কেউ ভালোবাসেনি আকমল ভাইদের!
৩০ জুন ২০২০ ২২:৩৩
উমর আকমলের প্রতিভা নিয়ে সংশয় ছিল না কারোরই। একটা সময় পাকিস্তানের ‘বড় সম্পদ’ মনে করা হতো ডানহাতি ক্রিকেটারকে। কিন্তু খামখেয়ালিপনায় নিজের ক্যারিয়ারটাকে ঠেলে দিয়েছেন ধ্বংসের মুখে। নানান সময়ে নানা বিষয়ে বিতর্কে জড়িয়ে আস্থা হারিয়েছেন। এই মুহূর্তে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ আছেন উমর। জুয়াড়িদের ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব কর্তৃপক্ষকে না জানানোর অপরাধে কদিন আগে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। কামরান আকমল অবশ্য বলছেন, টিম ম্যানেজমেন্টের ভালোবাসা পায়নি তার ছোট ভাই।
টিম ম্যানেজমেন্টের উচিত ছিল উমরের প্রতি আরও যত্নবান হওয়া বলছেন কামরান। ক্রিকেট পাকিস্তান নামের এক ওয়েবসাইটে ‘ইনসাইড আউট’ নামের ভিডিও অনুষ্ঠানে কামরান আকমল বলেন, ‘দেখুন মাঠের বাইরের বিতর্ক পাকিস্তান ক্রিকেটে নতুন কিছু নয়। পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট আর দলের অধিনায়কের উচিত ছিল উমরের প্রতি ঠিকঠাক যত্নশীল হওয়া। তার বিতর্কিত ব্যাপারগুলো নিয়ে তাকে বোঝানো, তার ওপর নজর রাখা, নিয়ন্ত্রণে রাখা। অতীতে ইনজি ভাই (ইনজামাম-উল-হক), শোয়েব আখতার, শহীদ আফ্রিদিদের বেলাতে যে যত্ন ও মনোযোগ দেখা গেছে; উমরের বেলায় সেটা দেখা যায়নি। একটু যত্ন নিলে উমরের গল্পটা অন্যরকম হলেও হতে পারত।’
নিজেও ভালোবাসা পাননি বলেছেন কামরান। পাকিস্তানের হয়ে ৫৩ টেস্ট, ১৫৭ ওয়ানডে খেলা আকমল বলছেন, পাকিস্তানের সর্বশেষ দুই কোচ তাকে একেবারেই পছন্দ করতেন না। অনেক ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েও জাতীয় দলে ফিরতে পারেননি সে কারণেই।
কামরান বলেন, ‘আমি পিএসএল আর ঘরোয়া ক্রিকেটে গত পাঁচ বছর ধরেই ভালো করছি। কিন্তু তারপরেও আমি পাকিস্তান দলে সুযোগ পাইনি। সম্প্রতি পাকিস্তান ক্রিকেট দলের দুই কোচ আমাকে একেবারেই পছন্দ করতেন না। সে কারণেই আমাকে জাতীয় দলের সুযোগ দেওয়া হয়নি। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে আমাকে সুযোগ না দেওয়াটা রীতিমতো অবিচার। আমাকে ব্যাটসম্যান হিসেবেও সুযোগ দেওয়া যেতে পারত। ১৮-২০ গড় নিয়ে ম্যাথু ওয়েড যদি (অস্ট্রেলিয়ান উইকেটরক্ষক) দলে ফিরতে পারে, তাহলে এমন পারফরম্যান্সের পরেও আমি নই কেন! আমার গড় তো ৬০-এর কাছাকাছি।’
কামরানের দলে ফিরতে না পারার আক্ষেপটা অবশ্য অমূলক নয়। পিএসএলে বরাবরই তার ব্যাট হেসেছে। টুর্নামেন্টটির অন্যতম সেরা রান সংগ্রাহক কামরান। এখন পর্যন্ত ৫৫ ইনিংস খেলে রান করেছেন ১ হাজার ৫৩৭। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড, দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ডও তার দখলে। ২০১৯ সালের আসরে সর্বোচ্চ রান (৩৫৭) সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে করেছিলেন ৪২৫ রান। সর্বশেষ মৌসুমে ৫৫ বলে ১০১ রানের দারুণ একটা ইনিংস খেলেছিলেন। উইকেটরক্ষক হিসেবেও কম জাননা। ৫৫ ডিসমিসাল আছে কামরানের নামের পাশে। তবুও সুযোগ না পেলে আক্ষেপ তো হবেই।
হয়তো বয়সের কারণেই তাকে বিবেচনা করে না টিম ম্যানেজমেন্ট। বয়স ৩৮ পেরিয়েছে গত জানুয়ারিতে। এই বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার ঘটনা বিরলই। কামরান পাকিস্তানের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন ২০১৭ সালের মার্চে।