে আলোড়ন তুলেছিলেন ক্রিকেটে দুনিয়ায়। বিশ্ব ক্রিকেটে এমন ব্যাটসম্যান খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে যিনি তার কাটার ভয়ে থরথরকম্প ছিলেন না। বিস্ময়কর বোলিংয়ে হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘এক্স ফ্যাক্টর’। আর এর শুরুটা হয়েছিল ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল পাকিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টি-টোয়েন্টি দিয়ে।
তবে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে যাত্রা শুরু হয়েছিল আজ থেকে পাঁচ বছর আগে ঠিক এই দিনে। ২০১৫ সালের ১৮ জুন মিরপুর শের ই বাংলায় ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ৫০ ওভারের ক্রিকেটের যাত্রা শুরু করেন ‘দ্য ফিজ’। অভিষেক ম্যাচেই প্যাভিলিয়নের পথ দেখিয়েছিলেন ভারতের ৫ ব্যাটসম্যনকে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে যেন আরও ক্ষুরধার এই বাম-হাতি বোলার। এবার তুলে নিলেন ৬ উইকেট। ওই যে শুরু, এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। গেল ৫ বছরে তিনি হয়ে উঠেছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এই অর্ধদশকে মোস্তাফিজ ৫৮ টি ওয়ানডে খেলে তুলে নিয়েছেন ১০৯ উইকেট। এর মধ্যে চার উইকেট পেয়েছেন তিন বার। আর পাঁচ উইকেট পাঁচ বার। সেরা বোলিং ইনিংস ৬/৪৩।
এর মধ্যে কোন ম্যাচটি সেরা? এমন প্রশ্নে স্মৃতির পুকুরে টুপ করে ডুব দিলেন যেন। কিয়ৎক্ষণ বাদে ভুস করে উঠে বললেন, অবশ্যই ভারতের বিপক্ষে খেলা অভিষেক দুই ম্যাচ। ‘এই পাঁচ বছরে আমাকে যদি সেরা ম্যাচ বেছে নিতে বলা হয় আমি প্রথমেই ভারতের বিপক্ষে অভিষেক দুটি ম্যাচ বেছে নিব। এরপর গত বিশ্বকাপে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া ৫ উইকেট।’
মজার ব্যাপার হল অভিষেকর পর এই পাঁচ বছরে মুদ্রার এপিট-ওপিঠ দুই পিঠই দেখে ফেলেছেন বাম-হাতি এই পেসার। ইনজুরি, দল থেকে বাদ পড়া কী দেখেননি মোস্তাফিজ? সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি টেস্ট ম্যাটেও তাকে বাদ দিয়েই রণ কৌশল সাজিয়েছে লাল সবুজের টিম ম্যানেজমেন্ট। তাতে অবশ্য তার দায়টাই বেশি। ইনজুরিতে পড়ে ছন্দ হারিয়েছিলেন বলেই নির্বাচকদের বিকল্প ভাবতে হয়েছিল। এতে করে অনেকে আবার মোস্তাফিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের এপিটাফও লিখে ফেলেছিলেন।
তবে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু যা বললেন তাতে মোস্তাফিজ সমালোচকদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়তেই পারে। ‘ও আমাদের তিন ফর্মেটের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার। এতে কোন সন্দেহ নেই। ওর যে সামর্থ্য, স্টাইল, দক্ষতা তাতে আমাদের তিন ফর্মেটেই ও সবসময় বিবেচনায় থাকার মত একজন। মাঝখানে ইনজুরি ও ফিটনেসের কারণে দলের বাইরে যেতে হয়েছে। ওর যে বয়স আমি আশা করি আরও লম্বা সময় ও খেলতে পারবে।’