ঢাকার মাঠ মাতিয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের যে ফুটবলাররা
২৮ জুন ২০২০ ১৯:০৭
ঢাকা: বাংলাদেশের ফুটবল মাতিয়েছেন এমন বিদেশি ফুটবলারের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। লাতিন আমেরিকা থেকে শুরু করে ইউরোপের অনেক দেশ থেকে ফুটবলার ঢাকার ফুটবল মাতিয়েছেন। দেশের ফুটবল সমর্থকদের মনে গেঁথে আছে সেসব ফুটবল নিদর্শন। এর মাঝে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ফুটবলাররাও মাঠ মাতিয়েছেন।
ইউরোপের অন্যতম শীর্ষ ও জনপ্রিয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ থেকে ঢাকার ফুটবল খেলা প্রথম ফুটবলার হলেন রোহান রিকেটস। আর্সেনাল ও টটেনহ্যামের সাবেক এই ফুটবলার খেলেছেন ঢাকা আবাহনীর হয়ে। দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে শেখ রাসেলের হয়ে ঢাকার মাঠে মাতিয়েছেন অ্যাস্টন ভিলার সাবেক ফুটবলার ক্রিস্টোফার হার্ড।
ধুমকেতুর মতো এসে হারিয়ে যাওয়া তারা রোহান রিকেটস:
ক্যারিয়ারের ১৫ বছর ফুটবল খেলে ঢাকার মাটিতে খেলতে আসেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের আর্সেনাল ও টটেটহামের স্ট্রাইকার হয়ে খেলা রোহান অ্যান্থনি রিকেটস। আরেক ব্রিটিশ ফুটবলার লি টাকের পরামর্শে আগ্রহ জন্মে ঢাকার ফুটবলে খেলার। দেশের ফুটবলে ধুমকেতুর মতো আগমন হয় এই ফুটবলারের। ৎ
এর আগে তিনি আর্সেনালের সাবেক ফুটবলার। খেলেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের আরেক ক্লাব টটেনহাম হটস্পারেও। ইংলিশ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার অবশ্য সবচেয়ে বেশি তিন মৌসুম খেলেছেন টটেনহামে। এরপর কভেনট্রি সিটি, উলভারহ্যাম্পটনেও খেলেছেন। ইংল্যান্ড ছাড়াও হাঙ্গেরি, গ্রিসসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্লাবে খেলেছেন। ভারতের আই লিগের দল ডেম্পোতেও খেলেছেন। তারপর হংকংয়ের প্রিমিয়ার লিগের দল ইস্টার্ন স্পোর্টস ক্লাবের পর ২০১৬ সালের মার্চে ঢাকা আবাহনীর জার্সিতে নাম লেখান। এখানে ক্যারিয়ারটা বড় করতে পারেননি রোহান। স্বাধীনতা কাপে গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচে খেলে অভিষেকেই গোল করেন। মার্চে এসে ওই একটা ম্যাচ খেলেই লিগে দেখা যায়নি তাকে। কেন তিনি বিদায় নিয়েছেন সেখবর এখনও রহস্য। এরপর ওই বছরের নভেম্বরে আরেক ক্লাবে যোগ দিলেন।
ওই একমাত্র ম্যাচে ঢাকা আবাহনী স্বাধীনতা কাপের গ্রুপ পর্ব ম্যাচে রহমতগঞ্জের সঙ্গে ২-২ গোল ব্যবধানে ড্র করেছিল। সাত মিনিটে অভিষেকেই গোল করেছিলেন রোহান রিকেটস। সর্বসাকুল্যে এটাই ঢাকার ফুটবলে রোহান রিকেটসের ছোট্ট ট্রিপও বলতে পারেন।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আসলেন কীভাবে সে গল্পটা আনা যাক। আর্সেনালের বয়সভিত্তিক দলে যখন খেলতে শুরু করেন তখন রিকেটসের বয়স মাত্র আট বছর। দশ বছর আর্সেনালের বয়সভিত্তিক দলে খেলার পর ২০০১ সালে আর্সেন ওয়েঙ্গার সুযোগ দেন মূল দলে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগে ও লিগ কাপের দলে ছিলেন। ২০০২ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত খেলেছেন টটেনহাম হটস্পারের হয়ে।
তারার আলো ছড়ানোর আগেই করোনার ধাক্কা:
তরুণ বয়সে ২০০৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ইপিএলের অ্যাস্টন ভিলার হয়ে খেলেছেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে জন্ম নেয়া ক্রিস্টোফার হার্ড। এরপর জায়গা করে নেন অ্যাস্টনের সিনিয়র দলে। সেখানে দীর্ঘ পাঁচ বছর কাটিয়েছেন। মাঝে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন ক্লাবে লোনে খেলেছেন তিনি।
এরপরই অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে দেশের সর্বোচ্চ লিগে খেলেই আবার ইংল্যান্ডে গিলিংহামের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন ২০১৬-১৭ মৌসুমে। পরের মৌসুমে আবার জন্মভূমিতে ফিরে যান। সেখান থেকে থাইল্যান্ডের বুড়িরাম ইউনাইটেডের হয়ে খেলে গেল বছরে ভারতের দল চেন্নাইন এফসির হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের জার্সিতে নাম লেখান অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের সাবেক এই ফুটবলার।
শেখ রাসেলের হয়ে আলো ছড়াতে ছড়াতে যেন ভাগ্যের কাছেই থামতে হলো হার্ডের ঢাকার ফুটবল ভ্রমণ। হঠাৎ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে লিগটাই বাতিল হলো। তবে বাতিল হওয়ার আগ পর্যন্ত ৬টি ম্যাচই খেলেছেন হার্ড। অবশ্য শেখ রাসেলের ভাগ্যের তেমন পরিবর্তন করাতে পারেননি তিনি। এবার লিগে পয়েন্ট টেবিলে পাঁচের বাইরে চলে যায় ২০১২-১৩ সেশনের ট্রেবলজয়ীরা।
এছাড়াও ঢাকার ফুটবল মাতিয়েছেন ব্রিটিশ ফুটবলার লি টাক ও চার্লি শেরিংহাম। লি টাক খেলেছেন ঢাকা আবাহনীর হয়ে। আর চার্লি শেরিংহাম খেলেছেন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে। তারা কেউই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের কোন দলে খেলেননি। শেরিংহাম যখন বার্নামাউথে খেলেছেন তখন এই দলটি ইংলিশ লিগের দ্বিতীয় স্তরে খেলতো। সেই অনুযায়ী তাকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের তালিকায় রাখা হয়নি।
আর নতুন করে আরেক ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মাঠ দাঁপানো নিউক্যাসেলের ১৩ বছর খেলা সাবেক ফুটবলার স্টিভেন টেলরকে দলে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। এএফসি কাপকে সামনে রেখে তাকে দলে ভেড়ানোর কার্যক্রম হিসেবে প্রাথমিক আলোচনা সেড়ে ফেলা হয়েছে বলে জানা যায়। যদি তাই হয় তাহলে ঢাকার কোন ক্লাবে খেলা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের তৃতীয় খেলোয়াড় হবেন স্টিভেন টেলর।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ক্রিস্টোফার হার্ড চার্লি শেরিংহাম ঢাকা আবাহনী ঢাকার ফুটবল রোহান রিকেটস লি টাক শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব স্টিভেন টেলর স্পোর্টস স্পেশাল