সাইফউদ্দিন, বিপ্লব রেড জোনে
২৫ জুন ২০২০ ১৪:৪৬
করোনা পরিস্থিতিতে ক্রিকেটারদের সবশেষ শারীরিক অবস্থা জানতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-বিসিবি ‘কোভিড-১৯ ওয়েল বিয়িং অ্যাপ’ নামে যে অ্যপাটি গতকাল থেকে চালু করেছে তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী জাতীয় দলের দুই ক্রিকেটারর মোহাম্মদ সাইফদ্দিন ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব রেড জোনে। গতকাল যখন তারা অ্যাপসের মাধ্যমে বিসিবিকে তথ্য দিচ্ছিলেন তখন অ্যাপস লাল বর্ণ ধারণ করে। তার মানে এই নয় দুই ক্রিকেটারই করোনা ঝুঁকিতে আছেন। এই লাল সংকেতের মানে হচ্ছে তাদের শরীরের কোথাও সমস্যা আছে। এবং তা নিরসনে বিসিবির সংশ্লিষ্টদের কথা বলতে হবে। আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের শরীরে আগে থেকেই অ্যাজমা আছে। আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন গত দুই দিন যাবৎ জ্বরে ভুগছেন এবং তিনি খাবারের কোনো স্বাদ পাচ্ছেন না।
দেশের করোনা পরিস্থিতির যে বেহাল দশা তাতে কারো স্বাস্থ্য নিয়েই এই মুহুর্তে বিন্দু মাত্র স্বস্তিতে থাকার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্ষেত্রেও অনুরুপ ঘটনা ঘটেছে। দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা হওয়ায় করোনাকালে ক্রিকেটাররা কেমন আছেন? কেউ কী আক্রান্ত হলেন? এমন উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়েই হয়ত তাদের দিনাতিপাত করতে হত। পাশপাশি স্বাস্থ্যগত বিষয়ের নির্দেশনা দেওয়ার ব্যাপারটি তো আছেই। সন্দেহাতীতভাবেই বিষয়গুলো যেমন ঝক্কির তেমনি সময় সাপেক্ষও। কেননা তা সম্পন্ন করতে জনে জনে ফোন দিতে হত।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে লাল সবুজের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ এই সংস্থা নিয়ে এসেছে এসেছে ‘কোভিড-১৯ ওয়েল বিয়িং অ্যাপ’। যে অ্যাপের মাধ্যমে ক্রিকেটারদের একটি কেন্দ্রীয় সার্ভারে যুক্ত করা হবে। এবং তাদের দেওয়া তথ্য সেই সার্ভারে জমা হবে। তথ্যে কারো মধ্যে সংক্রমণের কোনো সম্ভাবনা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বিসিবির চিকিৎসকরা।
এটি সম্পন্ন করতে ক্রিকেটাররা প্রথমে নিজেদের মোবাইলে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করবেন। এরপর সেখানে থাকা ১৮টি প্রশ্নের জবাব অ্যাপের মাধ্যমেই দেবেন। যা করতে ২০-২৫ সেকেন্ড সময় লাগবে। এই প্রশ্নের জবাবের প্রেক্ষিতে ক্রিকেটারদের রেড, ইয়োলো ও গ্রিন এই তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হবে। যারা রেড জোনের আওতার পড়বেন তাদের নাম ও তথ্য সঙ্গে সঙ্গে বিসিবি’র ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের ম্যানেজার নাসির উদ্দিন আহমেদ নাসু, ক্রিকেট অপারেশন ম্যানেজার সাব্বির খান ও প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চেীধুরীর কাছে এসএমএস আসবে। এবং তারা তাদানুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
বিসিবি’র নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল থেকে প্রাথমিকভাবে ৪০ জন ক্রিকেটার এই অ্যাপসে নিজেদের স্বাস্থ্য তথ্য দিতে শুরু করেছেন। এবং প্রথম দিনেই রেড জোনের আওতাভুক্ত হয়েছেন টাইগার বাঁহাতি স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সারাবাংলাকে এখবর দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের বোর্ডের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের ম্যানেজার নাসির উদ্দিন আহমেদ নাসু।
তিনি বলেন, ‘আজ পর্যন্ত আমরা দুইজনকে রেড পেয়েছি; আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। বিপ্লব গতকাল যখন ওই প্রশ্নত্তোর দিচ্ছিল তখন রেড হয়ে গেছে। ওর শ্বাস কষ্ট হচ্ছিল। পরে জানতে পারি ওর অনেক আগে থেকেই অ্যাজমা সমস্যা আছে। তো গতকাল ওর কোভিড চেক করিয়েছি। তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। সাইফউদ্দিনের দুই দিন ধরে জ্বর ও খাবারের কোনো স্বাদ পাচ্ছে না। গতকাল থেকে এটা কাজ করছে। অ্যাপটা মোবাইল ভিত্তিক। প্লেয়াররা মোবাইলে ঢুকে ১৮টি প্রশ্নের উত্তর ফিলআপ করে দিবে। সেটা আমাদের কেন্দ্রীয় সার্ভারে চলে আসবে। ওখান থেকে আমরা মনিটরিং করতে পারি। সবগুলি প্রশ্নের উত্তর দিতে ২০-২৫ সেকেন্ড সময় লাগবে। তারপর ওটা অটোমেটিক আপডেট হয়ে।’
‘এই প্রশ্নের ওপর ভিত্তি করে আমরা প্লেয়ারদের তিনটি জোনে ভাগ করে দিচ্ছি। সেগুলো হলো রেড, ইয়োলো ও গ্রিন। কোনো প্লেয়ার যদি রেড হয় সঙ্গে সঙ্গে আমার কাছে সাব্বিরের কাছে (সাব্বির খান) ও দেবশীষের কাছে এসএমএস আসে যে এই প্লেয়ারটা রেড। এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেই।’ যোগ করেন নাসু।
নাসুর দেওয়া তথ্যমতে, আগামি তিন চারদিন এই ৪০ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে কাজ করবে বিসিবি। এরপর এই অ্যপাসের আওতায় আনা হবে অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে। এবং তারপর নারী ক্রিকেট দলকে। ‘এই মুহুর্তে আমাদের এই প্রক্রিয়ায় ৪০ জন ক্রিকেটার। তিন চার দিন এভাবে দেখব। এরপরে যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে অনূর্ধ্ব-১৯ দল ও এরপরে নারী ক্রিকেট দলকে নিয়ে আসব।’
এদিকে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানালেন, ‘অ্যাপটি লাল সংকেত দেওয়া মানে এই নয় যে কারো শরীরে করোনা আছে বা সে ন্যূনতম ঝুঁকিতে আছে। লাল সংকেতের মানে হলো ১৮টি প্রশ্নের কোনো একটি নেগেটিভ ছিল। অতএব তার সঙ্গ আমাদের কথা বলতে হবে। তার সঙ্গ কথা বলে আমরা নির্ধারণ করব কি হয়েছে। মূল ব্যাপার হলো আমিনুল ইসলাম কিংবা সাইফউদ্দিন কোভিড পজিটিভ নয়।’
আমিনুল ইসলাম বিপ্লব করোনা ঝুঁকি টপ নিউজ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন