Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিজেকে ফিরে পাওয়ার অদম্য লড়াইয়ে তাসকিন


৯ জুলাই ২০২০ ১৫:৫৪

রাজধানী বসিলার তপ্ত বালুতে কোমরে টায়ার বেঁধে ছুটছেন তাসকিন আহমেদ। আষাঢ়ের ভরদুপুরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দৌড়াচ্ছেন, শরীর থেকে দরদর করে ঝরে পড়ছে ঘাম। কখনো বাসার গ্যারেজে বোলিং অনুশীলন করছেন কখনো বা জিমে হাড়ভাঙ্গা খাটুনি। হলফ করে বলতে পারি, করনাকালের আগের তাসকিন ও বর্তমানের তাসকিনকে দেখলে অনেকেই হয়তো মিলাতে পারবেন না। কেননা এই চার মাসে ৬ কেজি ওজন কমিয়ে সেই তাসকিন এখন টগবগে এক তরুণ যেন। এবং যতদিন মাঠের ক্রিকেট না ফিরছে ততদিন তার এই কর্মযজ্ঞ অব্যাহত থাকবে। লক্ষ্য একটাই, নিজেকে ফিরে পাওয়া ও জাতীয় দলের হারানো জায়গা পুনরুদ্ধার করা।

তাসকিনকে দুর্ভাগা বলতেই হচ্ছে এই অর্থে যে যখনই সেরা ফর্মে ফিরেছেন তখনই তাকে ইনজুরি পেয়ে বসেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কোন সতীর্থ ক্রিকেটার নয়, জাতীয় দলে ফেরার পথে ইনজুরিই তার সবচেয়ে বড় বাঁধা।

বিপিএল ষষ্ঠ আসরের কথাই ধরুন না। সেবার ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছিলেন লাল সবুজের এই গতির তারকা। এবং ওই আসরের পারফরম্যান্সই তাকে নিউজিল্যান্ড সিরিজে জায়গা করে দিয়েছিল। কিন্তু বিধিবাম, ওই আসরে নিজেদের (সিলেট সিক্সার্স) শেষ ম্যাচে লং অফে ক্যাচ নিতে গেলে গোড়ালিতে চোট পেয়ে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে ছিটকে যান।

অর্থাৎ বিষয়টি পরিষ্কার যে তার জাতীয় দলে আসার পথটি মূলত ফিটনেসহীনতাই অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। যতবারই আসতে চেয়েছেন এবং এসেছেন ততোবারই তার মিশনে বাধার প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে ইনজুরি। তাসকিনও তা বেশ ভালো করেই অনুধাবন করতে পেরেছেন। এবং তা অনুধাবন পূর্বক জাতীয় দলে ঢোকার পথ প্রশস্ত করতে ফিটনেসের উপরে সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং সেই লক্ষ্যেই আষাঢ়ের ভরদুপুরে তপ্তবালু তে ছুটে চলেছেন। এবং তিনি নিজের কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ যে, জাতীয় দলে আর একবার সুযোগ পেলে নিজের সেরাটি উজাড় করে দিয়ে হারানো জায়গা পুনরুদ্ধার করবেন।

সারাবাংলার সঙ্গে একান্ত আলাপকালে কথাগুলো জানালেন বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকে বল হাতে চমকে দেওয়া এই পেসার।

‘আমি মূলত আমার সামর্থ্য বাড়াতে বালুতে অনুশীলন করছি। ফিটনেসের একটু উন্নতি হয়েছে হয়ত কিন্তু এখনো অনেক দিন করার বাকি আছে। চেষ্টা করে যাচ্ছি। নিজের সেরাটি যাতে দিতে পারি। বাংলাদেশের হয়ে সুযোগ পেলে সেরা পারফরম্যান্স করে নিজের জায়গা যাতে করে ঠিক করতে পারি ও দেশকে কিছু দিতে পারি এটাই লক্ষ্য।’

‘করোনাকালে যদি সুস্থ থাকি, মাঠে ক্রিকেট ফেরার আগ পর্যন্ত আমার এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কারণ আপনি হয়ত বলে কয়ে ভাল খেলতে পারবেন না। কিন্তু যেটা পারবেন নিজের ফিটনেসটা ঠিক রাখতে। সেই চেষ্টা আমার আছে। এমন হতে পারে মাঠে খেলা ফিরলে প্রথম ম্যাচেই আমি খারাপ করতে পারি। কিন্তু ফিটনেস উন্নতির ব্যাপারটা আমার হাতে আছে। আমি সত্যিই অনেকট চেষ্টা করছি। যেন কেউ কখনো বলতে না পারে তাসকিন চেষ্টাই করেনি।’

লাল সবুজের জার্সিতে তাসকিন আহমেদকে সব শেষ দেখা গিয়েছিল ২০১৮ সালের মার্চে, নিদাহাস ট্রফিতে। এরপর মোটামুটি লম্বা একটি সময়ের পর ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ড সিরিজ ও বিশ্বকাপ শেষে শ্রীলঙ্কা সিরিজে তাকে বাংলাদেশ দলের মূল স্কোয়াডে রাখা হলেও টিম কম্বিনেশন কথা বিবেচনা করে একাদশে নামায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট।

ডাক পেয়েছিলেন গেল বছরের সেপ্টেম্বরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট সিরিজের ১৫ সদস্যের দলেও। কিন্তু চট্টগ্রামের স্পিন স্বর্গে একাদশে জায়গা হয়নি। এরপর বাংলাদেশ আর যে ক’টি সিরিজে খেলেছে তার কোনটিতেই ডাক পড়েনি।

টপ নিউজ তাসকিন আহমেদ পেসার বাংলাদেশ ক্রিকেট


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর