Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কৃষ্ণাঙ্গ বলে ইংলিশদের খুনের হুমকি পেয়েছিলেন ডিফ্রেইটাস


২৮ জুন ২০২০ ১৪:৩২

ইংলিশদের হয়ে ৪৪টি টেস্ট এবং ১০৩টি ওয়ানডে খেলেছেন ফিল ডিফ্রেইটাস। অর্থাৎ লম্বা সময় ধরেই ক্রিকেটের আঁতুড়ঘরের প্রতিনিধিত্ব করেছনে তিনি। দলকে বহু জয়ের আনন্দে ভাসানো এই অলরাউন্ডারকেই কিনা খুন করার হুমকি দিয়েছিল ইংলিশরা। সম্প্রতি স্কাই স্পোর্টসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন বিস্ফোরক তথ্য জানিয়েছেন ডিফ্রেইটাস।

ফিল ডিফ্রেইটাস ইংলিশদের জার্সি গায়ে ব্যাট হাতে টেস্টে ১৪ দশমিক ৮২ গড়ে ৯শ ৩৪ রান করেন তিনি। যেখানে আছে ৪টি হাফ সেঞ্চুরি। এছাড়া ৩৩ দশমিক ৫৭ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ১শ ৪০টি। অন্যদিকে ওয়ানডেতে ১৬ দশমিক ০৪ গড়ে ৬শ ৯০ রান করার পাশাপাশি ৩২ দশমিক ৮২ গড়ে ১শ ১৫ উইকেটও শিকার করেন তিনি। অবশেষে ১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান এই অলরাউন্ডার।

বিজ্ঞাপন

ডিফ্রেইটাস যখন ইংল্যান্ড জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন তখন ক্রিকেট খেলার সুযোগের সঙ্গে সঙ্গে নিজের জীবনও ছিল ঝুঁকিতে। কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ায় তাকে সহ্য করতে পারত না ইংল্যান্ডের শ্বেতাঙ্গরা। আর তাই তো ইংল্যান্ড দলে সে খেললে তাকে খুন করে ফেলবে বলেই হুমকি দিত শ্বেতাঙ্গরা। সে সময় ইংল্যান্ড দল থেকে ডিফ্রেটাসকে অপসারণের জন্য রীতিমত হন্যে হয়ে ছিল দেশটির অনেক শ্বেতাঙ্গ নাগরিক।

স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক এই ইংলিশ অলরাউন্ডার বলেন, ‘আমি একটি চিঠি পেয়েছিলাম যেখানে আমার প্রতি ঘৃণা জানানো হয়েছিল। সেটাই প্রথম নয়, আমি এরপর আরও দুই থেকে তিনবার চিঠি পাই যেখানে বলা হয় আমি যদি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলি তাহলে আমাকে গুলি করা হবে।’

ক্রিকেট খেলতে নিজের জীবনটাই বাজি ধরেছিলেন ডিফ্রেইটাস। আর নিজের জীবন বাজি রেখেই তো সাফল্য ছিনিয়ে এনেছেন ডমিনিকায় জন্ম নেওয়া এই কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটার। তিনি বলেন, ‘এসব মাথায় নিয়ে ইংল্যান্ডের হয়ে ক্রিকেট খেলা যায়? কিন্তু আমি আমার দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে খেলতে পেরেছি এবং সেই মানুষগুলোকে কখনোই আমাকে পরাজিত করতে দেইনি।’

বিজ্ঞাপন

অবশ্য বৈষ্যমের শিকার হতে হয়েছে ইংল্যান্ড দলেও। দলে জায়গা পেতে শ্বেতাঙ্গদের বিপক্ষে লড়াই করতে হয়েছে তাকে। কেবল লড়াই করলেই সুযোগ মেলেনি শ্বেতাঙ্গ ক্রিকেটারদের থেকে দ্বিগুণ ভালো পারফরম্যান্স করতে হয়েছে তাকে। আর এই বিষয়টিই ফুটে উঠেছে মর্মাহত সাবেক এই অলরাউন্ডারের কণ্ঠে।

ডিফ্রেইটাস বলেন, ‘আমি সবসময় মনে করতাম শ্বেতাঙ্গ ক্রিকেটারদের থেকে আমাকে দ্বিগুণ ভালো খেলতে হবে। এটা আসলেই কষ্টকর যে আমাকে এভাবে চিন্তা করতে হত। আমাকে কখনোই স্বাগত জানানো হত না। প্রতিটি ম্যাচে মাঠে নামার সময় আমার মনে হতো এটাই আমার শেষ খেলা। আমি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার জন্য মরিয়া ছিলাম এবং এটাই আমাকে সামনে এগিয়ে নিয়েছে।’

নিজের খারাপ সময়ে দলের কারো হাত তার কাঁধে আসবে না এটা তো তিনি জানতেনই, তবে ভালো সময়েও বাহবা পাবেন না এটা ভাবতে পারেননি। আর দলের ভেতরে হয়েছিলও সেটাই। মাঠে নামার ক্ষেত্রে খুব একটা সমর্থন পাননি ডিফ্রেইটাস। স্কাই স্পোর্টসকে জানিয়েছেন সেই অভিজ্ঞতার কথাও।

তার ভাষ্যমতে, ‘আমাকে কেউ সাহায্য করেনি, আমার কোনো সমর্থন ছিল না। আমার সমর্থক আমি নিজেই ছিলাম। এটা অনেক কষ্টকর। আমার মনে আছে আমি আমার মায়ের বাসায় গিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম যে আমি এখানে থাকা প্রত্যাশা করি না। তবে এরপর যা অর্জন করেছি এতে আমি গর্বিত।’

ইংলিশ অলরাউন্ডার ইংলিশ ক্রিকেটার কৃষ্ণাঙ্গ ডিফ্রেইটাস মৃত্যুর হুমকি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর